আলোর মনি রিপোর্ট: সাত মাস বয়সী রোজ মনি জানেনা বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) রাতে তার বাবা পুলিশের হাতে মরে গেছে। বারবার রোজ মনি তার বাবাকে ডাকছে। এপাশ ওপাশ দেখছে ছলছল নয়নে। তার বাবা নেই। আর কোনো দিন আসবেনা। হয়তো কয়েক বছর পর ওর বাবার চেহারাও মনে থাকবে না।
রোজ মনির মা মনিরা বেগম আর দাদি ছাফিয়া বেগমের আহাজারি থামছে না। বারবার বিচার চাইছেন। এলাকার মানুষও আহাজারি করছেন। সবার দাবি রবিউল ইসলাম হত্যার বিচার হোক।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) জুয়ার আসরের কথা বলে রবিউল ইসলাম ( ২৫) নামক একজনকে আটক করে লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ।
এলাকাবাসীর দাবী, রবিউল ইসলাম কখনই জুয়া খেলতো না। এইস এম বিআর নামক একটি কোম্পানীর ঢাকা অফিসে চাকুরী করতেন। করোনাকালে সে বাড়ি ফিরে আসে। বিয়ে করে আড়াই বছর আগে। বিয়ের এক বছর ছয় মাস পর তাদের কোল জুড়ে আসে রোজ মনি (সাত মাস) বয়সী একমাত্র সন্তান। এই ছিলো তাদের ঘর-সংসার।
এলাকাবাসী জানান, বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) রাতে লালমনিরহাট সদর থানার কুমাড়ের পুলের চরকের থানে চরক পুজা বসে। সেখানকার একটি চায়ের দোকান থেকে রাত ৯টার সময় রবিউল ইসলামকে আটক করে পুলিশ। রাত ১০টার পরে তাদের জানানো হয়, রবিউল ইসলাম মারা গেছেন।
রবিউল ইসলামের ছোট ভাই সোহাগ খান সাংবাদিকদের বলেন, রবিউলকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে স্যালাইন দেয়া হয়। স্যালাইনের পাইপ ঝুলতে থাকে। এক ফোঁটা স্যালাইনও রবিউলের শরীর গ্রহণ করেনি। তবে, পুলিশ তাদেরকে বের করে দেয়। রবিউলের কাছে তাদের কাউকে ভিরতে দেয়া হয়নি।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের ইনচার্জ জহুরুল ইসলাম (সিনিয়র স্টাফ নার্স) সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল রাতে পুলিশ ভর্তি করায়। আমি সঙ্গে সঙ্গে রেফার্ড করি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, মেলায় জুয়া চলছে এমন খবরে পুলিশ অভিযান চালায়। দুজনকে গ্রেফতার করে। একজন অসুস্থ্যবোধ করলে হাসপাতালে নেয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করে। নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি কালে মারা যায়। সন্দেহ হলে, ডাক্তার দেখানো হয়। ডাক্তার মৃত ঘোষণা করে।