লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ঝালাংঙ্গী এলাকায় কতিপয় ব্যক্তির কু-পরামর্শে জমি জোর পূর্বক জবর দখল করার পায়তারা করছে। বিবাদীরা একের পর এক অন্যায়, শোষণ ও অত্যাচার করেই চলছে।
পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ঝালাংঙ্গী এলাকার কতিপয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, একই এলাকার দস্যু প্রকৃতির বলে পরিচিত মোঃ আমিনুর ইসলামসহ অপরাধী ব্যক্তিগণ এর বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) পাটগ্রাম থানায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ঝালাংঙ্গী এলাকার মৃত্য- আইনুল হকের পুত্র মোঃ লিটন হোসেন (৩২) নামের এক ভুক্তভোগী এ অভিযোগ দাখিল করেছেন।
ভূক্তভোগী মোঃ লিটন হোসেন স্বাক্ষরিত অভিযোগে উল্লেখ করেন যে, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ঝালাংঙ্গী এলাকায় নিম্ন তফসীল বর্ণিত জমি আমি পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘ দিন হতে ভোগ দখল করে আসছি। লালমনিরহাটের ঝালাংঙ্গী এলাকার বিবাদী মোঃ আমিনুর ইসলাম (৫০), মোঃ মাইনদ্দিন (৫৫), মোঃ শাহিদুল ইসলাম (৬০), মোঃ সাজু (৩৭), মোঃ আইয়ুব আলী (৬৫), মোঃ ইয়াকত আলী (৫০), মোঃ লাইয়ুম ইসলাম (২৪), মোঃ বিপুল ইসলাম (২৭), মোঃ লিমন ইসলাম (২৫), মোছাঃ বিউটি বেগম (৪৮), মোছাঃ লাভলী বেগম (৩২), মোছাঃ ছাবিনা বেগমসহ অনেকে অজ্ঞাতনামা। আমার পাড়প্রতিবেশী। পাশাপাশী বসবাসের কারনে বিবাদীগনের সাথে জমিজমার ও পরিবারিক বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। নিম্ন তফশীল বনিত জমি বিবাদীগন জোর পূর্বক জবর বেদখলের পায়তারা করে থাকে। বিবাদীগন প্রায় সময় আমার ও পরিবারের লোকজনের ক্ষতি করার পায়তার করে আসছে। ঘটনার দিন গত ১০ জুলাই সকাল অনুমান ১১.৩০ ঘটিকার সময় বেআইনী জনতা দলবদ্ধ হয়ে একই উদ্দেশ্যে হাতে লাঠিশোঠা, লোহার রড, ধারালো ছোড়া, কোদাল, দা ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বে-আইনী জনতায় দলবদ্ধ হয়ে আমার ভোগদখলীয় নিম্ন তফসীল বর্ণিত জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে জমি জোরপূর্বক বে-দখলের উদ্দেশ্যে জমিতে থাকা রোয়া বিনষ্ট করে হালচাষের ট্রাক্টর দ্বারা হালচাষ করে জমিতে ধানের চারা রোপন করে জমি বেদখল করে থাকে। আমি ও আমার ভাইসহ বিবাদীদের গালিগালাজ করতে বাধা নিষেধ করলে ১নং বিবাদীর হুকুম দিয়া বলে যে, শালাকে মারপিট করে জমির স্বাধ মিটাইয়া দেও। হুকুম পাওয়া মাত্র ৩নং বিবাদীর হাতে থাকা ধারালো দ্বারা বিবাদীর হাতে থাকা ধারালো ছোড়া দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে আমার মেঝো ভাই রেজাউল এর মাথার মাক বরাবর চোট মারিলে উক্ত চোটটি মাথার মাঝ খানে ০৩ টি চোট লাগিয়া গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে ৫নং আসামী বড় ভাইয়ের বুকের উপর বসে হত্যার উদ্দেশ্যে দুই হাত দিয়ে গলা চেপে ধরলে বড় ভাই শ্বাস রুদ্ধ হয়ে মরে যাওয়ার উপক্রম হয়। মেঝো ভাইয়ের অবস্থা বেগতিক দেখে আমার বড় ভাই আব্দুল করিম এগিয়ে গেলে ৪নং বিবাদীর হাতে থাকা ধারালো