আলোর মনি রিপোর্ট: লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার পশ্চিম হলদিবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সাইফুল ইসলাম। গত বছর যখন সে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলো তখন করোনা সংক্রমণের কারণে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যালয়। এরপর দীর্ঘ ১৮ মাস তার আর বিদ্যালয়ে যাওয়া হয়নি। অবশেষে খুলেছে বিদ্যালয়। আর সাইফুল চতুর্থ শ্রেণি থেকে উঠেছে পঞ্চম শ্রেণিতে। কিন্তু তার সেই রঙ্গীন টিনের সৌন্দর্যময় বিদ্যালয়টি আর নেই। এক মাস আগে তিস্তা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এমন অবস্থা শুধু পশ্চিম হলদিবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নয়। গত ২৭ আগস্ট একই ইউনিয়নের পূর্ব হলদিবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। একই সঙ্গে বিলীন হয়েছে একই এলাকার কমিউনিটি ক্লিনিকটিও। এদিকে নদী গর্ভে বিলীন হওয়া বিদ্যালয় ২টি পুর্নঃস্থাপনের স্থান নির্ধারণে নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে।
দেখা যায়, পূর্ব হলদিবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাটিকাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন ভবনের ৩টি কক্ষে পাঠদান দেয়া হচ্ছে। আর পশ্চিম হলদিবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওই এলাকার সাত ভাইয়ের বালু চরে একটি টিনের চালা করে পাঠদান দেয়া হচ্ছে।প্রখর রোদের কারণে ওই টিনের চালার মধ্যে ক্লাস করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। স্থানীয় প্রশাসন বিদ্যালয় ২টি পুনঃস্থাপনের সিদ্ধান্ত নিলে স্থান নির্ধারণ নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সালমা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, টিনের চালা ও গরম বালুর উপর ক্লাস করতে আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। উপরে টিনের তাপ ও নিচে বালুর তাপ। জরুরিভাবে যদি আমাদের ভালো ক্লাস রুম করা না হয় তাহলে হয়তো আর আমাদের স্কুলে আসা হবে না।
ওই এলাকার হাফিজুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, পশ্চিম হলদিবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীর গর্ভে যাওয়ায় এই চরটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আগে সে চরে বিদ্যালয়টি ছিলো ওই চরে এখন মাত্র ২০/২৫টি পরিবার বসবাস করে। বর্তমানে যে স্থানে টিনের চালা করে বিদ্যালয় তৈরি করা হয়েছে সেই চরে দেড় শতাধিক পরিবার থাকতো। সে কারণে এই স্থানে ভালো মানের ক্লাস রুম তৈরি করলে অনেক শিশু লেখাপড়ার সুযোগ পাবে। এই চরটি সহজে নদী ভাঙ্গনের শিকার হবে না। আগের জায়গায় স্কুল তৈরি হলে আগামী বন্যায় আবারও নদী ভাঙ্গনের শিকার হতে পারে।
পশ্চিম হলদিবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শহিনুর ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে যে চরে টিনের চালা করা হয়েছে ওই চরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি।
সে কারণে ওই চরে বিদ্যালয়টি পুনঃস্থাপনসহ জরুরিভাবে ক্লাসরুম তৈরি করা প্রয়োজন।
হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন সাংবাদিকদের বলেন, বিদ্যালয় ২টি পরিদর্শন করেছি। খুব তাড়াতাড়ি বিদ্যালয় ২টির স্থান নির্ধারণ করে অবকাঠামো তৈরির ব্যবস্থা করা হবে।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম মানিক
সম্পাদক : মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ
প্রকাশক : মোঃ রমজান আলী
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হেলাল হোসেন কবির
Copyright © 2024 আলোর মনি. All rights reserved.