লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের শিবেরকুটি "সরেয়ারতলের ঘাট" ও "ময়দানের ঘাট” এলাকায় ২টি ব্রীজ নির্মিত হলে বদলে যাবে ১৪হাজার মানুষের ভাগ্য।
লালমনিরহাট জেলার সর্ব পূর্বের উপজেলা লালমনিরহাট সদর। এ উপজেলার লালমনিরহাট সর্ব পূর্বের ইউনিয়ন কুলাঘাট নদী বেষ্টিত জনপদ। ৪টি গ্রামের এই জনপদ চরাঞ্চল নামে পরিচিত।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা কার্যালয় থেকে মাত্র ৩কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কৃষি ও মাছে সমৃদ্ধ এলাকাটি পিছিয়ে শুধু অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে।
এখানকার বাসিন্দারা প্রধানত দুটি স্থান দিয়ে যাতায়াত করেন। একটি "সরেয়ারতলের ঘাট" হয়ে ধাইরখাতা আরেকটি "ময়দানের ঘাট" হয়ে ভিতরকুটি বাঁশপচাই বিলুপ্ত ছিটমহল। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও সময়মতো পৌঁছতে পারে না। অথচ যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলে এখানে চরে গড়ে উঠতে পারে পর্যটন কেন্দ্র। কৃষিতে আসবে আরও সমৃদ্ধি। যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় এখানে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায় না। দূরের স্কুলে গিয়ে শিশুরা লেখাপড়া করে।
নদীর উপর ব্রীজ ২টি হলে লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের শিবেরকুটি, দক্ষিণ শিবেরকুটি, বনগ্রাম গ্রামের মানুষের জীবনমান উন্নত হবে। এই দুটি ব্রীজ নির্মাণ হলে এই জনপদ অনেক এগিয়ে যাবে।
শিবেরকুটি গ্রামের বাসিন্দা ও কোদালখাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তারিকুল ইসলাম বলেন, রত্নাই নদীর সরেয়ারতল ঘাটের নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে মোটর সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাই। ২০১০ সালে বর্ষাকালে নৌকায় পার হওয়ার সময়ে নদীতে মোটর সাইকেলসহ পড়ে গিয়েছিলাম। স্থানীয় লোকজন আমাদের উদ্ধার করেছিলেন। ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। ওই দিনের কথা মনে হলে এখনও শিউরে উঠি। কবে যে সরেয়ারতল ঘাটে পাকা সেতু নির্মাণ করা হবে?
একই এলাকার বাসিন্দা ও পশ্চিম বড়ুয়া রোটারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুনা লায়লা বেগম বলেন, 'লালমনিরহাট শহর, বিভাগীয় শহর রংপুর ও রাজধানী ঢাকায় যেতে হয়। তবে যেখানেই যাই না কেন কিংবা গ্রামের বাড়িতে আসা-যাওয়া করতে হলে রত্নাই নদীর সরেয়ারতল ঘাট পাড় হতে হয়। ওই ঘাট পাড় হতে সব সময় ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হয়। এতো উন্নয়নের গল্প শুনি। সরেয়ারতল ঘাটের সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি ছাড়া কাজের কাজ কিছুই তো দেখি না।
একই এলাকার বাসিন্দা রাজিয়া সুলতানা এবার কুলাঘাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। তাকে সরেয়ারতল ঘাটের নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে লালমনিরহাট শহরে যেতে হচ্ছে।
রাজিয়া সুলতানা আরও জানান, এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা হলে এলাকার সবাই উপকৃত হতো।
কুলাঘাট ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মোশাররফ হোসেন মুকুল বলেন, আমাদের এলাকাটি রত্নাই নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে এ এলাকার প্রায় ২০হাজার মানুষের কাঙ্খিত জীবনমান উন্নয়ন হচ্ছে না। আর্থ-সামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা, সহজে শিক্ষা-চিকিৎসা ও উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে নিতে পারছে না। এ জন্য দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
কুলাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রীস আলী জানান, উপজেলার মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় সেতু নির্মাণের কথা একাধিকবার উপস্থাপন হলেও অজ্ঞাত কারণে আজও সেতু নির্মাণ হয়নি। ফলে শিবেরকুটিবাসীকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
লালমনিরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান হাসান বলেন, শিবেরকুটিতে সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, শিবেরকুটি "সরেয়ারতলের ঘাট" ও "ময়দানের ঘাট" এ ছোট নদী রত্নাই এর উপর সেতু নির্মাণের জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণকল্পে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু ব্যবস্থা গ্রহণ বি এখন সময়ের দাবী।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম মানিক
সম্পাদক : মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ
প্রকাশক : মোঃ রমজান আলী
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হেলাল হোসেন কবির
Copyright © 2024 আলোর মনি. All rights reserved.