লালমনিরহাটের খোঁচাবাড়ী এলাকায় দিন দুপুরে অন্যের গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। কেটে সাবাড় করে দেয়া গাছের বাজার মূল্য ৪লক্ষ ৫০হাজার টাকা বলে জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্তরা।
শনিবার (২ নভেম্বর) ভোর থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত লালমনিরহাট পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড খোচাবাড়ী এলাকায় মোঃ আব্দুল জলিল (৪৬) এর জমি থেকে এসব গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবরে মোঃ আব্দুল জলিল স্বাক্ষরিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আমি ২০০৮ সালে লালমনিরহাট পৌরসভাধীন তালুক খুটামারা (খোঁচাবাড়ী) মৌজায় সোয়া সাত শতাংশ জমি ক্রয় করিয়া জমিতে অনুমান ৮০টি বনজ ও ফলজ গাছ রোপন করিয়া জমি ভোগ দখল করিয়া আসিতেছি। এমতবস্থায় আসামী ১। মোঃ আব্দুস সালাম (৪৭), ২। মোঃ আবুল কাশেম (৬৩), ৩। মোঃ আব্দুস সামাদ (৪২) সর্ব পিতাঃ মৃতঃ জাফর আলী, ৪। মোঃ শুভ (৩০), পিতাঃ মোঃ আব্দুস সালাম, ৫। মোঃ আশরাফুল (৩২), পিতা: মোঃ আবুল কাশেম, সব সাং- তালুক খুটামারা (খোঁচাবাড়ী), থানা ও জেলাঃ লালমনিরহাট গন একই সংঘবদ্ধ অপরাধী। ঘটনার দিন অর্থাৎ ০২/১১/২০২৪ইং তারিখ ভোর অনুমান ৫ঘটিকার সময় আমি পাটগ্রাম থানা এলাকায় আমার গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করাকালীন সময় বিশ্বস্থসুত্রে জানিতে পারি যে, উল্লেখিত আসামীগন সহ অজ্ঞাত নামা আরও ৭/৮জন ব্যক্তি আমার ক্রয়কৃত জমিতে অনাধিকার ভাবে প্রবেশ করিয়া জমিতে থাকা অনুমান ৮০টি বনজ ও ফলজ গাছ এর মধ্যে অনুমান ৭০টি বনজ ও ফলজ গাছ কর্তন করিয়া তাদের সঙ্গে লইয়া আসা ভ্যান গাড়িতে করিয়া চুরি করিয়া তাদের সঙ্গে লইয়া যাচ্ছে। ৭০টি বনজ ও ফলজ গাছের বর্তমান বাজার মূল্য ৪লক্ষ ৫০হাজার টাকা। তখন আমি দ্রুত বিষয়টি আমার ছোট ভাই মোঃ রশিদুল ইসলামকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অবগত করি এবং তাকে জমিতে যাওয়ার জন্য বলিলে আমার ছোট ভাই তাৎক্ষনিক আমার ক্রয়কৃত জমিতে গিয়া আসামীগনদের গাছ কর্তন করিতে দেখিলে সে আসামীদের গাছ কর্তন করার কারণ জিজ্ঞাসা করিলে সকল আসামীগন আমার ছোট ভাইয়ের উপর চরাও হইয়া তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা সহ হুমকি দিয়া বলে যে, আমাদের যা মনচায় আমরা তাই করিব তুই কিংবা তোর পরিবারের লোকজন যদি আমাদের কাজে বাধা নিষেধ করিস তাহলে তোদের সকলকে খুন জখম করিয়া লাশ গুম করিয়া দিব মর্মে বলিয়া আসামীগন তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র দ্বারা আমার ছোট ভাইকে খুন জখম করার উদ্যত হয়। তখন আমার ছোট ভাই তার প্রানের ভয়ে ও আসামীদের আক্রমনাত্বক আচারণ দেখিয়া দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। আসামীগন ঐ দিন দুপুর অনুমান ২ঘটিকা পর্যন্ত গাছ নিয়ে যাওয়ার কাজ চলমান রাখায় আমি জরুরী পুলিশ সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করিয়া ঘটনার বিষয়টি অবগত করিলে অত্র থানার ডিউটিরত পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছা মাত্র আসামীগন পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পারিয়া কিছু কর্তন করা গাছ জমিতে ফেলিয়া রাখিয়া দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। অতপর ডিউটিরত পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর আমার ভাই মোঃ রশিদুল ইসলাম এর নিকট বিস্তারিত ঘটনা শুনিয়া এবং গাছ কর্তনের বিষয়টি দেখিয়া আমাদের আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেয়। উক্ত ঘটনার স্বাক্ষীগনসহ আরও অনেকে উক্ত বিষয়ে অবগত রহিয়াছে। অতপর আমি পাটগ্রাম হইতে লালমনিরহাটে ফিরিয়া জমিতে গিয়া বিষয়টি দেখি এবং পরবর্তীতে বিষয়টি পরিবারের লোকজন, স্বাক্ষীগনসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের অবগত করিয়া থানায় আসিয়া এজাহার করিতে কিছুটা সময় বিলম্ব হইল।
জমির তফশীল বর্ননাঃ- মৌজাঃ তালুক খুটামারা, জে এল নং- ১৮, ১৭, তৌজি নং- ২৩৩, ২৩৪, জরিপ খতিয়ান নং-১০০৬, ডিপি খতিয়ান নং-৭২৪, এসএ ভুক্ত দাগ নং-১৬২, ১৬৩, জরিপ দাগ নং- ১০৫১, জমি ৪০২৫ সহশ্রাংশ ও এসএ দাগ নং- ১৬২, ১৬০, জরিপ দাগ নং- ১০৫৮, জমি ৫১৩৮, সহশ্রাংশ ও এসএ দাগ নং-১৬০, জরিপ দাগ নং- ১০৫৯, দলা জমি ২২১২ সহশ্রাংশ। সর্বমোট ৭.২৫ শতক জমি সম্পত্তি।
পরে রোববার (১০ নভেম্বর) লালমনিরহাট সদর থানার মামলা নং-২৫, তাং-১০/১১/২৪, ধারা- ১৪৩/৪৪৭/৩৭৯,৫০৬/১১৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়েছে মর্মে জানা গেছে।
পরবর্তীতে লালমনিরহাট সদর থানায় মামলা হলে ১ ও ৩নং আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।