লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের দোয়ানী তিস্তা ব্যারেজের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধিগ্রহণ করা ৩০ শতক জমির উপর অবৈধভাবে বৈরালী ফাস্টফুড চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট এন্ড কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ লালমনিরহাট জেলা শাখার কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল এ বৈরালী ফাস্টফুড চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট এন্ড কমিউনিটি সেন্টারের মালিক। বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) বিকেলে জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে বৈরালী ফাস্টফুড চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট এন্ড কমিউনিটি সেন্টার শুভ উদ্বোধন করেন ১৬, লালমনিরহাট-০১ (পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা) সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ লালমনিরহাট জেলা শাখার সভাপতি মোঃ মোতাহার হোসেন।
লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী দোয়ানী তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় গড়ে তোলা এ অবৈধ স্থাপনার নাম বৈরালী ফাস্টফুড চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট এন্ড কমিউনিটি সেন্টার।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলেন, আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হাতীবান্ধা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (রাজনৈতিক)। এ ছাড়া তিনি হাতীবান্ধার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ ও গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
পাউবোর ডালিয়া জোনের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, তিস্তা ব্যারাজের ৫নং চেক পোস্টের বিপরীতে ফ্লাড বাইপাসের ৩০ শতক জমিতে অবৈধভাবে ২০২১ সালের বালু ভরাট শুরু করেন আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল। এরপর সেখানে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়।
এ বিষয়ে দোয়ানী জোনের পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ রাশেদীন ২০২১ সালের ১১ আগস্ট মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলকে নির্মাণকাজ বন্ধ করতে চিঠি দেন। কিন্তু এতে কর্ণপাত না করে তিনি নির্মাণ কাজ চালিয়ে যান। পরে ২৫ আগস্ট আবার নোটিশ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে পাউবোর ডালিয়া জোনের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রব ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলের বিরুদ্ধে হাতীবান্ধা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে ওই স্থাপনার কাজ শেষ হয়।
পাউবোর কর্মকর্তারা বলেন, নীলফামারীর ডালিয়া ডিভিশনের পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসফাউদদৌলা সোমবার (৬ জুন) লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কাছে এ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে জরুরি চিঠি দেন। এর আগে ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর একই প্রসঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একই দপ্তর থেকে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক বরাবর জরুরি চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, এই জমি তাঁর বাপ-দাদার আমলে অধিগ্রহণ করা হয়েছে, অনেকে টাকা পাননি। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলছে।
পাউবোর কর্মকর্তা আসফাউদদৌলা বলেন, ওই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য পাউবোর পক্ষে যা করা উচিত, তার সবই করা হয়েছে। পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোঃ আবু জাফর বলেন, বিষয়টি তাঁদের নজরে এসেছে। পাউবোর পক্ষ থেকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার দোয়ানীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য চিঠি পেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা কাজ করছেন। উচ্ছেদের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।