লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার স্টেশন এলাকা এবং আশেপাশের রেলভূমি হতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে রেলওয়ে ল্যান্ডস্ এন্ড বিল্ডিংস্ ও বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ১০টায় বাংলাদেশ রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগের আওতাধীন লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার স্টেশন এলাকা এবং আশেপাশের বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন ভূমি হতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করেন রেলওয়ে ল্যান্ডস্ এন্ড বিল্ডিংস্ ও বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট।
জানা গেছে, সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মোঃ নুরুজ্জামান আহমেদ বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন নিম্ন তফসিলবর্ণিত মৌজা: বৈরাতী, জেএল নং: ২৯, সিএস খতিয়ান নং ১০৫৬, সিএস দাগ নং: ১১২৬/অংশ ০.৩৬ একর রেলভূমি অস্থায়ী কৃষি লাইসেন্স গ্রহণ করে লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গপূর্বক অবৈধভাবে লাইসেন্সকৃত রেলভূমিকে জলাশয়ে রুপানি করে পাকা দেয়াল দিয়ে ঘিরে বিভিন্ন স্থাপনা এবং পার্ক নির্মাণ করেছে এবং উক্ত রেলভূম ঘেরাও করে অবৈধভাবে দখলে রেখেছিল তা রেলওয়ে ল্যান্ডস এন্ড বিল্ডিংস্ ও বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট ডিভিশনাল এস্টেট অফিসের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে বুলড্রেজার দিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছে।
এ উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্বদেন রেলওয়ের বিভাগীয় সহকারী ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা (ডিউও) মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। এ সময় পুলিশ এবং আরএনবি ও আইন শৃংখলা বাহিনীর কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, বিগত ২০১৪ সালের পর সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার রেলওয়ে স্টেশনের পাশে থাকা ০.৩৬ একর একর জমি অবৈধভাবে দখলে নেয়। সেখানে তার ব্যক্তিগত অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেন। রেলওয়ে জমিতে একটি বিশাল গোডাউন, পার্ক ও অবৈধ জমিতে বৈধ করতে ধর্মীয় সেন্টিম্যান ব্যবহার করতে পাশে মসজিদ থাকা সত্বেও সেকান একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। নির্মাণ করেন লোক দেখানো আওয়ামী লীগ পার্টি অফিস। রেলওয়ে ভূসম্পত্তি বিভাগ মসজিদটি বাদে সকল অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছে।
আরও জানা গেছে, এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে ২০১৪ সাল হতে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পূর্ব পর্যন্ত সরকারি বরাদ্দ নেয়া হয়েছে। একই অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ, এমপির বরাদ্দ ও উপজেলা প্রশাসনের বরাদ্দ নিয়ে করা হয়েছে।
রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রেলওয়ের জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের শুরুতেই সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদকে চিঠি দিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি এর তোয়াক্কা করেননি।
রেলওয়ের বিভাগীয় সহকারী ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা (ডিইও) মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রেলওয়ের জায়গার ওপর গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এর আগে গত বছর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ওই জায়গায় দুইবার পরিদর্শনে করেছিলেন। কিন্তু সাবেক মন্ত্রীর প্রভাবে উচ্ছেদ অভিযান বাধাগ্রস্থ হয়।
উল্লেখ্য যে, নুরুজ্জামান আহমেদ ২০১৬ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৯ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০২৪ সালের মন্ত্রিসভায় তিনি বাদ পড়েন। তিনি ২০১৪ সাল থেকে ১৭, লালমনিরহাট-০২ (কালীগঞ্জ, আদিতমারী) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।