লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তৌফিক আহমেদের বিরুদ্ধে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী লিখিত অভিযোগ দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে।
উক্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) লালমনিরহাট সিভিল সার্জনসহ ৩সদস্যের তদন্ত কমিটি তদন্ত শুরু করেছে।
এর আগে এলাকাবাসী বড়বাড়ী-লালমনিরহাট-বুড়িমারী জাতীয় মহাসড়ক মানববন্ধন করে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তৌফিক আহমেদ যোগদান করেন প্রায় ২বছর পূর্বে। যোগদানের পরেই হাসপাতালের কর্মচারীদের দিয়ে অন্যায় কাজ করার চেষ্টা করে। তার হুকুমে বিধি বহির্ভূত কাজ করতে না চাইলে প্রতিবাদী কর্মচারীদের হুমকি দেন। তার আচরণে হাসপাতালের সাধারণ কর্মচারীরা ডাঃ তৌফিক আহমেদের উপর ফুসে উঠে। ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৯জন কর্মচারী স্বেচ্ছায় বদলীর জন্য লালমনিরহাট সিভিল সার্জনের নিকট লিখিত আবেদনও করেছেন।
এছাড়াও নিয়মানুযায়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস শনিবার হতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত খোলার নিয়ম। কিন্তু তা মানেন না ওই কর্মকর্তা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতি রেখে প্রতি শনিবার অফিস বন্ধ রাখেন। হাসপাতালে আসা রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসলে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন ডাঃ তৌফিক আহমেদ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের কারণে ডাঃ তৌফিক আহমেদের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আদিতমারী বাসীর লিখিত অভিযোগ করে।
ওই লিখিত অভিযোগে থেকে জানা গেছে, আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তৌফিক আহমেদ সিবিএইচসি হতে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ৭লাখ ৫৪হাজার টাকা পিট নির্মাণের জন্য বরাদ্দ পান। স্থানীয় কোটেশনের মাধ্যমে নির্মাণের আদেশ প্রদান করা হয়। তবে আদেশ না মেনে তিনি বিনা কোটেশনে তার বন্ধু রংপুর গংগাচড়ার মাধ্যমে নামমাত্র কোটেশনে পিট নির্মাণের কাজ করেন। কাজ শেষ হওয়ার পূর্বেই ভূয়া বিল ভাউচার দিয়ে টাকা উত্তোলন করেন। একই র্থ বছরে করোনার ৯লাখ টাকা ভাউচার ব্যতিরেখে নিজে ভূয়া বিল ভাউচার দিয়ে টাকা উত্তোলন করেন। অথচ এই অর্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোনো স্টাফদের মাঝে প্রদান করা হয়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক কর্মচারী জানান, এ টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। করোনা টিকা প্রদানে টিকাদান কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী কর্মীদের ভাতায় কোনো ধরনের ভ্যাট না থাকলেও তিনি ১৫% টাকা কর্তন করেন, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল সপ্তাহে ভ্যাটের কথা বলে ১৫% টাকা কর্তন করেন, জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের সরকারের একটি নির্দিষ্ট সময় দিয়ে সারা বাংলাদেশে তা একযোগে পালন করার নির্দেশ থাকলেও নামমাত্র রেজুলেশন করে পুষ্টি সপ্তাহের অর্থ উত্তোলন করে ৭দিনের কার্যক্রম একদিনে শেষ করেন, যানবাহন গ্যারেজ নির্মাণের কথা বলে আদিতমারী হাসপাতালের ৩০টি মেহগনী গাছ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে কর্তনসহ নানা অনিয়মের কথা অভিযোগে উল্লেখ করেন অভিযোগকারীরা।
এছাড়া তার জন্য বরাদ্দ সরকারি গাড়িটি ব্যবহার করে ব্যক্তিগত কাজ, ভ্রমণ ও আত্মীয়-স্বজনের কাজে ব্যবহারসহ মেরামত করার নাম করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
তবে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তৌফিক আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য নয়। এর চেয়ে বেশি কিছু বলা যাবে না।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডাঃ নির্মলেন্দু রায় বলেন, গণ পিটিশন পেয়েছি তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানান তিনি।
অপরদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, বিষয়গুলো নিয়ে একটি অভিযোগ দপ্তরে এসেছে। এ বিষয়ে দ্রুত তদন্ত কমিটি করে তদন্ত করা হবে। স্বাস্থ্য বিভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে সেবা প্রদান করে কেউ বিধি ভাঙলে তদন্তে প্রমাণ পেলে তদন্তকারী কর্মকর্তার রিপোর্টে প্রমাণিত হলে বিধি মতো সাজা তার হবেই।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম মানিক
সম্পাদক : মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ
প্রকাশক : মোঃ রমজান আলী
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হেলাল হোসেন কবির
Copyright © 2024 আলোর মনি. All rights reserved.