মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ, লালমনিরহাট:
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট এ জেলায় রয়েছে বহু ঐতিহাসিক নিদর্শন। এসব নিদর্শনের মধ্যে একটি হলো লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডারের জমিদার বাড়িটি আজও কালের সাক্ষী হয়ে নীরবে দাঁড়িয়ে রয়েছে যা মানুষের দৃষ্টি কেড়েছে।
জানা গেছে, তুষভান্ডার জমিদার বংশের গোড়াপত্তন ঘটে ১৬৩৪ সালে। এই বংশের পূর্বপুরুষ মুরারিদেব ঘোষাল ভট্টাচার্য ২৪ পরগনা জেলার অধিবাসী। মুরারিদেব ‘রসিক রায় বিগ্রহ’ নিয়ে কোচ মহারাজা প্রাণ নারায়নের রাজত্বকালে কোচবিহারে আগমন করেন এবং মহারাণী কর্তৃক একটি ‘উপঞ্চৌকি তালুক’ প্রাপ্ত হয়ে উত্তর ঘনেশ্যাম গ্রামে বসতি স্থাপন করেন এবং রসিক রায় বিগ্রহের পুজা শুরু করেন। উপঞ্চৌকি হল সেই সময়ে রঙ্গপুর অঞ্চলে প্রচলিত একটি প্রথা যা’দ্বারা মহারাজাগণ হিন্দু এবং মুসলিম উভয় ধর্মীয় কার্যাদী পালনের জন্য প্রজাদেরকে একটি করে তালুক (ভূখন্ড) দান করতেন। এভাবেই মুরারিদেব এ অঞ্চলের ছোটখাতা, বামুনিয়া ও শেখ সুন্দর মৌজা লাভ করেন। প্রতিষ্ঠা লাভ করে তুষভান্ডার জমিদারী। মুরারিদেব ব্রাহ্মণ ছিলেন জন্য শুদ্র কোচবিহার রাজার দান গ্রহনে আপত্তি জানিয়ে খাজনা গ্রহণের জন্য মহারাণীকে অনুরোধ জানান। মহারানীও ব্রাহ্মণের কাছ থেকে খাজনা নেওয়ার পরিবর্তে ‘তুষ’ (ধানের কুড়া) গ্রহণে সম্মতি জানান। এই তুষ দিয়ে কোচবিহার মহারাণী রাজবাড়ীতে যজ্ঞাদি ক্রিয়া সম্পাদন করতেন। মুরারিদেব কর্তৃক কোচ রাজাকে তুষ প্রদানের জন্য এগুলো সংরক্ষণ করা হত বর্তমান জমিদার বাড়ির পূর্ব দিকে। খাজনা প্রদানের জন্য সংরক্ষিত এই তুষের স্তুপ থেকেই এলাকাটির নাম সেই থেকেই তুষভান্ডার হয়েছে বলে ইতিহাসবিদরা জানায়। বর্তমানে এই জমিদার বাড়ি দেখার জন্য বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দর্শনার্থীরা দেখর জন্য আসে। তাই মানুষের দৃষ্টি কেড়েছে ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম মানিক
সম্পাদক : মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ
প্রকাশক : মোঃ রমজান আলী
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হেলাল হোসেন কবির
Copyright © 2024 আলোর মনি. All rights reserved.