বাংলাদেশ ছাত্রলীগ লালমনিরহাট জেলা শাখার সভাপতি মোঃ রাশেদ জামান বিলাসকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, সংগঠনবিরোধী, শৃঙ্খলা-পরিপন্থী, অপরাধমূলক এবং সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয় এমন কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে মোঃ রাশেদ জামান বিলাস (সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, লালমনিরহাট জেলা শাখা) কে তার স্বীয় পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
এর আগে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ লালমনিরহাট জেলা শাখার সভাপতি মোঃ রাশেদ জামান বিলাশ এর বিরুদ্ধে পবিত্র ঈদ উল আযহাকে সামনে রেখে এক গরু ব্যবসায়ীকে মারধর করে ২লাখ ৪০হাজার টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মোঃ রাশেদ জামান বিলাশকে প্রধান অভিযুক্ত করে মোট ৬জনের বিরুদ্ধে সোমবার (১০ জুন) রাতে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর নাম মোঃ আইয়ুব আলী (৪৮)। তাঁর বাড়ি লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের তালুক দুলালী এলাকায়।
রোববার (৯ জুন) দুপুরে লালমনিরহাট জেলা শহর থেকে তাঁকে ধরে লালমনিরহাট সরকারি কলেজে নিয়ে চাঁদা আদায় করা হয় বলে তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোঃ রাশেদ জামান বিলাশ লালমনিরহাট পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। অভিযুক্ত অন্য ৪জন হলেন পৌরসভা এলাকার বালাটারী এলাকার মোঃ সৌরভ ওরফে টেরা (৩০), ক্যানটিন মোড় এলাকার মোঃ রায়হান (২৮), বত্রিশহাজারী এলাকার মোঃ রব্বানী (৩৫), খোর্দ্দসাপটানা এলাকার মোঃ বাবু (৩৪) এবং জেলা পরিষদ মোড় এলাকার মোঃ তুষার (২৫)। তাঁরা ছাত্রলীগ নেতা মোঃ রাশেদ জামান বিলাশের পূর্ব পরিচিত।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী উল্লেখ করেন, রোববার বেলা দুইটার দিকে জজ আদালতে হাজিরা দিয়ে বের হওয়ার পর তিনটি মোটর সাইকেল নিয়ে এসে তাঁর (ব্যবসায়ী) পথ রোধ করে দাঁড়ান অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ রাশেদ জামানের কথামতো তাঁরা বলেন, ‘ভাই, আপনি তো গরুর ব্যবসা করেন, ছাত্রলীগের সভাপতি বিলাশ ভাই আপনাকে চা খাওয়ার দাওয়াত দিছেন।’ তখন অভিযুক্ত সৌরভ তাঁকে মোটর সাইকেলে তুলে নিয়ে লালমনিরহাট সরকারি কলেজে নিয়ে যান। এভাবে নিয়ে আসার কারণ জানতে চাইলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁকে রশি দিয়ে হাত ও পা বেঁধে ফেলেন। কিছুক্ষণ পর ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ সেখানে উপস্থিত হয়ে তাঁর কাছে আড়াই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিসের টাকা, জিজ্ঞাসা করতেই তাঁরা এলোপাতাড়ি মারধর করেন এবং পাঞ্জাবির পকেটে থাকা ২০হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন।
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, মারধরের এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী চাঁদার টাকা দিতে রাজি হন এবং তাঁর স্ত্রীকে ২লাখ ৩০হাজার টাকা নিয়ে আসতে বলেন। এরপর রাশেদের নির্দেশমতো ওই ব্যবসায়ীকে আবার মোটর সাইকেলে তুলে শহরের ক্যানটিন মোড়ে ছাত্রলীগ নেতার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে তাঁকে আরেক দফা মারধর শুরু করলে ওই ব্যবসায়ী ছাত্রলীগ নেতার পা ধরে মারধর না করতে অনুরোধ করেন। তখন রাশেদ তাঁকে দ্রুত টাকার ব্যবস্থা করতে বলেন এবং টাকা না দিলে মাদক দিয়ে পুলিশে তুলে দেওয়ার ভয় দেখান। এরপর বিকেল ৪টার দিকে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর ছেলে ২লাখ ২০হাজার টাকা নিয়ে সেখানে এলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় রাশেদ তাঁকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আজকে তোকে প্রাণে ছেড়ে দিলাম, তুই যদি এ নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করিস বা আইনের আশ্রয় নিস, তাহলে তোকে সময়মতো পেলে প্রাণে শেষ করে দেব।’
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আগামী ১ (এক) বছরের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, লালমনিরহাট জেলা শাখার ২১ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল ও ৩জনকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছিল।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম মানিক
সম্পাদক : মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ
প্রকাশক : মোঃ রমজান আলী
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হেলাল হোসেন কবির
Copyright © 2024 আলোর মনি. All rights reserved.