লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নে টাকা লুট করতে হাফিজুর রহমান নামে এক শারীরিক প্রতিবন্ধীর বসত বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে নগদ ২লক্ষাধিক টাকা লুট করে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এতে বাঁধা দেওয়ায় ৩জনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এ ঘটনায় লালমনিরহাট সদর থানায় ৫জনকে আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকালে লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নে এ হামলার ঘটনা ঘটে। বর্তমানে শারীরিক প্রতিবন্ধী হাফিজুর রহমানসহ তার বাবা-মা লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শুল্লুকিয়া গ্রামের ক্ষত-বিক্ষত বসত ভিটায় বাক প্রতিবন্ধীর ওই পরিবারটি অনেকটা হতাশার চাদরে নিজেদের ডেকে রেখেছেন। এখনো আতংক কাটেনি তাদের।
ভুক্তভোগী শারীরিক প্রতিবন্দ্বী হাফিজুর রহমান জানান, আমি একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী, আমার দুই পায়ে জন্মগতভাবে সমস্যা। আমি ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারি না, তারপরেও পরিবারের ভরণপোষণের জন্য আমি অটো রিক্সা চালিয়ে বাবা মাকে সাহায্য করে আসছি। আমরা পাঁচ বোন, এক ভাই। দুই বোনের বিয়ে দিয়েছি এখনো তিন বোন রয়েছে। তারা পড়ালেখা করছে। আমার অটোটি অন্যের, তাই ভাড়ায় চালাতে হয়। এজন্য নিজে একটি অটো রিকশা কেনার জন্য কষ্ট করে ২লক্ষ ২৫হাজার টাকা জমাই। ঘটনার দিন আমরা অটো রিক্সা কেনার জন্য লালমনিহাট শহরে যাওয়ার কথা। বিষয়টি জানার পর আমার প্রতিবেশী নুরুজ্জামান, নুর ইসলাম ও নূর মোহাম্মদ সহ তাদের বাড়ির চার-পাঁচজন সন্ত্রাসী আমাদের ভাত খাওয়া অবস্থায় অতর্কিত হামলা চালিয়ে লুটপাট করার চেষ্টা করে।
এ সময় আমার বাবা বাঁধা দিলে আমার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় কোপ দেয়। মুহূর্তেই আমার বাবা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আমার বাবাকে বাঁচাতে আমার মা এগিয়ে আসে। এ সময় সন্ত্রাসীরা আমার মাকেও বেধড়ক মারপিট করে। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় ঠিকমত চলাফেরা করতে পারিনা। এরপরও বাবা মাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তারা আমাকেও লাঠি দিয়ে দিয়ে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে পেটাতে থাকে। তাদের লাঠির আঘাতে আমার ডান হাতে প্রচন্ড আঘাত পাই।
প্রতিবন্ধী হাফিজুল আরো জানান, হঠাৎ করে নুরজাহান গঙ্গের এই নারকীয় হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ি। নিজেদের বসত বাড়িতে আমার বৃদ্ধ বাবা এবং আমি কোন রকম সংসারের গ্লানি টানছেন। এতোদিনের আমাদের কষ্টের জমানো ২লক্ষ ২৫হাজার টাকা আমাদেরকে মেরে তারা লুট করে নিয়ে গেল। এখন আমি কি করে অটো রিকশা কিনবো বুঝে উঠতে পারছি না। আমি এর বিচার দাবি করছি। গুরুতর আহত হওয়ায় আমার বাবা মা এবং আমি এখনো লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছি। এ হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় নুরুজ্জামান, নুর ইসলাম, নূর মোহাম্মদ, নুর নাহার, ও নুর বানুকে আসামী করে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ ব্যাপারে লালমনিহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল কাদের জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম মানিক
সম্পাদক : মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ
প্রকাশক : মোঃ রমজান আলী
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হেলাল হোসেন কবির
Copyright © 2024 আলোর মনি. All rights reserved.