লালমনিরহাটের অনন্য এক সৃজনশীল প্রতিভার অধিকারি মোছাঃ জেসমিন নাহার। তিনি একজন মেধাবী শিক্ষক। তিনি লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটী ইউনিয়নের কাজীর চওড়া বি.এল. উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
শিক্ষকতা পেশায় থেকে তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে এবং বর্তমানে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ বাস্তবায়নে যে ভাবে সহায়তা করেন- আইসিটিতে দক্ষতা থাকার কারণে এটুআই কর্তৃক আইসিটিফোরই জেলা অ্যাম্বাসেডর নিযুক্ত হন ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে। অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিযুক্ত হবার পর তিনিই সর্বপ্রথম লালমনিরহাটে নিজ উদ্যোগে নিজ বিদ্যালয় ছাড়াও ২৬ এপ্রিল ২০১৮ কিশামত হারাটি উচ্চ বিদ্যালয়, ৩০ এপ্রিল ২০১৮ কুর্শামারি উচ্চ বিদ্যালয়, ১৯ জুলাই ২০১৮ লালমনিরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবং মহেন্দ্রনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দিন ব্যাপি মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট বিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করছিলেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের ক্ষেত্রে তারই ব্যক্তিগত উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। এছাড়াও তিনি সকল অ্যাম্বাসেডরসহ মহেন্দ্রনগর মহাবিদ্যালয়, শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয়, তালুক মৃতিঙ্গা কারিগরি মহাবিদ্যালয়, লালমনিরহাট আদর্শ কলেজ, শহীদ আবুল কাশেম উচ্চ বিদ্যালয়, কদম তলা উচ্চ বিদ্যালয়, ইটাপোতা উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আইসিটি বিষয়ক কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
তিনি শিক্ষক বাতায়ন পোর্টালে সপ্তাহের সেরা কনটেন্ট নির্মাতা নির্বাচিত হন ১৩ জুলাই ২০১৮। শিক্ষক সম্মেলন ২০১৯ এ সরকারি খরচে ঢাকা ও ২ দিন কক্সবাজার ভ্রমনের সুযোগ পান এবং সার্টিফিকেট ও উপহার প্রাপ্তি হন। তিনি শিক্ষক বাতায়ন পোর্টালে সেরা উদ্ভাবক নির্বাচিত হন ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯। “জাতীয় সেরা কনটেন্ট নির্মাতা প্রতিযোগিতায়” বিভাগীয় পর্যায়ে ২০১৭ সালে ১৭তম এবং ২০১৮ সালে ১ম স্থান লাভ করেন। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে শতভাগ শিক্ষক বাতায়নের সদস্য করণের কাজে লিপ্ত থাকার কারণে লালমনিরহাট সদর উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক সম্মাননা স্মারক প্রাপ্ত হন ২০২১ সালে। আইসিটিফোরই জেলা অ্যাম্বাসেডর হিসেবে তিনি রংপুর বিভাগীয় আইসিটিফোরই অ্যাম্বাসেডর শিক্ষক সম্মেলন-২০১৯ এ সম্মাননা স্মারক প্রাপ্ত হন। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ১০টির বেশি অনলাইন স্কুলে অনলাইন ক্লাস পরিচালনার জন্য এটুআই ও গ্রামীণ ফোন এর যৌথ উদ্যোগে সম্মাননা স্মারক প্রাপ্ত হন ১ অক্টোবর ২০২১, শিক্ষক সম্মেলন ২০২১ রংপুর বিভাগ। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে তিনি স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে জুম ক্লাস পরিচালনা করেন।
জাতীয় শিক্ষাক্রম রুপরেখা ২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপজেলা মাস্টার ট্রেইনার (৬ষ্ট ও ৭ম শ্রেণির স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জানুয়ারি ২০২৩ সালে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের করিম উদ্দিন পাবলিক পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এ জেলা মাস্টার ট্রেইনার (৮ম ও ৯ম শ্রেণির স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২ থেকে ৮ নভেম্বর ২০২৩ নীলফামারী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ জাতীয় শিক্ষাক্রম রুপরেখা ২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নির্দেশ মোতাবেক ইনহাউজ ট্রেনিং (১৭ জানুয়ারি ২০২৪ইং সাল) তিনি সম্পন্ন করেন।
