লালমনিরহাটে বাবা-মাকে বাঁচাতে গিয়ে ভূমিদস্যুদের হামলায় এক চোখ হারিয়ে ফেলে কলেজ পড়ুয়া ছাত্র আনিছুর রহমান (২০)। গত বছরের ১৯ নভেম্বর লালমনিরহাট পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের আনিছুর রহমানের ডান চোখ উপড়ে ফেলার ঘটনায় তোলপাড় গোটা উপজেলা।
গ্রামের চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা ধারালো ছুরি দিয়ে আমার ডান চোখ তুলে নিয়েছে। এক চোখ নিয়ে কোনোমতে বেঁচে আছি। এখন বাম চোখটিও উপড়ে ফেলার হুমকি দিচ্ছে বলে সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করে আনিছুর ও তার পরিবার। আনিছুর বাউরা পূনম চাঁদ ভুতোরিয়া কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র।
সংবাদ সম্মেলনে আনিছুর ও তার বাবা মফিজুল ইসলাম জানান, ২০১৩ সালে ৯শতাংশ জমি কিনে তাতে চাষাবাদ করে আসছিলেন। তবে গ্রামের ভূমিদস্যুরা হঠাৎ সেই জমির মালিকানা দাবি করে জোরপূর্বক তা দখলে নেয়। ঘটনার দিন আমাদের ওপর হামলার সময় আমাদের রক্ষা করতে এসে আমার ছেলে আনিছুর তার ডান চোখ দস্যুদের হামলায় হারিয়ে ফেলে।
মফিজুল বলেন, আইনি লড়াই করে বে-দখল হওয়া জমি হয়তো উদ্ধার করতে পারব, কিন্তু আমার ছেলের চোখ তো আর ফেরত পাব না। আমরা শান্তিতে বসবাস করতে চাই এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত বছরের ১৯ নভেম্বর মফিজুল তার ক্রয়কৃত জমিতে হালচাষ করছিলেন। এ সময় বাউরা ইউনিয়ন কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে ১৫-১৬জন হামলা চালিয়ে মফিজুল ও তার স্ত্রী আনজু আরা বেগমকে রক্তাক্ত জখম করে। খবর পেয়ে বাবা-মাকে বাঁচাতে আনিছুর ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সে সময় আনিছুরকে মাটিতে ফেলে ধারালো ছুরি দিয়ে তার ডান চোখ উপড়ে ফেলে হামলাকারীরা। এ ঘটনায় ১০জনের নাম উল্লেখসহ ১৫-১৬জনের বিরুদ্ধে পাটগ্রাম থানায় একটি মামলা করেন মফিজুল ইসলাম। তারপরও চিহ্নিত ভূমিদস্যুদের অনবরত হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছেন বলে অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
তবে পরিবারটিকে অনবরত হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত কৃষক দল নেতা আলমগীর হোসেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পাটগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রমজান আলী সাংবাদিকদের বলেন, আসামিরা জামিনে রয়েছেন। হুমকির ঘটনায় মফিজুল ইসলাম একটি জিডি করেছেন। পুলিশ জিডি তদন্ত করছে এবং তদন্ত শেষে আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে।