কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে-
আলোর মনি রিপোর্ট: লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চলতি বছরের ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে। চেয়ারম্যান পদে এ নির্বাচনে ৩জন পদপ্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ১৭, লালমনিরহাট-০২ (কালীগঞ্জ, আদিতমারী) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ ও সহোদর ছোট ভাই সদ্য সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুজ্জামান আহমেদ এর মধ্যেই। অপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হচ্ছেন মোঃ তারিকুল ইসলাম তুষার।
এ নির্বাচন উপলক্ষে দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও ১৭, লালমনিরহাট-০২ (কালীগঞ্জ, আদিতমারী) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান আহমেদের একমাত্র ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদের চেয়ে এমপির সহোদর ছোট ভাই, সদ্য সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুজ্জামান আহমেদের বার্ষিক আয় ৭দশমিক ৭০ গুণ বেশি।
রাকিবুজ্জামান আহমেদের পেশা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ব্যবসা। বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ১১লাখ ৩৬হাজার ৪শত টাকা।
এখানে উল্লেখ যে, লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুজ্জামান আহমেদ রাষ্ট্র বিজ্ঞানে মাস্টার্স পাস করে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের কেইউপি মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি উক্ত বেসরকারি কলেজটি সরকারি করণ হলে তিনি শিক্ষকতার পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
মাহবুবুজ্জামান আহমেদও পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন ব্যবসা। তিনি বিভিন্ন খাত মিলিয়ে সর্বমোট বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন সর্বমোট ৮৭লাখ ৫৭হাজার ৬শত ২টাকা।
মাহবুবুজ্জামান আহমেদ বি.কম পাস। তিনি লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তিনি দু'বারের নির্বাচিত কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি এর আগে ২০বছরের অধিক সময় কালীগঞ্জের তুষভান্ডার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে দাখিল করা হলফনামায় মাহবুবুজ্জামান আহমেদ অস্থাবর সম্পদ হিসেবে নগদ টাকার পরিমাণ ১লাখ ৫০হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত সর্বমোট অর্থের পরিমাণ ৩কোটি ৬১লাখ ৫১হাজার ২শত ৭৫টাকা, সরকারি বন্ড ক্রয় ১লাখ টাকা, অর্জনকালীন সময়ের স্বর্ণের মূল্য ১০হাজার টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৫০হাজার টাকা, আসবাব পত্রের মূল্য ৬৫হাজার টাকা এবং অন্যান্য খাতে ২লাখ ৪০হাজার টাকাসহ অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৩কোটি ৬৭লাখ ৬৬হাজার ২শত ৭৫টাকা দেখানো হয়েছে।
অপরদিকে এমপি পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদ তার হলফনামায় অস্থাবর সম্পদ হিসেবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত সর্বমোট অর্থের পরিমাণ ৩৪লাখ ৪০হাজার ৪শত টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রীর অর্জনকালীন মূল্য ২লাখ ৫০হাজার টাকা, আসবাব পত্রের মূল্য ৫লাখ ৫০হাজার টাকাসহ মোট অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৪২লাখ ৪০হাজার শত টাকা দেখানো হয়েছে।
এ হিসেবে এমপি নুরুজ্জামান আহমেদের সহোদর ছোট ভাই মাহবুজ্জামান আহমেদের অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ এমপি পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদের চেয়ে ৮দশমিক ৬৭গুণ বেশি।
হলফনামায় মাহবুবুজ্জামান আহমেদ তার স্থাবর সম্পদের মূল্য হিসেবে ৫কোটি ২৫লাখ ৭০হাজার ৪শত ৯টাকা উল্লেখ করেছেন। মাহবুবুজ্জামান আহমেদ তার দায় দেনার পরিমাণ ৫কোটি ৪৬লাখ ৫৯হাজার ৯শত টাকা উল্লেখ করেছেন।
এমপি পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদ তার হলফনামায় স্থাবর সম্পদ হিসেবে ৫বিঘা জমি ও জলাশয় ১৫একরের কথা উল্লেখ করেছেন। তবে এই জমির কোনো মূল্য উল্লেখ করা হয় নি।
এদিকে এমপি পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদ তার হলফনামায় তথ্য গোপন করার অভিযোগ করেন এমপি নুরুজ্জামান আহমেদের সহোদর ছোট ভাই মাহবুজ্জামান আহমেদ।
এ উপলক্ষে লালমনিরহাট শহরের ভকেশনাল মোড়স্থ একটি অভিযাত রেস্তোরাঁয় আয়োজিত একটি সংবাদ সম্মেলনে গত ২৩ এপ্রিল বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে মাহবুবুজ্জামান আহমেদ লিখিত ভাবে অভিযোগ করেন, এমপি পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদের মোট জমির পরিমাণ (দলিল অনুসারে) ৪২দশমিক ২৩একর। এর মধ্যে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে ১৬দশমিক ৬৫একর জমির কথা। অবশিষ্ট ২৫দশমিক ৫৮একর জমির তথ্য হলফনামায় উল্লেখ করা হয়নি। যার মূল্য ১কোটি ৪৬লাখ ৮৫হাজার টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাকিবুজ্জামান আহমেদ বিগত এক বছরে কলেজ শিক্ষক হিসেবে যে ৩লাখ ৩৪হাজার ৩শত ২৪টাকা বেতন হিসেবে গ্রহণ করেছেন, সেই তথ্যও হলফনামায় উল্লেখ করেননি।
মাহবুবুজ্জামান আহমেদ বলেন, এ সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত রাকিবুজ্জামান আহমেদ তার হলফনামায় উল্লেখ না করে গোপন করেছেন, এ হিসেবে তার প্রার্থীতা বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছি, রিটার্নিং কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ করেছি, উচ্চ আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম মানিক
সম্পাদক : মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ
প্রকাশক : মোঃ রমজান আলী
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হেলাল হোসেন কবির
Copyright © 2024 আলোর মনি. All rights reserved.