অবস্থান : লালমনিরহাট জেলা সদর ও মহেন্দ্রনগরের মাঝামাঝি স্থানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এ স্থাপনাটির অবস্থান।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামার সময় অক্ষ শক্তির বোমারু বিমান বঙ্গদেশের কোলকাতা ও আসামের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা চালায় ১৯৪২খ্রিষ্টাব্দে। অক্ষ শক্তির সামরিক অভিযান থেকে ভারতের পূর্বাঞ্চল রক্ষার্থে মিত্র শক্তির প্রধান সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের জন্য লালমনিরহাটের ‘চিনির পাথার’ এলাকাকে নির্বাচন করা হয়। চিনির পাথার ছিল লালমনিরহাট রেল ষ্টেশন থেকে মাত্র ২মাইল দূরে এবং মহেন্দ্রনগর রেল ষ্টেশনের পশ্চিমে প্রায় ৪বর্গমাইল এলাকাব্যাপী এক দূর্গম জঙ্গলময় সহান, যা বর্তমানে সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ও হারাটি ইউনিয়নভূক্ত। বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন অবিভক্ত ভারতের পূর্বাঞ্চল বিশেষ করে আসামকে রক্ষার জন্য লালমনিরহাট বিমান ঘাঁটিই ছিল মিত্র বাহিনীর একমাত্র ভরসা স্থল। ১৪ আগষ্ট ১৯৪৫খ্রিষ্টাব্দে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর মিত্র বাহিনীর সৈন্যরা দেশে ফিরতে শুরু করে। সাথে সাথে নিসতব্ধতায় ডুবে যেতে থাকে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বলে অভিহিত এ বিমান ঘাঁটি।
এখানে ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে বিমান সার্ভিস চালু হয়। লালমনিরহাট-ঢাকা ভাড়া ছিল ৪৫টাকা। সে সময় লালমনিরহাট-ঢাকা রেলওয়ে প্রথম শ্রেণীর ভাড়া ছিল ২২টাকা। ভাড়া দ্বিগুনেরও বেশি হওয়ার কারণে কর্তৃপক্ষকে প্রায়ই খালি বিমান নিয়ে যাতায়াত করতে হতো। এক সময় বিমান সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৬৫খ্রিষ্টাব্দে ভারতীয় বোমা হামলার পর পাকিস্তান সরকার বিমান ঘাঁটির স্থাপনা সমূহ নিলামে বিক্রি করে দেয়।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২খ্রিষ্টাব্দে লালমনিরহাটের বিমান ঘাঁটিকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হেড কোয়ার্টার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, কিন্তু তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। বর্তমানে বিমান বাহিনীন একটি ইউনিট এখানে অবস্থিত।
যাতায়াত ব্যবস্থা : এটি লালমনিরহাট শহরের একেবারে উপকণ্ঠে রংপুর-লালমনিরহাট মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। শহর হতে বাস কিংবা রিকসাযোগে এখানে যাওয়া যেতে পারে।