মিজানুর রহমান, প্রতিনিধি (হাতীবান্ধা) লালমনিরহাট: ‘হামাক খুবই ভালো লাইগবার নাইগছে। হামরা বিল্ডিং ঘরোত থাইকবার পামো। এইল্যা হামরা কোনদিনও স্বপনোত ভাবোং নাই। আল্লাহ হামার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালো কইরবে।’
এভাবে কথাগুলো বলছিলেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া ইউনিয়নে মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার জমি ও পাকা ঘরপ্রাপ্ত সুবিধাভোগী ফরিউল ইসলাম।
শুধু ফরিউল ইসলাম নয়, তার মতো ওই উপজেলায় জমি ও পাকা ঘর পাচ্ছে ৪২৫ গৃহহীন পরিবার।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে ওই উপজেলায় ৪২৫টি ঘর প্রস্তুত করা হচ্ছে ৪২৫ গৃহহীন পরিবারের জন্য। শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গৃহহীনদের কাছে এসব ঘর হস্তান্তর করবেন। সরকারের দেয়া পাকা ঘরে বসবাস করতে পারবেন ভেবে ভীষণ আনন্দিত ভূমিহীন মানুষেরা।
জেলার ৫ উপজেলায় সরকারি খাস জমিতে ৯৭৮টি পাকা ঘর তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে। সরকারের নকশা অনুযায়ী কাজের মান ঠিক রেখেই এসব ঘর তৈরি করা হচ্ছে বলে জানান লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর।
বিভিন্ন জনের দখলে থাকা সরকারি খাস জমি উদ্ধার করে সেখানে ভূমিহীন পরিবারগুলোর জন্যে তৈরি করা হচ্ছে পাকা ঘর। মুজিববর্ষ উপলক্ষে শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের কাছে তুলে দেয়া হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ উপহার।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার আমঝোল গ্রামের বিধবা হাজরা বেগম, শিশু বালা ও প্রতিবন্ধী মমিনুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া উপহার এই পাকা ঘর। আমি মহাখুশি। এক সময় আমাদের মাথা গুঁজবার স্থান ছিলো না। এখন আমরা জমির মালিক হয়েছি। পাকা ঘর পাবো।
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল আমিন বলেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া উপহার ঘরগুলোর তৈরির কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এগুলো ভূমিহীন পরিবারগুলোর কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলার পাঁচ উপজেলায় ৯৭৮টি ঘর তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে। সদর উপজেলায় ১৫০টি, আদিতমারীতে ১৩০টি, কালীগঞ্জে ১৫০টি, হাতীবান্ধায় ৪২৫টি ও পাটগ্রামে ১২৩টি ঘর তৈরি করা হচ্ছে। ৩৯৪ বর্গ ফুটের প্রতিটি ঘর তৈরিতে খরচ হচ্ছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, সারা জেলায় জরিপ চালিয়ে ‘ক’ শ্রেণির ৫ হাজার ৮১৩টি ভূমিহীন পরিবারের তালিকা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ৯৭৮টি পরিবার পাচ্ছেন সরকারি পাকা ঘর। বাকি পরিবারগুলোকেও পর্যায়ক্রমে সরকারি ঘর দেয়া হবে। সরকারের নকশা অনুযায়ী কাজের মান ঠিক রেখেই এসব ঘর তৈরি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।