আলোর মনি রিপোর্ট: হাতীবান্ধা থানা যেন এক রহস্যময়। বর্তমান সময় থানার অন্দরমহল ব্যবহৃত হচ্ছে টর্চার সেল হিসেবে। যারা একবার মামলায় থানার অন্দরমহলে গেছেন তাদের অভিজ্ঞতা ভয়াবহ। স্থানীয়রা সাংবাদিকদের বলছেন, সেবামূলক না হয়ে উল্টো জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে থানা।
নাগরিক সেবা নয়, ভোগান্তি নির্যাতন আর ভীতি তৈরি করে রাখাই যেন এই থানার একমাত্র উদ্দেশ্য। পারতপক্ষে থানার আশপাশে কেউ আসতে চান না। কারণ যারা একবার এর অন্দরমহলে গেছেন তারা কেউ হয়রানির শিকার হয়েছেন, কেউ পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, কেউ হয়েছেন সর্বশান্ত। আর এবার টাকা না দেওয়ায় নির্যাতন করে হত্যা করা হয় হিমাংশুকে।
শনিবার (৮ জানুয়ারি) লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের পূর্ব কাদমা মালদহপাড়ার বাড়িতে সাংবাদিকদের কাছে বিশ্বেশ্বর বর্মণ অভিযোগ করে বলেন, পুলিশের দাবি করা এক লাখ টাকা না দেওয়ায় হিমাংশু বর্মণকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তার ভাষ্য, টাকা না দিলে ‘স্ত্রী হত্যা’র অভিযোগে পুলিশ তার ছেলেকে জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়েছিল। যদিও পুলিশের দাবি, স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে আটক হওয়া হিমাংশু থানার একটি কক্ষে আত্মহত্যা করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) সকালে হিমাংশুর শোবার ঘর থেকে তার স্ত্রী সবিতার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর দুপুর ১২টার দিকে হিমাংশু ও তার ১৩বছর বয়সী মেয়েকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে বিকেলে হিমাংশুর মৃত্যুর সংবাদ পান তারা। পুলিশের ভাষ্য, গলায় তার পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন হিমাংশু।
তবে বিশ্বেশ্বর বর্মণের ভাষ্য, শুক্রবার দুপুরে ছেলেকে থানায় দেখতে গেলে পুলিশ তার কাছে এক লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে পারলে ছেলে ও নাতনি পিংকীকে ছেড়ে দেওয়া হবে; নতুবা তাদের জেলে পাঠানো হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, থানা থেকে ফেরার আগে ওই দিন বেলা দেড়টার দিকে হিমাংশুর সঙ্গে সর্বশেষ দেখা হয় তার। তখন হিমাংশু জানায়, পুলিশ তার কাছেও এক লাখ টাকা দাবি করেছে। টাকা না দিলে তাকে ও তার মেয়েকে জেলে পাঠিয়ে দেবে বলেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকালে হিমাংশুর স্ত্রী সাবিত্রী রানী ওরফে সবিতা রানী নিজ বাড়িতে খুন হয়েছেন বলে জানতে পারেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে তারা ছুটে এসে হিমাংশুকে তার স্ত্রীর মরদেহের পাশে দেখতে পান। পরে হাতীবান্ধা থানার ওসি এরশাদুল আলম ওই লাশসহ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হিমাংশু ও তার বড় মেয়ে পিংকীকে থানায় নিয়ে আসেন। বিকেলে তারা হিমাংশুর মৃত্যুর খবর পান। তাদের দাবি, পুলিশী নির্যাতনেই হিমাংশু মারা গেছেন। সুষ্ঠু তদন্ত হলেই সত্য প্রকাশ পাবে।
এ নিয়ে রোববার "লালমনিরহাটে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু" শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম মানিক
সম্পাদক : মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ
প্রকাশক : মোঃ রমজান আলী
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হেলাল হোসেন কবির
Copyright © 2024 আলোর মনি. All rights reserved.