আলোর মনি রিপোর্ট: লালমনিরহাটে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে জাসদ নেতা হাসমত আলীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন এক গৃহবধূ। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ লালমনিরহাট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাসমত আলীসহ দুই জনের নামে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে লালমনিরহাট সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন ২নং ওয়ার্ডের তেলীপাড়া (ভাটাপাড়া) গ্রামের আয়নাল হোসেনের পুত্র আল আমিন ইসলামের সাথে ৯ মাস পূর্বে বিয়ে হয় লালমনিরহাট পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের চাঁদনী বাজার এলাকার দিনমজুর এন্তাজুল হকের মেয়ের।
বিয়ের কয়েক মাস পর আল আমিন ইসলামের মা নারগিস বেগম (শ্বাশুড়ী) ওই গৃহবধূকে দেহ ব্যবসা করার জন্য বিভিন্ন চাপ সৃষ্টি করেন। এতে গৃহবধূ রাজি না হওয়ায় তাকে ভয়ভীতি, হুমকি ধমকিসহ শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন আরম্ভ করেন।
এরেই এক পর্যায়ে চলতি বছরের গত (১৫ মার্চ) দুপুর ১টায় সুযোগ বুঝে (শ্বাশুড়ী) নারগিস বেগম বিভিন্ন মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে ওই গৃহবধূকে সাপটানা ১নং আবাসনের পাশে হাসমত আলীর মাছের খামার ঘরে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকে ঘরের ভিতরে বসে ছিলেন জাসদ নেতা হাসমত আলী।
গৃহবধূকে ঘরের ভিতরে নিয়ে (শ্বাশুড়ী) নারগিস বেগম দরজা বন্ধ করে বাহিরে পাহাড়া দিতে থাকেন। ওই সময় হাসমত আলী গৃহবধূকে জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শ কাতর স্থানে হাতদেয় এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
এতে গৃহবধূ তার ইজ্জত রক্ষার্থে চিৎকার করে হাসমত আলীকে ধাক্কা দিয়ে খামারের ঘর থেকে বেড়িয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকায় বাবার বাড়িতে চলে যান। পরে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে লালমনিরহাট সদর থানায় হাসমত আলীসহ (শ্বাশুড়ী) নারগিস বেগমের নামে মামলাটি দায়ের করেন। যার মামলা নং-৪৯/২১৯, তাং ১৯/০৪/২২ইং।
এদিকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ লালমনিরহাট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাসমত আলীর নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সেই সাথে জেলা জাসদের নেতাকর্মীদের মাঝে বেশ মিশ্র প্রক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর সাথে কথা বলে জানা যায়, বিয়ের পর থেকেই তার (শাশুড়ী) নারগিস বেগম বিভিন্ন সময়ে ঢাকায় নিয়ে গিয়েও তাকে দিয়ে যৌন ব্যবসা করানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বর্তমানে আসামীদ্বয় গ্রেফতার না হওয়ায় ওই গৃহবধূ ও তার পরিবার প্রাণ সংশয় রয়েছেন বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
ঐ এলাকার একাধিক ব্যাক্তি জানায়, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ এর নেতা হওয়ার সু-বাদে হাসমত আলী বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ড ঘটাতে দ্বিধা করেনা। তিনি ইতিপূর্বে আরও বিভিন্ন জায়গায় নারী ঘটিত ব্যাপারে অনেক জরিমানা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, মামলাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। আসামী পলাতক থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আসামীদয়কে গ্রেফতারের জন্য সর্বাত্তক চেষ্টা চলছে।
লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহা আলম বলেন, মামলার আসামীরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।