আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: লালমনিরহাটে অতি মুনাফা পাওয়ার লোভে বিভিন্ন খাবারে ব্যবহার করা হচ্ছে মানব দেহের ক্ষতিকর নিষিদ্ধ হাইড্রোজ বা ইউরিয়া। যার রাসায়নিক নাম সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইড। যা গার্মেন্টস্ শিল্পে কাপড়ের রং সাদা করতে ব্যবহার করা হয়। আর এ উপাদান খাদ্য সাদা বা পরিস্কার করতে এখন খাবারে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে খাদ্য হচ্ছে বিষাক্ত।
লালমনিরহাট জেলার অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা খাদ্য সাদা করতে এ হাইড্রোজ হর হামেশাই ব্যবহার করে আসছে। মুড়ি, আখ ক্ষেতের মাড়াই করা গুড়, জিলাপী তৈরীতে, মিষ্টি, মিছরি ও বেকারী সামগ্রী তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে এই ক্ষতিকর নিষিদ্ধ হাইড্রোজ।
মুড়ি তৈরী করতে হলে ধান দুইবার সিদ্ধ করতে হয়। আর ২ বার সিদ্ধ করা ধানের চাল সাধারণত লালচে রংয়ের হয়ে থাকে। এ চাল থেকে তৈরী করা মুড়ির রং লালচে হবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু অতি মুনাফালোভী মুড়ি ব্যবসায়ীরা মুড়িকে ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য ব্যবহার করছে হাইড্রোজ বা ইউরিয়া। ফলে মুড়ির রং হচ্ছে ধব ধবে সাদা।
আখ ক্ষেতে আখ মাড়াই করে কড়াই ভর্তি রস জ্বাল দিয়ে যে গুড় তৈরী হয় তার রং সাধারণতঃ লালচে এবং খানিকটা কালো রং এর হয়। কিন্তু লালচে ও কালো রং গুড়কে সাদা করতে ব্যবহার করা হচ্ছে হাইড্রোজ। ফলে তৈরী হচ্ছে সাদা ধবধবে আখের গুড়। মিষ্টি দ্রব্য জিলাপীর জন্য তৈরী খামির জমতে বেশ সময় লাগে। কিন্তু দোকানদাররা অল্প সময়ে জিলাপী বানাতে জিলাপীর খামিরে হাইড্রোজ মেশায়। এতে একদিকে যেমন সময় কম লাগে অপরদিকে জিলাপী সাদা ধব ধবে রং ধারন করে। মিষ্টি/ গোল্লা তেলে ভেজে হাইড্রোজ মিশ্রিত চিনির সিরায় ছেড়ে দিলে তা ধবধবে সাদা হয়। তাল মিছরি নামে সাদা ধবধবে এক ধরনের চিনির তৈরী মিষ্টি দ্রব্য দোকানে পাওয়া যায়। আর এই মিছরি সাদা করতে ব্যবহার করা হয় হাইড্রোজ। এছাড়া হাট-বাজার ও বিভিন্ন মেলায় পাওয়া যায় মিছরির তৈরী হাতী, ঘোরা এবং সাদা ধব ধবে কদমসহ অন্যান্য মিষ্টি সামগ্রী। এগুলো মিষ্টি খাদ্য সাদা ও পরিস্কার দেখার জন্য ব্যবহার করা হয় প্রচুর পরিমাণে হাইড্রোজ। বেকারী মালিকরা হরেক রকমের সাদা বিস্কুট তৈরী করতে ব্যবহার করে ক্ষতিকর হাইড্রোজ। ময়দার তৈরী বিস্কুট সাদা না হওয়ায় তারা অতি মাত্রায় এই হাইড্রোজ ব্যবহার করে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ল্যাবরেটরীতে এসব খাদ্য পরীক্ষা করলে অবশ্যই হাইড্রোজের অস্তিত্ব পাওয়া যাবে বলে অনেকেই দাবী করছেন। উল্লেখ্য যে, লালমনিরহাট জেলার ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়ন ও ২টি (লালমনিরহাট, পাটগ্রাম) পৌরসভার বিভিন্ন দোকানে এ চিত্র হর হামেশাই দেখতে পাওয়া যায়।