লালমনিরহাটে বাধা পেয়ে রেলওয়ের জমিতে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করেই ফিরে গেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাটের ডিভিশনাল এস্টেট অফিস ও রেলওয়ে ল্যান্ডস্ এন্ড বিল্ডিংস বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেখানে এক হতে দেড় শত লোক জড়ো করায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থাকায় অভিযান চালানো হয়নি।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুরে লালমনিরহাট জেলা শহরের বি ডি আর রোডের বসুন্ধরা মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই এলাকার ব্যবসায়ী শরীফ মোঃ আতাউল্লাহ্ সরকার এর দখলে থাকা রেলওয়ের ১হাজার বর্গফুট জায়গায় নির্মিত আধা-পাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে যায় বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাটের ডিভিশনাল এস্টেট অফিস ও রেলওয়ে ল্যান্ডস্ এন্ড বিল্ডিংস বিভাগ। ওই স্থাপনা নিয়ে আগেও বিভিন্ন সময় বাধা এসেছে। অন্তত ২বছর আদালতে মামলা চলার পর সম্প্রতি মামলা খারিজ করে দেন উচ্চ আদালত।
শরীফ মোঃ আতাউল্লাহ্ সরকারকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে চলতি বছরের ১৩ জুন নোটিশ দেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাটের ডিভিশনাল এস্টেট অফিসার ও রেলওয়ে ল্যান্ডস্ এন্ড বিল্ডিংস বিভাগের ডেপুটি কমিশনার পূর্ণেন্দু দেব। ওই দিনই স্বাক্ষর করে নোটিশটি গ্রহণ করেন শরীফ মোঃ আতাউল্লাহ্। নোটিশে চলতি বছরের ১ জুলাইয়ের মধ্যে রেলওয়ের জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে জমি রেলওয়েকে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু শরীফ মোঃ আতাউল্লাহ্ সরকার স্থাপনা সরিয়ে জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় মঙ্গলবার (২ জুলাই) সেখানে অভিযানে যায় বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাটের ডিভিশনাল এস্টেট অফিস ও রেলওয়ে ল্যান্ডস্ এন্ড বিল্ডিংস বিভাগ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাটের ডিভিশনাল এস্টেট অফিস ও রেলওয়ে ল্যান্ডস্ এন্ড বিল্ডিংস বিভাগের ডেপুটি কমিশনার পূর্ণেন্দু দেবের নেতৃত্বে ভূসম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ঘটনাস্থল বসুন্ধরা মার্কেট এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালাতে যান। কিন্তু তার আগেই সকাল থেকে শরীফ মোঃ আতাউল্লাহ্ সরকার এর সমর্থনে সেখানে এক থেকে দেড় শত যুবক সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের অনেককে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কর্মসূচিতে দেখা যায় বলে অভিযোগ আছে। উপস্থিত লোকজন ও সার্বিক পরিস্থিতিতে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থাকায় অভিযান না করে ফিরে যায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাটের ডিভিশনাল এস্টেট অফিস ও রেলওয়ে ল্যান্ডস্ এন্ড বিল্ডিংস বিভাগের ডেপুটি কমিশনার পূর্ণেন্দু দেব সাংবাদিকদের বলেন, ব্যবসায়ী শরীফ মোঃ আতাউল্লাহ্ সরকারকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে প্রথম ২০২১ সালের ২৩ আগস্ট নোটিশ দেওয়া হয়। তিনি তখন নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে এবং নিজেকে রেলওয়ের একজন ইজারাগ্রহীতা দাবি করে জেলা জজ আদালতে একটি মামলা করেন। কিন্তু সুফল না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় কয়েক মাস পর প্রত্যাহার করে নেন। এরপর রেলওয়ের উচ্ছেদ নোটিশকে উচ্চ আদালতের সব স্তরে গিয়ে সুফল না পেয়ে সর্বশেষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সিভিল রিভিউ পিটিশন করেন। চলতি বছরের ১৪ মার্চ সেই পিটিশন খারিজ করে দেন আদালত। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু উপস্থিত উচ্ছৃঙ্খল লোকজন ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা থাকায় অভিযান না চালিয়ে আপাতত ফিরে এসেছেন। পরে আবার উচ্ছেদের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে সময় উল্লেখ করেননি তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী শরীফ মোঃ আতাউল্লাহ্ সরকারের বক্তব্য জানা যায়নি।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম মানিক
সম্পাদক : মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ
প্রকাশক : মোঃ রমজান আলী
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হেলাল হোসেন কবির
Copyright © 2024 আলোর মনি. All rights reserved.