ছোড়া দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে পিছন দিক থেকে মাথার মাঝ বরাবর ছোট মারিলে উক্ত চোটটি ঠেকাইলে বাম হাতের আঙ্গুলসহ মাথার মধ্য ভাগে লেগে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে ৫নং বিবাদী আমার বড় ভাইয়ের বুকের উপর বসে হত্যার উদ্দেশ্যে দুই হাত দিয়া গলা চেপে ধরে আমার বড় ভাই শ্বাস রুদ্ধ হয়ে মুখ দিয়া লালা বেড় হয়ে দুই চক্ষু রক্ত বর্ন হয়ে মরে যাওয়ার উপক্রম হয়। বড় ভাইয়ের অবস্থা বেগতিক দেখে আমি ও আমার সহ এগিয়ে গেলে ৬ ও ৭নং বিবাদী হাতে ধারালো ছোড়া দ্বারা লইয়া আসিয়া আমার দুই পায়ের হাটুতে চোট মারিয়া গুরুতর রক্তাক্ত জখম করিয়া মাটিতে ফেলিয়া দেয়। একপর্যায়ে ১, ২, ৯, ১০, ১১, ১২ নং বিবাদী লোহার রড দিয়া আমাকে এলোপাতাড়ী মারডাং মাথায়, বুকে, পিঠে, পায়ে সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফুলা ছিলা জখম করে। এই সময়ে ৮ নং বিবাদী আমার বুকের উপর বসিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে দুই হাত দিয়া গলা চাপিয়া ধরিলে শ্বাস রুদ্ধ হইয়া মুখ দিয়া লালা বেড় হইয়া দুই চক্ষু রক্ত বর্ন হইয়া মরিবার উপক্রম হই। আমাদের আত্ম চিৎকার শুনিয়া আশপাশ হইতে স্বাক্ষীগনসহ আরো অনেকে আগাইয়া আসিয়া বিবাদীদের কবল হইতে উদ্ধার করে। বিবাদীগন সাক্ষীদের সামনে প্রকাশ্যে শাষায় যে, পরবর্তীতে সে কোন সময় নিম্ম তফসিল বর্ণিত জমি দখল করিবে এতে কেউ বাধা দিলে মারপিট করিয়া জীবন শেষ করিয়া দিবে বলিয়া বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি প্রদান করে। পরবর্তীতে আমার মেঝো ভাই, বড় ভাই ও আমি সহ গুরুত্বর অসুস্থ হইলে সাক্ষীদের সহায়তায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির অটোভ্যান যোগে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনিয়া চিকিৎসার জন্য ভর্তি হই। আমার মেঝো ভাই রেজাউল এর ভর্তি রেজিঃ নং-২০/১৩৫৪৭, বড় ভাই আব্দুল করিম এর ভর্তি রেজিঃ নং-২৪/১৩৫৪৬, আমার ভর্তি রেজিঃ নং- ২৮/১৩৫৫০, তারিখঃ ১০/০৭/২০২৪ খ্রিঃ। জখমী রেজাউল ও আন্দুল করিম এর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করিলে রেজাউল ও আব্দুল করিম সেখানে ভর্তি করাইয়া উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। আমি চিকিৎসান্তে কিছুটা সুস্থ হইয়া ও জখমীর চিকিৎসার কাজে ব্যস্ত থাকায় উক্ত ঘটনার বিষয় পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সহিত বিস্তারিত আলোচনা করিয়া থানায় আসিয়া অভিযোগ দায়ের করিতে বিলম্ব হইল। জমির তফসিল অনুযায়ী লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার ঝালাংঙ্গী এলাকার বি আর এস খতিয়ান নং-১৫৪, দাগ নং- ৩৩৯৮ দাগে জমির পরিমান ১২ শতক নালিশী।
এদিকে, মোঃ আমিনুর ইসলামগং এর এমন কর্মকাণ্ডে স্থানীয়দের মাঝে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ন্যায় বিচার দাবি করেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো আমিনুর ইসলামের বক্তব্য জানা যায়নি।
পাটগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।