আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: রাস্তার উপর ধূ ধূ বালুকণা রোদে চিকচিক করছে, আর চারপাশে খা খা পরিবেশ। লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের ওয়াপদার বাঁধ (পানি উন্নয়ন বোর্ড)র রাস্তা ধরে সোনাতলা থেকে সোজা পূর্বদিকে চর বুদারু’র দিকে চলন্ত পথে। হঠাৎ চোখে পড়লো একটি সাইনবোর্ড। সাইনবোর্ডটি দেখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকতে হলো। বড় বড় অক্ষরে লেখাগুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে পাশের কয়েকটি টিনের চালা বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে ঘেরা ছোট ঘরটি দেখে যেন ঢেঁকুস আটকে গেলো। সরকারি ওয়াপদার ধারে রাস্তার এই ঘরটিতে বসবাস করে একটি বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবার!
বড়বাড়ী ইউনিয়নের খেদাবাগ গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারটি খুব অবহেলায় জীবন অতিবাহিত করে আসছে। বড় বড় অক্ষরে লেখা গুলো মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী (ভূমিহীন)।
জানতে চাইলে বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী-এঁর স্ত্রী মোছাঃ খচিরন বেওয়া (৭৫) জানান, আমার স্বামী ২০১৬ সালে মৃত্যু বরন করেন। ৩ছেলে, ২মেয়ে, নাতি-নাতনি নিয়ে ওয়াপদার বাঁধের রাস্তার ধারে অসহায় ভাবে বসবাস করে আসছি। আমাদের কোন জমি জমা নেই। সরকার যাতে আমাদের দিকে একটু সুদৃষ্টি দেন।
তাঁর ছেলে আব্দুল খালেক (৫৫) কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটে আমাদের। খুব কষ্ট করে ৫ভাই-বোনদের মানুষ করেছেন। শুনতেছি সরকার মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীনদের বাড়ি করে দিচ্ছে আমাদের দিকে একটু দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বেচে থাকতে পারি।
তাঁর ছোট ছেলে বাবুল (৪০) বলেন, আমাদের মতো অভাবী আর দুটো পরিবার খুঁজে পাওয়া যাবেনা। নিঃস্ব হয়ে ওয়াপদার বাঁধে এসে ঘর তুলে ৮-১০বছর ধরে বসবাস করছি।
তাঁর মেয়ে দুলালী বেগম বলেন, থাকার কোন স্থান নাই, কোন রকম খেয়ে না খেয়ে দিন কাটে। আর এদিকে তেমন কাজও নাই যে, ঠিক মতো কর্ম করে সংসার চালাতে পারবো।
বড়বাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব ইয়াসিন আলী মোল্লা বলেন, যারা তালিকা করেন তাদেরকে বহু আগ থেকে পরিবারটির বিষয়ে বলে আসছি। কেন যে পরিবারটি মাথা গোজার ঠাই পাচ্ছে না তা আমি জানি না। তবে, এই তালিকার সাথে আমার কোন হাত নেই। সাংবাদিকরা পরিবারটির খোঁজ খবর নিচ্ছেন জেনে আমারও ভালো লাগলো।