আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: বর্ষা ও বন্যায় শুকনো খড় (পোয়াল) পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় লালমনিরহাটে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এর ফলে গবাদি পশু নিয়ে খামারিরা পড়েছেন বিপাকে।
জানা যায়, তিস্তা, ধরলা ও রত্নাই নদী বিধৌত লালমনিরহাট জেলার ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়ন ও ২টি (লালমনিরহাট, পপাটগ্রাম) পৌরসভার প্রায় প্রতিটি পরিবার গবাদী পশু পালন করে জীবিকা করেন। অনেকেই গবাদি পশুর ছোট-বড় খামার গড়ে তুলেছেন। এসব পশুর খাদ্যের জন্য ধান মাড়াই শেষে ধানগাছ শুকিয়ে খড়ের গাদা করে মজুদ রাখেন, যা সারা বছর গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
চলতি বছর জুন মাসের শেষ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারী বর্ষণ ও কয়েক দফায় বন্যায় চাষিদের খড়ের গাদা পানিতে ডুবে পচে নষ্ট হয়েছে। এর ফলে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় সব পরিবারের সঞ্চিত খড় নষ্ট হওয়ায় গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
এদিকে গো-খাদ্য হিসেবে খড়ের চাহিদা বাড়ায় জেলার বিভিন্ন বাজারে মৌসুমী কয়েকজন ব্যবসায়ী খড় বিক্রি শুরু করেছেন।
তারা পাশ্ববর্তী জেলার উঁচু অঞ্চল থেকে খড়ের গাদা কিনে ছোট ছোট পুঁটলি তৈরি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন। কম পুঁজির খামারি বা কৃষকরা এসব পুঁটলি কিনে সামান্য পরিমাণে খাবার হিসেবে দিয়ে গরুগুলোকে কোনো রকমে বাঁচিয়ে রাখছেন। বয়স্ক একটি গরুর জন্য দৈনিক খড় লাগে প্রায় ১শত টাকার এবং দানাদার খাদ্যে ব্যয় হয় আরও ১শত টাকা। সবমিলে গরু প্রতি দৈনিক ২শত টাকা খরচ হচ্ছে। তবে সংকটের কারণে পরিমাণ মতো খাদ্য না পেয়ে অনেক গরুগুলো হাড্ডিসার হয়ে গেছে। ফলে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন খামারিরা। কিছুদিন আগে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া লাম্পিং স্কিন রোগের চিকিৎসা করতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন খামারিরা। এরই মধ্যে খাদ্যের সংকটে পড়ে তারা আরও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
অন্যদিকে ভুষি, চালের গুড়াসহ বিভিন্ন দানাদার গো-খাদ্যের দামও লাগামহীন ভাবে বেড়ে চলেছে। প্রতি বস্তা ভুষি ১২/১৩শত টাকা থেকে বেড়ে ১৭/১৮শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধানের গুঁড়া (৫০ কেজি) প্রতি বস্তা ৪শত টাকা থেকে বেড়ে ৫শত টাকা বিক্রি হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগ অভিযান চালিয়েও তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না বলে খামারিদের অভিযোগ।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইদুর রহমান জানান, ঘন ঘন বৃষ্টি ও বন্যার কারণে খামারিদের সঞ্চিত খড়ের গাদা পচে নষ্ট হওয়ায় গরুর শুকনো খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগের সরবরাহ করা চারায় লাগানো কাঁচা ঘাস ও মাঠের আইল থেকে কাঁচা ঘাস সংগ্রহ করতে খামারিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। দানাদার খাদ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে গো-খাদ্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করার পাশাপাশি বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। কেউ অহেতুক খাদ্যের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আমন ধান ঘরে আসলেই এ সংকট কেটে যাবে।
উল্লেখ্য যে, আমন ধানের প্রতি আটি ৮টাকা করে বিক্রয় হচ্ছে। তবুও চাহিদা অনুপাতে পাওয়া যাচ্ছেনা।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম মানিক
সম্পাদক : মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ
প্রকাশক : মোঃ রমজান আলী
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হেলাল হোসেন কবির
Copyright © 2024 আলোর মনি. All rights reserved.