লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় নিখোঁজের ২দিন পর ডোবা থেকে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত নিহতের বন্ধু মধু (২২) নামের আরেক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দুপুরে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার কান্তেশ্বরপাড়া এলাকায় একটি ডোবা থেকে ফাহিম ফরহাদ (১৬) নামের কিশোরের বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার করে আদিতমারী থানা পুলিশ। নিহত ফরহাদ উপজেলার আরাজি দেওডোবা এলাকার শাজাহান মিয়ার ছোট ছেলে। ফরহাদ সারপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। পরবর্তীতে সংসারে কাজে সহায়তার পাশাপাশি বাবার সাথে ও গরুর ব্যবসা দেখাশোনা করতো।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ জুন রাত থেকে ফরহাদ নিখোঁজ ছিলেন। নিখোঁজ হওয়ার পর আদিতমারী থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। আর পুলিশের পক্ষ থেকে অসহযোগীতার করা হয় বলে জানায় নিহতের বড় ভাই। নিহতের বড় ভাই আরও জানায় নিখোঁজের দিন মধু রায় নামের এক কিশোরসহ আরও ২জন ঘুরাঘুরি করে রাতে ফরহাদকে মধুর বাসায় রেখে আসতে বলে। ফরহাদ মধুকে নিয়ে যাওয়ার পর আর ফরহাদ এর সন্ধান পাওয়া যায়নি। অপরদিকে পুলিশ সন্দেহভাজান মধু নামের যুবককে আটক করে প্রথম জিজ্ঞেসাবাদে কোন কিছু স্বীকার না করলেও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পরবর্তীতে মধুকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করলে খুনের ঘটনা স্বীকার করে। তার দেয়া তথ্য মতে বৃহস্পতিবার সকালে কান্তেশ্বরপাড়া নামক এলাকায় থেকে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে। হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র (দা) ও মোবাইল ফোন ও মোটর সাইকেলও উদ্ধার হয়। মধু রায় রুহানীনগর এলাকার সুভাষ রায়ের ছেলে। সে এলাকায় বেশি সময় থাকতো না ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের নানা জায়গাতে থেকে বেড়াতো। কিছুদিন আগে ফরহাদের কাছে একটি পুরনো মোটর সাইকেল বিক্রি করে দেয়। সেই মোটর সাইকেলের দেনা-পাওনা নিয়ে বিরোধ ছিলো। মধু পুলিশের কাছো স্বীকার করে ঘটনার দিন একটি ফাঁকা স্থানে বসে তারা মাদকও সেবন করে। সে সময় তাদের প্রথমে গাঁজা সেবন ও পরে মোটর বাইকের লেনদেন নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ হয়। এক পর্যায়ে মধু একটি ধারালো দা দিয়ে প্রথমে ঘারে পরে উপর্যুপরি কোপ দেয়। পরে রক্তাক্ত মৃতদেহ বস্তাবন্দী করে টেনে-হিঁচড়ে ডোবায় নিয়ে এসে ফেলে দেয়।
আদিতমারী থানা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় মধুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মধু হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে। তার দেয়া তথ্য অনুসারে ডোবা থেকে ফরহাদের বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র এবং মোটর সাইকেলটি জব্দ করা হয়। মরদেহটি লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ময়না তদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।