শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাটে গাছে গাছে ব্যাপক কালো জাম ধরেছে লালমনিরহাটে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে কালবৈশাখীর ঝড়ে জমির ফসল, ঘরবাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি দুদকের গণশুনানীতে অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন লালমনিরহাটে হত্যার উদ্দেশ্যে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের লালমনিরহাটে দৃষ্টিনন্দন ফুল কচুরিপানা ফুটেছে লালমনিরহাটে আওয়ামী লীগের পাতি নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন তিস্তা সেতুর টোল প্লাজায় হামলা-ছিনতাইয়ের মামলায় ২জন গ্রেফতার লালমনিরহাটের মিথ্যা মামলাবাজ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম-এর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে কৃষ্ণচূড়া ফুলে ফুলে লাল হয়েছে
লালমনিরহাটের সফল তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মৃণাল চন্দ্র রায় (পঙ্কজ)

লালমনিরহাটের সফল তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মৃণাল চন্দ্র রায় (পঙ্কজ)

লালমনিরহাটের মৃণাল চন্দ্র রায় (পঙ্কজ) শিক্ষিত বেকার তরুণ সফল উদ্যোক্তা হিসেবে সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের খাতাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বর্তমান বয়স ৩৬বছর। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে হয়ে উঠেছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা। ইতোমধ্যে ড্রাগন ফল, আম, কমলার বাগানের পাশাপাশি (ভ্যানিলা) চাষেও সফলতা কুড়িয়েছেন। তিনি গত ৫বছর ধরে গড়ে তোলা বাগান থেকে প্রায় ১৩লক্ষ টাকারও বেশি উপার্জন করেছেন। তার সম্পূর্ণ বাগানটি রয়েছে ২একর জমি জুড়ে। পঙ্কজ ওই এলাকার স্বর্গীয় নরেশ চন্দ্র রায়ের ছেলে। মধ্যবিত্ত পরিবারের ৭ভাই বোনের মধ্যে পঙ্কজ সবার ছোট। সংসারে আর্থিক অনটনের কারণে পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাটের মীর ইসমাইল ডিগ্রী কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে চাকুরির পিছনে অনেক সময় ব্যয় করেছেন। চাকুরি না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলে কৃষি উদ্যোক্তাদের নানান প্রজেক্ট সম্পর্কে অবগত হয়ে স্বল্প পরিসরে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। এতেও যেন তার মন পরিতৃপ্ত হচ্ছিল না। এই আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ৪বছর আগে নাটোরে একদিন এক উদ্যোক্তার ড্রাগন বাগান দেখতে যান। সেখানে তিনি একটি বাগানেই হরেক রকমের ফল দেখতে পান। অস্ট্রেলিয়ান জাতের কমলা, ড্রাগন ও বেদানা বাগান দেখে আরও অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেও আবারও ব্যাপক আকারে চাষের পরিকল্পনা করেন। তাঁর নিজের ড্রাগন ফলের বাগানের আয় থেকে সঞ্চিত ২লক্ষ টাকা দিয়ে কমলা, আম ও ভ্যানিলা গাছ রোপন করেন। সাথী ফসল হিসেবে বাগানে ঠাঁই পেয়েছে বেদানা। প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ না থাকলেও অভিজ্ঞ কৃষি উদ্যোক্তাদের কাছে যেয়ে পরামর্শ ও ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন করে তার বাগানের কাজে লাগিয়েছেন। এরপর তাঁকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। চলতি মৌসুমে তিনি দ্বিগুণ লাভের স্বপ্ন দেখছেন।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, মৃণাল চন্দ্র রায়ের (পঙ্কজ) বাগানে বারোমাসি আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। রয়েছে কমলা বাগান, ড্রাগন, বেদানা, ভ্যানিলা। দেখা যায়, বাগানে বারোমাসি আমগুলোর বেশি ভাগই পেকে গেছে। ইতোমধ্যে তিনি আম বাজারজাত করা শুরু করেছেন। বাগানে প্রতিদিন ৪জন থেকে ৫জন শ্রমিক মজুরি খাটছেন। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা উৎসাহি তরুণ ও চাষিরা তার বাগান দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন ও পরামর্শ নিচ্ছেন। তবে আম ও কমলা চাষে সার ও কীটনাশকের প্রয়োজন হয়। বাজারে ভেজাল সার ও কীটনাশকের দৌরাত্ম্য ও সিন্ডিকেট দূর করার দাবি জানিয়েছেন পঙ্কজ।

 

পঙ্কজ জানায়, বাজারে বারোমাসি আম ও কমলার ব্যাপক চাহিদা থাকায় বিক্রি করা নিয়ে চিন্তা হয়নি। ইতোমধ্যে বাগানে আড়াই লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। চলতি বছর প্রতি মণ আম ৮হাজার থেকে ১১হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে ৫লাখ টাকার আম ও কমলা বিক্রির আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

 

তিনি আরও জানান, আগামীতে ২-৩বিঘা জমিতে ভ্যানিলা বাগান সম্প্রসারণের পরিকল্পনাও রয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে নিজে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি অত্র এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।

 

লালমনিরহাট সদর উপজেলা কৃষি অফিসার খন্দকার সোহায়েল আহমেদ জানান, উদ্যোক্তা পঙ্কজের ড্রাগন ফলের বাগানসহ অন্যান্য ফলের বাগানগুলো আমরা সরেজমিনে দেখে কার্যকারী পরামর্শ দিয়েছি।

 

তিনি আরও বলেন, পঙ্কজের মতো তরুন উদ্যোক্তাদের আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। প্রত্যেকটি এলাকায় যদি এরকম উদ্যোক্তা তৈরি হয় তাহলে বেকারত্ব যেমন দূর হবে সেই সাথে কৃষি ক্ষেত্রেও তা সফলতা বয়ে আনবে।

 

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোঃ সাইখুল আরিফিন জানান, পঙ্কজ একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তিনি সমগ্র জেলার কৃষকদের জন্য উদাহরণ স্বরুপ। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, যে কেউ বাণিজ্যিকভাবে কৃষিকাজ করেও সফলতা অর্জন করতে পারে। অন্যদিকে এই অঞ্চলের কৃষকদের জন্যও তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাকে দেখে অনেক নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে এ অঞ্চলে। এটি ইতিবাচক কৃষির উদাহরণ বহন করে বলেও মনে করেন এ কৃষিবিদ।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone