মোয়াজ্জেম হোসেন, লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে ভাগিনার (স্বামী) সহায়তায় ভাগ্নি বউকে ধর্ষণের মামলায় ধৃত লম্পট মামা শ্বশুর মোঃ আক্তার হোসেন খন্দকারকে (৩৮) নামে এক রেস্টেুরেন্ট ব্যবসায়ীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। একই মামলায় লম্পট খন্দকারের ভাগিনা ও বাদীর স্বামী মোঃ আতিয়ার রহমানকেও (৩০) কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার বিকালে তাদের লালমনিরহাট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
রবিবার রাতে ওই ঘটনায় পাটগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করা হলে ধৃত আক্তার হোসেন খন্দকার ও আতিয়ার রহমানকে সোমবার বিকালে লালমনিরহাট আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ৮ সেপ্টেম্বর বুড়িমারীতে ধর্ষণের ঘটনায় ১৩ সেপ্টেম্বর পাটগ্রাম থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় মামা-ভাগ্নেকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মোঃ আক্তার হোসেন খন্দকার জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গোড্ডিমারী ইউনিয়নের মধ্যগোড্ডিমারী এলাকার মৃত- নেহার উদ্দিন খন্দকারের ছেলে এবং আতিয়ার রহমান একই উপজেলার বড়খাতা মিলনবাজার এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে।
পাটগ্রাম থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ শামছুল হক বলেন, গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে ওই নারীকে ধর্ষণ করে তার মামা শ্বশুর আক্তার হোসেন খন্দকার। এই ঘটনায় ওই নারী তার স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণে মামা শ্বশুরকে সহযোগিতা করার অভিযোগ দিয়েছে। এজাহার নামীয় দুই আসামীকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সোমবার বিকালে লালমনিরহাট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরজিনা বেগমের সাথে কথা বলে ও মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর আরজিনা বেগমের স্বামী আতিয়ার রহমান বুড়িমারী ইউনিয়নের উফারমারা (বাঁশকল) এলাকায় তার মামার ‘খন্দকার রেস্টুরেন্ট’-এ বাবুর্চির কাজ নেন। পরদিন ৮ সেপ্টেম্বর আতিয়ার রহমান তার স্ত্রী আরজিনা বেগমকে মোবাইলে ডেকে নিয়ে আসে। ওই রাতে আরজিনা বেগমকে তার মামার ভাড়া বাসায় একা রাখেন। ওই রাতে আরজিনার মামা শ্বশুর আক্তার হোসেন খন্দকার বাসায় ফিরে এবং তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরদিন ৯ সেপ্টেম্বর দুপুর পর্যন্ত ওই বাড়ীতে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে আটকে রাখা হয়। পরে আরজিনা বেগমের স্বামী বাইরে থেকে পরোটা দিতে যায়। আরজিনা স্বামীকে দেখে প্রাচীর টপকে বাইরে চলে আসে। এরপর আরজিনা বাবার বাড়ীতে গিয়ে পরিবারের লোকজন ও স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারকে বিচার দিলে তারা কোনো বিচার না করায় ফের বুড়িমারীতে গিয়ে খন্দকার রেস্টুরেন্টে গিয়ে চিৎকার-চেচামেচি করলে স্থানীয় লোকজন তাদের আটক করে স্থানীয় বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদে হস্তান্তর করে। পরে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা পাটগ্রাম থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায় এবং আরজিনার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়।
পাটগ্রাম থানার ওসি সুমন কুমার মোহন্ত বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বাদী ও আসামীদের উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। এরপর আরজিনা বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১)/৩০ এর ধারায় মামলা রুজু করা হয়। আসামীদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
উল্লেখ্য যে, ২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর আতিয়ার রহমান ও আরজিনা বেগমের বিয়ে হয়। দীর্ঘদিন ধরে আক্তার হোসেন খন্দকার বুড়িমারী ইউনিয়নের উফারমারা (বাঁশকল) এলাকায় রেষ্টুরেন্ট ব্যবসা করে আসছিলেন।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম মানিক
সম্পাদক : মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ
প্রকাশক : মোঃ রমজান আলী
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হেলাল হোসেন কবির
Copyright © 2024 আলোর মনি. All rights reserved.