আলোর মনি রিপোর্ট: লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার নামুড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামকে ঘুষি দিয়ে নাক ফাটালেন একই বিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক ভুপতি রঞ্জন রায়।
আহত প্রধান শিক্ষককে স্কুলটির অন্য শিক্ষকরা উদ্ধার করে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে ওই প্রধান শিক্ষক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম আদিতমারী উপজেলা সদরের টাওয়ার পাড়া এলাকার বাসিন্দা।
সোমবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে নামুড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অফিস কক্ষে এ ঘটনাটি ঘটে। এ কাজে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
আদিতমারী হাসপাতালে আহত প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, সহকারী শিক্ষক ভুপতি রঞ্জন রায় প্রায়শই বিদ্যালয়ে দেরীতে আসেন এবং অনুপস্থিত থাকেন। এসব কারণে হাজিরা খাতায় তাকে অনুপস্থিত দেখাই।
তিনি আরও জানান, স্বাক্ষরের জায়গায় অনুপস্থিত লেখা হলেও জোরপূর্বক সহকারী শিক্ষক ভুপতি রঞ্জন রায় স্বাক্ষর করেন। এর কারণ জানতে চাওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বিদ্যালয় চলাকালীন অফিস কক্ষে সবার সামনে নাকে উপর্যুপরি ঘুষি মারেন।
এ সময় বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নজরুল ইসলাম ভুপতি রঞ্জন রায়কে সহযোগিতা করেন বলে তিনি দাবি করেন।
নামুড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক আলকাছ আলী জানান, ভুপতি রঞ্জন রায় গত ৫দিন বিদ্যালয়ে দেরীতে আসায় স্যার (প্রধান শিক্ষক) হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত লিখে স্বাক্ষর করেন। কেন অনুপস্থিত লেখা হয়েছে এ নিয়ে অফিস কক্ষে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়।
এরই এক পর্যায়ে সহকারী শিক্ষক ভুপতি রঞ্জন রায় ও অফিস পিয়ন নজরুল ইসলাম প্রধান শিক্ষককে আঘাত করে অফিস থেকে পালিয়ে যান। পরে বিদ্যালয়ের অন্যরা মিলে স্যারকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
নামুড়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য ইকবাল হোসেন বিপ্লব সাংবাদিকদের বলেন, ওই শিক্ষকের আচার-ব্যবহারে বিদ্যালয়ের সব শিক্ষক অসন্তুষ্ট। তিনি স্কুলের নারী শিক্ষকদের সামনেই অন্যদের অশালীন ভাষা প্রয়োগ করে থাকেন।
সহকারী শিক্ষক ভুপতি রঞ্জন রায় সাংবাদিকদের বলেন, অহেতুক প্রধান শিক্ষক আমাকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে না দিয়ে অনুপস্থিত লিখে রাখতেন। এ নিয়ে স্যারের সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তিনি উত্তেজিত হয়ে আমাকে মারতে এলে আমি তাকে ধাক্কা দিই। এ সময় তার নাক হয়তো ফেটে গিয়েছে।
আদিতমারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আদিতমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি তার জানা নেই।
ওই স্কুলে একাধিক মামলা থাকায় দিন-দিন জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।