আলোর মনি রিপোর্ট: লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের দেউতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে
নৈশপ্রহরী ও আয়া পদে নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন শাখার সভাপতি ও উক্ত বিদ্যালয়ের সভাপতি আজিজার রহমানের বিরুদ্ধে। শুধু ওই বিদ্যালয়ের সভাপতিই নন, প্রধান শিক্ষক হীরা লাল রায়ের বিরুদ্ধেও নিয়োগ দিতে চাকুরী প্রত্যাশীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তাদের যোগসাজশে চাকুরী প্রত্যাশীরা দিশেহারা হয়ে লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন।
প্রাপ্ত অভিযোগ ও খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নে দেউতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় অবস্থিত। উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হীরা লাল রায় গত ১৪ জুলাই/২১ইং তারিখে জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় আয়া ও নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন। অন্য কেউ যাতে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি না পায় সেজন্য গোপনীয়তা রক্ষায় গত ১৪ জুলাই/২১ইং তারিখে জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকার সবকপি কিনে নেন। তারপরেও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ২টি পদের বিপরীতে বেশকিছু নারী-পুরুষ আবেদন করেন। কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন শাখার সভাপতি ও উক্ত বিদ্যালয়ের সভাপতি আজিজার রহমান নিরাপত্তাকর্মী পদে তার ছেলে শাজাহান এবং ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হীরা লাল রায় মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময় আয়া পদে সুমি বেগমকে মনোনীত করেন।
করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবেলায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার দফায় দফায় লকডাউন কার্যকর করেন। চলতি বছরের সর্বশেষ লকডাউন ১০ আগস্ট পর্যন্ত ছিল। এ লকডাউনে সমস্ত অফিস আদালত বন্ধ ছিল। আর যদি শিক্ষা খাতের কথা বলি, তা তো খোলার কোন নাম গন্ধই নেই। তারমধ্যেও তারাহুরা করে দেয়া হয়েছে গত ১৪ জুলাই নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেউতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের। কারণ নিরাপত্তাকর্মী পদে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি আজিজার রহমান তার ছেলে শাজাহানকে এবং প্রধান শিক্ষক হীরা লাল রায় মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময় আয়া পদে সুমি বেগমকে নিয়োগ দিবেন। কিন্তু ২৪ আগস্ট সভাপতি আজিজার রহমানের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ ছিল। শিক্ষা অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুয়ায়ী ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ ১ মাসের কম হলে বিদ্যালয়ের সভাপতিকে আর ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়ন করা যাবে না। ফলে তড়িগড়ি করে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি আজিজার রহমান তার ছেলে শাজাহানকে এবং প্রধান শিক্ষক হীরা লাল রায় মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময় আয়া পদে সুমি বেগমকে নিয়োগ করেন।
নিরাপত্তাকর্মী পদে শাজাহান ও আয়া পদে সুমি জে.এস.সি ও জে.ডি.সি পাশ করেননি। প্রধান শিক্ষক হীরা লাল রায় টাকার বিনিময় সুকৌশলে সার্টিফিকেট তৈরি করেছেন। যা ওই সার্টিফিকেট সূত্র ধরে নিচের ক্লাসগুলো তদন্ত করলে প্রমাণ মিলবে যে, সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক কি পরিমাণ অনিয়ম করেছেন।
অপর চাকরিপ্রত্যাশী হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমিও নিরাপত্তাকর্মী পদে আবেদন করেছি। কিন্তু কোন কাগজপত্র পাইনি। এখন শুনছি, নিরাপত্তাকর্মী পদে সভাপতির ছেলে ও আয়া পদে প্রধান শিক্ষক মনোনীত প্রার্থীকে টাকার বিনিময় নিয়োগ দিয়েছেন। আমরা এর প্রতিকার চাই।
দেউতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হীরা লাল রায়ের বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নী।
অভিযোগের বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আজিজার রহমান সাংবাদিকদের বলেন, নিয়ম অনুয়ায়ী ২জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া তিনি আর কিছু বলতে রাজি হয়নি।
লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।