হেলাল হোসেন কবির: গত ৩ আগস্ট রাতে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ব্যাখ্যা দিয়ে এক স্ট্যাটাসে লালমনিরহাট থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক আলোর মনিসহ অপর দুটি গণ্যমাধ্যমের নাম উল্লেখ্য করা হলেও একটি ইংরেজী দৈনিক ও বাংলা দৈনিকের অনলাইন ভার্সনে এতদঃ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ হলেও রহস্যজনক কারনে সেগুলোর নাম উল্লেখ করা হয়নি। যা নির্দ্দিষ্ট তিন সংবাদ মাধ্যমের ওপর ব্যক্তিগত সংক্ষুদ্ধতা প্রকাশ ছাড়া আর কিছু নয়। ‘লালমনিরহাট পুলিশ’ নামের ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাসে বলা হয়েছে- ৩০ জুলাই ২০২০ তারিখে লালমনিরহাট হতে প্রকাশিত সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকায় “আদিতমারী এখন মাদকে সয়লাব”। স্ট্যাটাসে আরও বলা হয়- ‘প্রচারিত সংবাদগুলো ভাইরাল করা হয়েছে’! যার প্রেক্ষিতে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে হতাশাবোধ সৃষ্টির আশংকা রয়েছে।
উক্ত স্ট্যাটাসের উল্লেখিত গণমাধ্যমের প্রতিবেদকরা শুধু সংবাদকর্মী নন, আমরা সকলেই এ জেলার নাগরিকও। সুতরাং মাদকের কথা বলে পুলিশের সাথে আমাদের দুরত্ব সৃষ্টি করা লক্ষ্য নয়।বরং কোন ভাবেই যেন আমাদের প্রিয় জেলায় মাদকের বিস্তার লাভ করতে না পারে আর অসাধু পুলিশ সদস্যরা লালমনিরহাটবাসীর সেবার নাম করে ধ্বংসের মুখে ফেলতে না পারে সেদিক থেকে আমরা প্রকৃত চিত্র গণমাধ্যমে উপস্থাপন করছি। মাদকের দুষ্টচক্র ভাঙ্গতে পুলিশের সাথে আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা আছে এবং থাকবে।
লালমনিরহাট পুলিশ যাচাই না করেই আলোর মনি পত্রিকায় প্রকাশের কথা স্ট্যাটাসে উল্লেখ্য করেন। সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকায় নয় বরং ৩০ জুলাই ২০২০ তারিখে আলোর মনি অনলাইন ভার্সনের সংবাদটি ছিলো “আদিতমারী এখন মাদকে সয়লাব”। আসলে পত্রিকায় সংবাদটি আদোও প্রকাশ হয়নি। পত্রিকা আর অনলাইন একদম আলাদা।
আর উক্ত প্রতিবেদনে আদিতমারী থানার অন্তরভূক্ত যেসব এলাকায় মাদকে সয়লাবের বিষয়ে তথ্য দেওয়া আছে। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে যুব সমাজ কিছুটা রক্ষা পাবে বলে মনে করি।
দয়া করে একটু ভাববেন যে, ‘জেলা পুলিশ লালমনিরহাট’ ও ‘লালমনিরহাট পুলিশ’ নামের ফেসবুক আইডি (একটি পেজ ও একটি আইডি) থেকে এমন স্ট্যাটাসে মূলধারার সংবাদমাধ্যম ও প্রতিবেদকের জন্য কতটা নেতিবাচক ও হুমকির মুখে ফেলেছেন? যা প্রতিবেদকের সার্বিক নিরাপত্তা হুমকিতে জীবন চলমান! কেননা, ‘উক্ত প্রতিবেদন তিনটি’ মাদক সেবী, মাদক কারবারী, পৃষ্ঠপোষক ও তাদের নিকট সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে প্রচারিত হয়েছে। ফলে সংঘবদ্ধ একটি অসাধু চক্র সুযোগ নিতে পারে বলে আমরা আশঙ্কায় রয়েছি।
লালমনিরহাট জেলায় মাদকের ভয়াবহতা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করলে যদি পুলিশ সদস্যের মনোবল নষ্ট হয়- তাহলে সেটি হাস্যকর ও দুঃখজনক ছাড়া কিছু নয়। মূলধারার গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরাই প্রধান উদ্দেশ্য বলে প্রতীয়মান হয় উক্ত প্রতিবেদকদের।
এদিকে গত ৩ আগস্ট রাতে লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিলেও আজ (৪ আগস্ট) সকাল ১০টায় লালমনিরহাট পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হলরুমে আদিতমারী থানার মামলা নং ২৯ ধারা ৩০২/২০১/৩৪ তারিখ ২৮/০৭/২০২০ সংক্রান্তের প্রধান ২আসামী গ্রেফতারের বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং হয়। সেই প্রেস ব্রিফিং এ লালমনিরহাট জেলা পুলিশ সুপার এর স্ট্যাটাস বিষয়ে কোন ধরনের আলোচনা হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ২৮ জুলাই দৈনিক আজকালের খবর পত্রিকায় লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি আশিকুর রহমান ডিফেন্স এর ‘ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ও ৩০ জুলাই আলোর মনি অনলাইন ভার্সনের আমার একটি প্রতিবেদন “আদিতমারী এখন মাদকে সয়লাব” এবং ৩১ জুলাই ডিবিসি নিউজ টিভি চ্যানেলে লালমনিরহাট প্রতিবেদক মাজেদ মাসুদের ‘লালমনিরহাটের আদিতমারী এবং কালীগঞ্জ এখন মাদকের স্বর্গরাজ্য’ প্রতিবেদনটি প্রচারিত হয়।
এই প্রতিবেদন তিনটি’র প্রচারিত/প্রকাশিত সংবাদ লালমনিরহাট জেলা পুলিশের দৃষ্টিগোচর হয়েছে মর্মে জেলা পুলিশ লালমনিরহাট ও লালমনিরহাট পুলিশ ফেইবুক আইডি অপ্রত্যাশিত প্রতিবাদ দিয়েছেন।