আলোর মনি রিপোর্ট: লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে আইসিইউ বেড ও আইসোলেশন ইউনিটের বরাদ্দ দিলেও দরপত্র জঠিলতায় ধমকে আছে নির্মাণ কাজ। ফলে স্বাস্থ্য সেবার মতো গুরুত্বপুর্ণ নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে লালমনিরহাট জেলাবাসী।
জানা গেছে, ভারতের সীমান্ত ঘেঁসা লালমনিরহাট জেলাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি পুরনে সরকার লালমনিরহাট সদর হাসপাতালকে আধুনিকায়ন করতে নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করে। ২শত ৫০শয্যার এ হাসপাতালের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৩২কোটি টাকা। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে নির্মাণ কাজটি বাস্তবায়ন করছে লালমনিরহাট গণপুর্ত বিভাগ। সাম্প্রতিক সময় সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য আইসিইউ ইউনিট খুবই জরুরী। কিন্তু লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে আইসিইউ ব্যবস্থা নেই। তাই লালমনিরহাট জেলাবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার ১০শয্যার আইসিইউ ও ২০শয্যার আইসোলেশন ইউনিট চালুর জন্য আলাদা ৬কোটি টাকা বরাদ্ধ প্রদান করে। আইসিইউ ও আইসোলেশন ইউনিট নির্মাণের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের প্রেরিত অর্থে ইজিপি দরপত্র আহবান (আইডি নং ৫৯৪৪৮৪) করেন গণপুর্ত রংপুর অঞ্চল। যা গত ১৭ আগস্ট দরপত্র বক্স খোলা হয়। যাতে ৪৯ ও ৪২লাখ টাকার ব্যবধানে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে বিবেচিত হন প্রকল্প বাস্তবায়ন লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দরপত্র খোলার এক মাস অতিবাহিত হলেও সর্বনিম্ন দরদাতাকে চুড়ান্ত করে কার্যাদেশ দেয়া হয়নি। ফলে এসব ইউনিট নির্মাণ কাজে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ দিকে দরপত্র চুড়ান্ত করতে দরপত্র অবহিতকরণ চিঠিও দিয়েছেন সর্বনিম্ন দরদাতা প্রকল্প বাস্তবায়ন লিমিটেড। কিন্তু এতেও ঘুম ভাঙ্গছে না দরপত্র আহবানকারী গণপুর্তের। এতে আইসোলেশন ও আইসিইউ ইউনিট নির্মাণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ দিকে নতুন ভবন নির্মাণ কাজের মেয়াদ ২দফায় বাড়ালেও তা সমাপ্ত করতে পারেনি স্বাধীন কনস্ট্রাকশন নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। ফলে স্বাস্থ্য সেবায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সেবা গ্রহীতারা।
লালমনিরহাট গণপুর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, মুল ভবন নির্মাণ কাজের মেয়াদ ২দফায় বাড়ানো হলেও ৮৫শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। চলতি বছরে শেষ করার কথা থাকলেও আগামী বছরের শুরুর দিকে হস্তান্তর করার কথা রয়েছে। আইসিইউ ও আইসোলেশন ইউনিটের দরপত্র আহবান করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্ব ব্যাংকের কাজ তাই সর্বনিম্ন হলেও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ছাড়া তারা কার্যাদেশ নাও দিতে পারে। তবে এ বিষয়টি নির্ভর করছে বিশ্ব ব্যাংক কর্তৃপক্ষের উপর।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ২শত ৫০শয্যার এ হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় রোগীদের চিকিৎসা দিতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। গণপুর্তকে বারংবার জানানো হলেও কাজের অগ্রগতি নেই। করোনার এ দুঃসময়ে আইসিইউ ও আইসোলেশন ইউনিটের খুবই প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান দ্রুত করে না দিলে মানুষকে সেবা দেয়া যাচ্ছে না।