আলোর মনি রিপোর্ট: শীতের আগমনী বার্তায় লালমনিরহাটের প্রকৃতির রুপ যেন বদলে যাচ্ছে। কৃষকের ধান কাটা ও মাড়াই শেষ হয়েছে ইতিপূর্বেই। সোনালী ধানে ধানে কৃষকের গোলা ভরে উঠেছে। বাড়ি বাড়ি শুরু হয়েছে পিঠা উৎসব। সেই সাথে চলছে আগামী মৌসুমের ফসল চাষের সব ধরনের প্রস্তুতি। সবুজ আর শ্যামল প্রকৃতির ষড়ঋতুর এই বাংলাদেশে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে যেমনি প্রকৃতির রুপ ও রং বদলায়, তেমনি বদলায় ফসলের মাঠ। কখনো সবুজ, কখনো সোনালী, কখনো বা হলুদে এমনি ফসলের মাঠ পরিবর্তনের এ পর্যায়ে হলুদ সরিষা ফুলের চাদরে ঢাকা পড়ছে লালমনিরহাট জেলার ফসলের মাঠ। লালমনিরহাট জেলায় এবার সরিষা চাষে ব্যাপক ফসলের ক্ষেত দেখা গিয়েছে।
সরিষা প্রধানত আবাদ হয় দোঁআশ ও বেলে-দোঁআশ মাটিতে বিশেষ করে নদী বিধৌত এলাকায়। অন্যান্য ফসলের তুলনায় এ জেলায় সরিষা কম আবাদ হয়। বর্তমানে সরিষা একটি লাভজনক ফসলে পরিণত হওয়ায় ধীরে ধীরে সরিষা আবাদ বছর বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গাঢ় হলুদ বর্ণের সরিষার ফুলে ফুলে মৌ মাছিরা মধু সংগ্রহের জন্য গুন গুন করছে। চলছে মৌমাছির মধু আহরনের পালা। মৌমাছিরা যেন মধু সংগ্রহে মাঠে নেমেছে।
শীতের শিশির ভেজা সিক্ত সকালে মাঠভরা সরিষা ফুলের গন্ধ বাতাসে ভাসছে। মানুষের মনকে পুলকিত করছে। সরিষার ক্ষেতগুলো দেখে মনে হয় কে যেন হলুদ চাদর বিছিয়ে রেখেছে। হেমন্তকালের মাঠে মাঠে সবুজের অপার সমারোহ এখন আর নেই। দিগন্ত জুড়ে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য শোভা পাচ্ছে সরিষা ও শীতকালীন সবজি মাঠের শোভা বর্ধন করছে। গত কয়েক বছর যাবত লালমনিরহাট জেলায় সরিষার আবাদ বেড়েছে।
ফুলগাছ গ্রামের সরিষা চাষী মোঃ আঞ্জু জানান, দেশীয় সরিষার জাতগুলোর চেয়ে উন্নত জাতগুলো ফলন বেশী হয়। গত বছর প্রতিমন সরিষা ২হাজার হতে ২হাজার ৫শত টাকায় বিক্রি হয়েছে।
কোদালখাতা গ্রামের সরিষা চাষী হাফেজ ও আজম জানান, সরিষার চাষ পদ্ধতি খুব সহজ ও কম খরচে অল্প সময়ে খুবই লাভ জনক ফসল। কার্তিক-অগ্রাহায়ন মাসে দু-একটি চাষেই জমিতে ছিটিয়ে সরিষা বীজ বপন করা হয়। সেচ ও সার লাগে কম তাছাড়া সরিষার পাতা একটি উৎকৃষ্ট জৈব সার। প্রতি বিঘায় ৪মন থেকে ৫মন সরিষা হয়ে থাকে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মারুফা ইফতেখার সিদ্দিকা বলেন, ১হাজার ৬শত ৪০জন কৃষককে সরিষা বীজ ১কেজি, ডিএপি ১০কেজি, এমওপি ১০কেজি করে প্রত্যেককে বিনামূল্যে বীজ ও সার সহায়তা প্রদান করা হয়।