স্মার্ট বাংলাদেশ বিণিমানের লক্ষে শিক্ষক সহায়িকা অনুসরণ করে বাস্তব পরিবেশে শিক্ষার্থী কেন্দ্রীক একমূখী শিক্ষা ব্যবস্থাকে ফলপ্রসূ করতে বদ্ধপরিকর।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মাঠে মাস ব্যাপী অমর একুশে বই মেলার ১৯ নম্বর স্টলে লালমনিরহাটের লেখক ও কবি মোছাঃ জেসমিন নাহার বেগমের লেখা দায়ভার কাব্যগ্রন্থটি বিক্রি করা হয়েছে।
তিনি জানান, অমর একুশের ভাষা শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ওই দিনটি আমাদের গর্ব, আমাদের অহংকার। ভাষা আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ঐতিহ্য। ভাষার মাধ্যমেই আমরা প্রকাশ করি আমাদের ভাবনা, আমাদের অনুভূতি। আমাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে। আমরা আমাদের মাতৃভাষাকে সমৃদ্ধ করবো। আমরা আমাদের ভাষার প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা বজায় রাখবো।
আমরা আমাদের ভাষার অধিকার রক্ষার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকবো। একুশের চেতনা আমাদের হৃদয়ে ধারণ করে আমরা এগিয়ে যাবো সোনালী বাংলার লক্ষ্যে।
কবি মোছাঃ জেসমিন নাহার বেগম আরও প্রত্যাশা ব্যক্ত করে, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতায় সিক্ত করেছেন, স্বনামধন্য খই প্রকাশন এর স্বত্তাধিকারি জনাব মুসতাক মুকুল মহোদয়কে।
সেই সাথে বইয়ের উন্মোচন আনুষ্ঠানিকতায় উপস্থিত ছিলেন যারা সেই সকল সন্মানীদের মধ্যে কবি ও কথা সাহিত্যিক মাহবুবা ফারুক, কবি ও প্রচ্ছদ শিল্পী মনিরুজ্জামান পলাশ, কবি তানিয়া তাসমিনা, কবি ও কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক মাহবুবা বেগমসহ সকলের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
অমর একুশে বইমেলার প্রতিপাদ্য, ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’। ওই প্রতিপাদ্য কে সামনে নিয়ে তার লেখা ১ম কাব্যগ্রন্থ বই- “দায়ভার” ১ম দিন থেকেই খই প্রকাশনী প্রকাশনায় ১৯ নম্বর স্টলে বিক্রি হয়েছিল।
প্রকাশিত “দায়ভার” কাব্যগ্রন্থ বইটিতে যে সকল বিষয়বস্তু পঠিত হয়েছে তা পাঠকের হৃদয় স্পর্শ করবে বলে লেখকের বিশ্বাস।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি একুশে ফেব্রুয়ারিতে তার ১ম লেখা দায়ভার পড়ে পাঠকদের ভালো লাগছে। তাদের ভালো লাগায় লেখকের পরিশ্রম ও সফলতা অর্জিত হবে। জেলা প্রশাসনের একটি অনুষ্ঠানে তার দায়ভার কাব্যগ্রন্থ বইটি আনুষ্ঠানিক ভাবে মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছিল।
লেখক ও কবি মোছাঃ জেসমিন নাহার বেগম ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দ ১০ নভেম্বর লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের নিজপাড়া গ্রামের পিতাঃ অধ্যাপক মোঃ আঃ ছোবহান ও মাতা মোছাঃ জমিলা খাতুনের ৪তম কন্যা। তার শৈশব ও কৈশোর কাটে গ্রামের মাটি ও প্রকৃতির মাঝে। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে নিজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে। ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে লালমনিরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি. পাস করেন। লালমনিরহাট সরকারি কলেজ থেকে এইচ.এস.সি. ও বি.এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে এম.এ. পাস করেন (১৯৯৫খ্রিঃ)। ছাত্র জীবনে তিনি রেড ক্রিসেন্ট ও বিএনসিসি সংগঠনের সদস্য ছিলেন।