লালমনিরহাটে সাজ্জাদ হোসেন (৫২) নামে এক মধ্য বয়সী তার নিজ ঘরের ধরনায় গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বিয়ে করতে না পারায় এবং বিয়ের বয়স পার হয়ে যাওয়ায় তিনি দীর্ঘদিন থেকে মানুষিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ি ইউনিয়নের গিলাবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সাজ্জাদ হোসেন ওই গ্রামের মৃত আব্দুর রউফ দুলালের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, সকালে সাজ্জাদের মায়ের কান্না শুনে সেখানে গিয়ে দেখতে পাই গলায় রশি পেচানো সাজ্জাদের ঝুলন্ত মরদেহ ঝুলে আছে। পরে আদিতমারী থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে।
নিহত সাজ্জাদের মা জানান, গতরাত ৯টার দিকে ছেলে সাজ্জাদ বাড়িতে আসলে তাকে ভাত খেতে বলি। তখন ছেলে বলে মা রাতে আর খাবো না কাল সকালে পান্তা ভাত খাবো। এই বলে সে ঘরের দরজা জানালা লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ওই বাড়িতে সাজ্জাত একাই থাকতো। আর তিনি ছোট ছেলে সৌরভের কাছে থাকেন। সেখানেই সাজ্জাদ খাওয়া দাওয়া করতো। বিয়ের বয়স পার হওয়ায় সে কারো সাথে মিশতো না বা কারো সাথে কথাও বলতো না। কোন কাজও করতো না তার ছেলে। খাবার সময় হলে বাড়িতে এসে খেয়ে আবার বাহিরে যেতো।
সাজ্জাদের মা আরও বলেন, সকালে ছেলেকে ডাকলে কোন সারা শব্দ পায় না। তখন তিনি তার ছোট ছেলে সৌরভকে ডাকে। সৌরভ এসে তার ভাইকে ডাকলে তার ডাকেও সারা না সাজ্জাদ। সাজ্জাদের বাড়িটি দালান ঘর ও লোহার দরজা জানালা হওয়ায় কোন ভাবেই দরজা খোলা সম্ভব হচ্ছিল না। পরে তাদের সন্দেহ হলে সৌরভ ঘরের উপরের টিন কেটে ভিতরে প্রবেশ করে দেখে তার ভাই দড়িতে ঝুলে আছে।
তখন সাজ্জাদের মা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন আর বুক চাপরিয়ে বলতে থাকেন ছেলে আমার রাতে বলে রেখেছে সে পান্তা খাবে। আমি তার জন্য প্লেটে পান্তা নিয়ে এসেছি। কিন্তু ছেলেকে পান্তা খাওয়াতে পারলাম না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সাজ্জাদ খুব ভদ্র একজন মানুষ ছিলেন। তার সাথে কোনদিন কারো ঝগড়া বিবাদ হয় নাই। খুব শান্ত স্বভাবের ছিল। তবে সে বিয়ে করেননি। কেন বিয়ে করেননি তা আমরা জানি না।
আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোক্তারুল ইসলাম বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও গন্যমান্য ব্যাক্তি বর্গের আবদনের প্রেক্ষিতে লাশ ময়না তদন্ত না করে পরিবারর নিকট মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।