মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ, লালমনিরহাট:
লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ নিশাতের বিরুদ্ধে গার্মেন্টস কর্মী মাহমুদা বেগম মৌসুমী (২১) এর লাশ দাফনে বাধাদানের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের তদন্ত কমিটি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও লালমনিরহাট স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম গত ২৬ মে সরেজমিনে ঘটনার তদন্তে বুড়িমারী ইউনিয়নে যান এবং তদন্ত শেষে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করেন। গত ২৮ মে অভিযোগের সত্যতার প্রতিবেদন সুপারিশসহ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর সাংবাদিকদের বলেন, তদন্তে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার ২৮ মে ওই তদন্ত প্রতিবেদন সুপারিশসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, কল লিস্ট যাচাই-বাছাই পাওয়া গেছে মৃত মৌসুমীর বাবা গোলাম মোস্তফা লাশ দাফনে অনুমতির জন্য বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মোবাইলে কথা বলেছিলেন। ওই সময় চেয়ারম্যান লাশ এলাকায় দাফনে বাধা দেন।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা সাংবাদিকদের আরও বলেন, ইউডি মামলা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ ও লাশ দাফন করতে না পারার কারণ তদন্ত চলছে।
মৌসুমীর বাবা গোলাম মোস্তফা সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের কাছে আমি ন্যায় বিচার চাই।
উল্লেখ্য যে, লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের উফারমারা গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা গোলাম মোস্তফার একমাত্র মেয়ে গার্মেন্টস কর্মী মাহমুদা বেগম মৌসুমী ট্রাকে করে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে মারা যান। ৯৯৯ এ সংবাদ পেয়ে ওই ট্রাকের কেবিন থেকে মৌসুমীর লাশ উদ্ধার করে রংপুর তাজহাট থানা পুলিশ। ময়না তদন্ত শেষে বাবা গোলাম মোস্তফার কাছে ২৩ মে সন্ধ্যায় লাশ হস্তান্তর করে থানা পুলিশ। করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে এই “গুজব” ছড়িয়ে পড়ে।
এতে এলাকায় লাশ নিতে অসহযোগিতা করে স্থানীয়রা। পরে চেয়ারম্যানের নিকট ফোন করে লাশ নিতে অনুমতি চান মৌসুমীর বাবা। কিন্তু চেয়ারম্যান লাশ দাফনে বাধাসহ হুমকি দেন। উপায় না পেয়ে অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারকে ৫হাজার টাকায় লাশ দাফনের দায়িত্ব দেন বাবা গোলাম মোস্তফা। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার লাশ দাফন না করে তিস্তা নদীতে ভাসিয়ে দেন। সেই লাশ সরকারি ব্যাগে মোড়ানো অবস্থায় তিস্তা নদী থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে উদ্ধার করে আদিতমারী থানা পুলিশ।