আলোর মনি রিপোর্ট: গত ৩১ অক্টোবর বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় ''পাটগ্রামে নিকাহ রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দেনমোহর বাড়িয়ে ভুয়া নিকাহ রেজিস্ট্রির অভিযোগ'' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর পাটগ্রাম উপজেলার সাব রেজিস্ট্রার রতন অধিকারী তদন্ত শুরু করেছেন।
গত ৩ অক্টোবর সকাল ১১টায় পাটগ্রামের সাব রেজিস্ট্রার রতন অধিকারী শ্রীরামপুর ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার ও রাশেদ মেনন বিদ্যুতকে মোবাইলে ডেকে নেন নিজ কার্যালয়ে।পাটগ্রাম পৌরসভার নিকাহ রেজিস্ট্রার আনোয়ার হোসেনকে সাথে নিয়ে উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনেন। শ্রীরামপুর ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার আব্দুল বারেকের নিকাহ রেজিস্ট্রির ২টি ভলিয়ম বই বের করে ২০০৮ ও ২০১৪ সালে একই ব্যক্তির নিকাহ রেজিস্ট্রির প্রমান পান।
২০০৮ সালের ভলিয়ম বইয়ে দেখা যায়, পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের মাসুম আলীর কন্যা মরিয়ম আক্তার লাকী ও হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নান সরকাের ছেলে রাশেদ মেনন বিদ্যুতের নিকাহ রেজিস্ট্রি ও দেনমোহর ১লাখ ৫৫হাজার ৫শত ৫৫টাকা ধার্য্য করে নগদ ৫০হাজার টাকা পরিশোধ দেখায়ে নিকাহ রেজিষ্ট্রি করেন নিকাহ রেজিস্ট্রার আব্দুল বারেক।
২০১৪ সালের ভলিয়ম বইয়ে দেখা যায়, একই ব্যক্তির নিকাহ রেজিস্ট্রি ও দেনমোহর ৫লাখ ৫৫হাজার ৫শত ৫৫টাকা ধার্য্য করে নগদ ৫০হাজার পরিশোধ দেখায়ে নিকাহ রেজিষ্ট্রি করেছেন নিকাহ রেজিস্ট্রার আব্দুল বারেক।
সাব রেজিস্ট্রার রতন অধিকারী পাটগ্রাম পৌরসভার নিকাহ রেজিস্ট্রার আনোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চান একই ব্যক্তির দেনমোহর বাড়িয়ে পূনরায় নিকাহ রেজিস্ট্রির নিয়ম কি? জবাবে আনোয়ার হোসেন বলেন, কেও যদি তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় নিকাহ করতে চায় তাহলে তালাক নামার সূত্র ভলিয়ম বইয়ে তুলে নতুন করে দেনমোহর বাড়ানো যাবে। আবার স্বামী স্ত্রী থাকা অবস্থায় তারা তাদের দেন মোহর বাড়াতে পারবে তবে ছেলে এবং মেয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত আবেদন করতে হবে। কিন্তু শ্রীরামপুর ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার আব্দুল বারেক তার কোনটাই করেনি। অবশ্যই এখানে সে অন্যায় করেছে।
পাটগ্রাম সাব রেজিস্ট্রার রতন অধিকারী নিকাহ রেজিস্ট্রার আব্দুল বারেককে দুই বার নিকাহ রেজিস্ট্রি ও দুই রকম দেনমোহর কেন করেছেন জিজ্ঞাসা করলে জবাবে আব্দুল বারেক বলেন, তারা সেচ্ছায় দেন মোহর বাড়াতে বলেছিল তাই নতুন করে দেনমোহর বাড়িয়ে নিকাহ রেজিস্ট্রি করেছি।
২০০৮ সাল ও ২০১৪ সালে নিকাহ রেজিস্ট্রির ভলিয়ম বইয়ে কন্যা মরিয়ম আক্তার লাকীর স্বাক্ষর মিল নেই ও ২০০৮ সালে ছেলে পক্ষের স্বাক্ষীদের স্বাক্ষর ২০১৪ সালে ছেলে পক্ষের স্বাক্ষী মেয়ে পক্ষের লোক হওয়া ঐ দিন মেয়ে মরিয়ম আক্তার লাকী উপস্থিত না থাকায় ৭ নভেম্বর মরিয়ম আক্তার লাকীসহ নিকাহ রেজিস্ট্রার আব্দুল বারেককে আসতে বলেন।
৭ নভেম্বর বিকাল ৩টায় পাটগ্রাম সাব রেজিস্ট্রার রতন অধিকারী ছেলে পক্ষ ও মেয়ে পক্ষের বক্তব্য শোনেন এবং তদন্ত রিপোর্ট পরে দিবেন বলে তদন্ত কাজ শেষ করেন।
এ ব্যাপারে পাটগ্রাম উপজেলার সাব রেজিস্ট্রার রতন অধিকারী সাংবাদিকদের বলেন, তদন্তে যাহা পেয়েছি তাই জেলা রেজিরস্ট্রারকে পাঠাবো। তিনিই সিদ্ধান্ত নিবেন।
এর আগে ২১ অক্টোবর লালমনিরহাট জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর শ্রীরামপুর ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার আব্দুল বারেকের বিরুদ্ধে দেনমোহর বাড়িয়ে পূনরায় নিকাহ রেজিস্ট্রির অভিযোগ করেছিলেন হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামের রাশেদ মেনন বিদ্যুত।
পরে ৩১ অক্টোবর বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হলে জেলা রেজিস্ট্রার খালিদ মোহাম্মদ বিন আসাদ পাটগ্রাম সাব রেজিস্ট্রারকে তদন্তের জন্য আদেশ করে চিঠি পাঠান।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম মানিক
সম্পাদক : মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ
প্রকাশক : মোঃ রমজান আলী
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হেলাল হোসেন কবির
Copyright © 2024 আলোর মনি. All rights reserved.