আলোর মনি রিপোর্ট: বাক্সকচুর চাহিদা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। সেই সাথে বাক্সকচুর দামও বেড়েছে কয়েকগুণ। এতে করে বাক্সকচু চাষ করে লাভবান হচ্ছেন লালমনিরহাট জেলার কৃষকরা।
বাক্সকচু উৎপাদনে ৬ মাস থেকে ৭ মাস সময় লাগে বলে অনেক কৃষক এই সবজী চাষে তেমন উৎসাহী নন। তবে, যারা বাক্সকচু চাষ করছেন তারা ভালো ফলন ও সন্তোষজনক আয় পেয়ে খুবই খুশি।
লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের গুড়িয়াদহ গ্রামের মন্ডলেরহাট এলাকার চাষী মফিজ আলী বলেন, বাক্সকচুকে কোনো কোনো এলাকায় কাঠকচু বলে। বাক্সকচু কাঠ গাছের মতো লম্বা আকার হওয়ায় এ কচুকে কাঠকচু বলা হয়ে থাকে।
তিনি আরও বলেন, আমি প্রায় ৬হাজার বাক্সকচু রোপন করেছি। মে মাসের মাঝা মাঝি থেকে বিক্রয় করছি।
বাক্সকচু চাষী মনির, এসাহাক, আশরাফ বলেন, সাধারণত নিচু এলাকা, যেখানে বানের পানি জমতে পারে, সেখানে বাক্সকচু চাষ করা হয়। বানের পানিতে এ ফসলের কোনো ক্ষতি হয় না। বরং পানিতে বাক্সকচু ভালোভাবে বেড়ে উঠে। হাট-বাজারে এ কচুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে ১টি কচু ১৫টাকা থেকে শুরু করে ৩৫টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
একই গ্রামের চাষী মহির বলেন, ১বিঘা জমিতে ৪হাজার ৫শত থেকে ৫হাজার পর্যন্ত বাক্সকচুর চারা রোপণ করা যায়। প্রায় সবগুলো চারাগাছ থেকেই ফলন পাওয়া যায়। প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসের মাঝা মাঝি সময়ে বাক্সকচুর চারা রোপণ করতে হয়। আর ফলন আসে মে, জুন ও জুলাই এবং আগস্ট মাস জুড়ে। ১বিঘা জমিতে বাক্সকচু চাষ করতে খরচ হয় ১০হাজার থেকে ১২হাজার টাকা। বিক্রি হয় ৪০হাজার থেকে ৫০হাজার টাকা।
এ ফসল দীর্ঘ মেয়াদী হওয়ায় খুব কম কৃষকই বাক্সকচু চাষ করেন। যারা চাষ করেন তারাও কম পরিমাণ জমিতে চাষ করে থাকেন জানিয়ে তিনি বলেন, বাক্সকচু চাষে পরিবারের সবজির চাহিদাও মেটে আর এর সঙ্গে মোটামুটি ভালো আয়ও আসে।
লালমনিরহাট জেলায় ১শত ৫০হেক্টর জমিতে বাক্সকচু চাষ হয়েছে মর্মে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
বাক্সকচু চাষ লাভজনক হলেও দীর্ঘ মেয়াদী হওয়ায় অনেক কৃষক তেমন আগ্রহ দেখান না। সাধারণ নিচু জমি, যেখানে পানি জমতে পারে ও অন্য ফসলের ফলন তেমন হয় না, সেখানে এ ফসলের চাষ করছেন কৃষকরা।
তবে ফলন ভালো হলে কৃষকরা বাক্সকচু থেকে যে পরিমাণে আয় করতে পারেন, একই সময়ে অন্য ফসল থেকে সে পরিমাণে আয় আসে না বলেও শোনা যায় কৃষকের মুখ থেকে।
হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাক্সকচুর চাহিদা ও দামও বেশি, বাক্সকচুর তরকারি পুষ্টিকর ও খেতে ভালো লাগার কারণে এর চাহিদা বেশি বলে জানান অনেক ক্রেতারা।