আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের চর কুলাঘাট গ্রামের মৃত্য মফিজ উদ্দিনের ছেলে মিজানুর রহমান এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু অর্থাভাব তার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণে সংশয় নিয়ে এসেছে।
ধরলা নদী ঘেসে দুর্গম চরাঞ্চলে চর কুলাঘাট গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে মিজানুর চিকিৎসক হয়ে তার বন্যাপীড়িত এলাকার দরিদ্র মানুষদের সেবার করার স্বপ্ন দেখেন।
জানা যায়, ২০১২ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় মিজানুরের দিনমজুর বাবা মফিজ উদ্দিন মারা যান। ছয় সন্তানকে নিয়ে তার মা জোবেদা বেগম দুর্দশার মধ্যে পড়েন। ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে থাকেন। তাই একবুক আশা নিয়ে হার মানেননি তিনি; ধার-দেনা, কষ্টের উপার্জন আর শুভানুধ্যায়ীদের সহযোগিতায় ছেলের স্বপ্নকে এতদূর এগিয়ে এনেছেন তিনি। এখন অর্থাভাবে মেডিকেল কলেজে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন।
মিজানুর রহমান বলেন, আমরা ৫ভাই, ১বোন তার মধ্যে আমি সবার ছোট। আমার বাবা ৬বছর আগে মারা যায়। তারপর থেকে আমার মা আমাকে অনেক কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে ছোট থেকে মানুষ করেছেন। অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছি। এখন আমি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু এখানে পড়তে আমার অনেক টাকার প্রয়োজন। কিভাবে কি করবো বুঝতেছিনা। আমার বাবা একজন ভূমিহীন দিনমজুর ছিল। জমিজমা বলতে কিছুই ছিলনা। শুধু বাড়ির ভিটা ৮শতাংশ জমি। স্বপ্ন ছিল একজন ডাক্তার হবো, অবশেষে তাঁর স্বপ্ন পূরন হলো।
জোবেদা বেগম বলেন, মাইনসের বাড়িত কাজ করে, ঘরোত থোয়া মুষ্টির চাউল বেচে, ধারদেনা করে খুব কষ্ট করে ছওয়াটাক এতদূর নিয়ে আছচুং বাহে, মোর কিচ্ছু নাই। মোর ছাওয়াটাকে সবাই মিলে সাহায্য করে তার স্বপ্ন পূরণ করেন তোমরা।
এলাকাবাসী বলেন, ছেলেটা ছোট থেকে খুব চড়াই উৎরাই পেরিয়ে এতোদুর এসেছে। সবাই মিলে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে তার আশা পুরন হবে।
কুলাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী বলেন, মিজানুর রহমান মেডিকেল ভর্তির সুযোগ পেয়েছে শুনে খুব ভাল লাগলো। সে আমাদের এলাকার গর্ব আমি তাঁর লেখাপড়ার জন্য আমার ব্যক্তিগত ও ইউনিয়ন পরিষদের তহবিল থেকে সার্বিক সহযোগিতা করবো।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন বলেন, মিজানুর রহমান মেডিকেলে ভর্তির কথা শুনে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে দেখতে এসে নগদ ১০হাজার টাকা প্রদান করি। তাঁকে পড়াশোনার জন্য পরামর্শ দেই এবং ভবিষ্যৎ তাঁকে আরও সহযোগিতা করা হবে।