আলোর মনি রিপোর্ট, লালমনিরহাট:
লালমনিরহাট জেলার হাট ও বাজারগুলোতে অধিকাংশ কৃষি পণ্য বিক্রির দোকানে ভেজাল বীজ ও সার বিক্রি হচ্ছে। কৃষকরা ওই সব ভেজাল ও নকল বীজ-সার ক্রয় করে একদিকে যেমন প্রতারিত হচ্ছে। অন্যদিকে বিভিন্ন ফসলের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশংকাও দেখা দিয়েছে। ওই ভেজাল বীজ ও সার বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন অভিযান শুরু করলেও তেমন সফলতা আসছে না।
জানা গেছে, ভূট্টার পর ইরি-বোরো মৌসুমকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ভেজাল ও নকল বীজ-সার ব্যবসার সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। ওই সিন্ডিকেট কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় স্বর্ণা নামে ভারতীয় একটি ধান বীজের নামে দেশীয় বিভিন্ন ধান বীজ বিক্রি করে প্রতারণা করে আসছে। অথচ স্বর্ণা নামে বাংলাদেশে কোন ধান নেই। ওই সিন্ডিকেট ভারতীয় ধান বীজ প্যাকেটের আদলে নকল প্যাকেট তৈরি করে বাজার থেকে ধান ক্রয় করে প্যাকেটজাত করে বাজারে বিক্রি করছে।
গত ২দিনে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল আমিন বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভেজাল ধান বীজ উদ্ধারসহ জন বীজ ব্যবসায়ীর ১লক্ষ টাকা জরিমানা করেন। ভেজাল বীজ বিক্রয়কারী ডিলারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। কিন্তু তারপরও তেমন সফলতা আসছে না। গোটা লালমনিরহাট জেলায় বিভিন্ন বীজের দোকানে এখনো ভেজাল ও নকল বীজ সার বিক্রি হচ্ছে। যা ক্রয় করে কৃষকরা প্রতারিত হচ্ছে।
কৃষকরা সাংবাদিকদের জানান, সরকার স্বল্প মূল্যে সার-বীজ দেয়ার পাশাপাশি কৃষি প্রণোদনা দিচ্ছেন। কিন্তু বাজারে ভেজাল ও নকল বীজ বিক্রি হওয়ায় তা ক্রয় করে কৃষকরা প্রতারিত হচ্ছে। ফলে সরকারের দেয়া কৃষি প্রণোদনার সফলতা পাচ্ছেন না কৃষকরা। তারা বলছেন, বেশি দাম হলেও যদি কৃষকরা ভালো বীজ ও সার পেয়ে থাকেন তাহলে তাদের ফসলের উৎপাদন বেড়ে যাবে। এতে আয়ও বেড়ে যাবে। কিন্তু কম দামে ভেজাল বীজ ও সার ক্রয় করে ব্যবহার করলে ফসলের উৎপাদন কমে যাবে। এতে কৃষকদের পুঁজি হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর সাংবাদিকদের বলেন, কৃষকদের সাথে বীজ ও সার নিয়ে প্রতারণা কোন ভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না। প্রশাসন ওই ভেজাল সার-বীজ চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। কেউ যদি ভেজাল বীজ ও সার বিক্রির চেষ্টা করে তাহলে তা স্থানীয় প্রশাসনকে জানাবেন।