আলোর মনি রিপোর্ট: রেলওয়ের টিকিট বিক্রির প্রায় ৩৪লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে মিশুক আল মামুন নামের এক বুকিং সহকারীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সরকারী অর্থ আত্মসাতের মামলা করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। মামলায় পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। ঘটনাটি নিয়ে লালমনিরহাট রেল বিভাগে চলছে তোলপাড়।
জানা গেছে, রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগের অধীন কাউনিয়া স্টেশনের বুকিং সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন কুড়িগ্রাম জেলার চর বজরা গ্রামের মনছুর কাদেরের পুত্র মিশুক আল মামুন। গত ১০ আগস্ট হতে ১ অক্টোবর পর্যন্ত রেলওয়ের আয়ের ৩৩লাখ ৮৫হাজার ৫শত টাকা ১মাস ২০দিন পর্যন্ত জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে কর্তৃপক্ষ তাকে তাৎক্ষণিক ডেকে টাকা ফেরতের জন্য তাগিদ দেয়। মামুন টাকা ফেরতের সময় নিয়ে মুচলেকা দেন। নির্ধারিত সময়সীমার পর টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে লালমনিরহাট রেলওয়ে থানায় গত সোমবার (৪ অক্টোবর) অভিযোগ দায়ের করেন জুনিয়র ট্রাফিক ইন্সপেক্টর সহির উদ্দিন। ঐদিনই তাকে পুলিশে সোপর্দ করে রেল কর্মকর্তারা। পরদিন মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে কাউনিয়া স্টেশন মাস্টার বাব আল রশিদকে । তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার কথা জানিয়েছেন রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগের ম্যানেজার শাহ সুফী নুর মোহাম্মদ।
তিনি বলেন, আমি নিজে গত শনিবার বিকেলে বিষয়টি অবগত হই। এরপর গত রবিবার কর্মকর্তা মারফত বিষয়টি নিশ্চিত হই। এরপর রবিবার মামুন ২০লক্ষ টাকা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু টাকা দিতে তিনি ব্যর্থ হন। পরদিন সোমবার দুপুরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করি। বর্তমানে তিনি সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় রয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখছেন। কাউনিয়া স্টেশন মাস্টারের গাফলতির কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হওয়ায় তাকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধেও বিভাগীয় মামলা হবে।
লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনের বুকিং সহকারী জাকির হোসেন সাংবাদিকদের জানান, যাত্রীদের কাছে টিকিট বিক্রি ও মালামাল পরিবহনের ভাড়া বাবদ আদায় করা টাকা একটি রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে নির্দিষ্ট ব্যাগে ভরে সিলগালা করে রেলওয়ের নির্দিষ্ট ট্রেনে পশ্চিমাঞ্চল জোনের পে এন্ড ক্যাশ অফিসে পাঠানোর নিয়ম রয়েছে। কিন্তু মিশুক আল মামুন এসবের কিছুই করেননি।
এদিকে রেলওয়ের একটি সূত্র দাবি করেছে, মামুন বরাবরই একজন ভালো মানুষ। তার বিরুদ্ধে কখনোই কোনো অনিয়মের অভিযোগ ছিলো না। কিন্তু চলতি আইপিএল এর ক্রিকেট নিয়ে জুয়া খেলে মামুন এই টাকা তছরুপ করেছেন।
লালমনিরহাট রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাহারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, রেল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ দায়েরের পর অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। মামুনকে আটকের পর ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে দুদকে মামলা হস্তান্তরের আবেদন করা হয়েছে। এখন মামলাটি দুদক তদন্ত করবে।