আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: আমাদের এই বাংলাদেশে মিষ্টি কুমড়া বারো মাসই পাওয়া যায়। মিষ্টি কুমড়া জনপ্রিয় ও সুস্বাদু একটি সবজি। মিষ্টি কুমড়ার শুধু কুমড়া নয় এর ডগাও খুবই পুষ্টিকর সবজি। কচি মিষ্টি কুমড়া সবজি হিসেবে এবং পাকা ফল দীর্ঘদিন রেখে সবজি হিসেবে খাওয়া যায়।
মিষ্টি কুমড়া তরকারি বা পণ্য হিসেবেও ব্যবসায়িক মূল্য রয়েছে। তাই মিষ্টি কুমড়া চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে লালমনিরহাটের চাষীদের। লালমনিরহাট জেলার ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে মিষ্টি কুমড়ার গাছ। কৃষকের নিপুণ হাতে লাগানো কুমড়া গাছের সবুজ লতানো গাছ মাঠের মাটির উপর বিছানার মতো ছড়িয়ে আছে। কম খরচে অধিক ফলন পাওয়ায় এবং লাভজনক ফসল হিসেবে পরিগণিত হওয়ায় মিষ্টি কুমড়া চাষে জনপ্রিয়তা বাড়ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
এ ব্যাপারে কথা হয় লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কোদালখাতা গ্রামের এক চাষীর সাথে। তিনি জানান, প্রথমে এমনিই মিষ্টি কুমড়া চাষ করতাম। পরে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করার চিন্তা মাথায় আসায় প্রথমে অল্প করে চাষ শুরু করি। বর্তমানে নিজের জমি ১ একর জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করছি।
তিনি বলেন, এ বছর মিষ্টি কুমড়া চাষে তার মোট খরচ হয়েছে প্রায় ১৫হাজার টাকা। আর উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া প্রায় ৪০হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
কি পদ্ধতিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করা হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাটি গর্ত করে গবর দিয়ে মিষ্টি কুমড়ার উন্নত জাতের বীজ রোপণ করি। তারপর নিয়মিত পরিচর্যা করি। এছাড়া তেমন কোনো খরচ নেই। তবে পোকামাকড় থেকে কচি মিষ্টি কুমড়া নিরাপদে রাখার জন্যে নিয়ম মেনে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়।
কৃষি কর্মকর্তার সহযোগিতা পাওয়া যায় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে আসেন এবং পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
জানা যায়, এ মৌসুমে কৃষকরা অল্প বিনিয়োগ করে অধিক মুনাফা পায় বলেই মিষ্টি কুমড়া চাষে আগ্রহ বাড়ছে লালমনিরহাটের চাষীদের।
কৃষকরা আরও জানান, উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে তা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। বিশেষ করে পাইকারদের মাধ্যমেই তা দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হয়। তবে লালমনিরহাটের মিষ্টি কুমড়া সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় বিভিন্ন হাট-বাজারে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পেলে এর বাজার আরও সম্প্রসারণ হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এখানকার চাষীরা দিন দিন মিষ্টি কুমড়া চাষে আগ্রহ বাড়ছে। ব্যাপক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এ সবজিটি কৃষকদের জন্যে আরও লাভজনক করতে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সবধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখছেন বলে জানা গেছে।