সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এর ১০বছরে আয় বেড়ে ৫ গুণ হয়েছে। আর সম্পদ বেড়ে হয়েছে প্রায় ৯ গুণ। নির্বাচন কমিশনে ১০বছর আগে দশম জাতীয় নির্বাচনের সময় এবং এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নুরুজ্জামান আহমেদ এর জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৭, লালমনিরহাট-০২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুজ্জামান আহমেদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রথম বারের মতো জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে জমা দেওয়া তাঁর হলফনামায় দেখা যায়, নুরুজ্জামান আহমেদ এর অস্থাবর সম্পদ বলতে ছিল সাড়ে ৮৬হাজার ৫শত টাকা মূল্যের কিছু ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য হন।
টানা দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য থাকার পর এবারও একই আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন নুরুজ্জামান আহমেদ। এবার জমা দেওয়া হলফনামায় দেখা যায়, এক দশকের ব্যবধানে তাঁর অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৮৬হাজার ৫শত টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩কোটি ৬৫লাখ ৬২হাজার ৭শত ৫১টাকার বেশি। অর্থাৎ তাঁর অস্থাবর সম্পদ বেড়ে হয়েছে ৪২২ গুণ। তবে ঘরে আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী ১০বছর আগে যা ছিল, এখনো তা-ই আছে।
অস্থাবর বাড়লেও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের স্থাবর সম্পদের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। ২০১৩ সালে তাঁর স্থাবর সম্পদের মধ্যে ছিল ২৫ বিঘা কৃষিজমি, ২০ শতক অকৃষিজমি, ৩৭ লাখ টাকা মূল্যের দালান ও ৩৫ বিঘা জমির মাছের খামার। তাঁর ২০২৩ সালের হলফনামা বলছে, তাঁর কৃষি ও অকৃষিজমি এবং মাছের খামার আগের মতোই আছে। তবে ৩৭ লাখ টাকা মূল্যের সেই দালান নেই, কিন্তু ঢাকায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের একটি প্লট রয়েছে।
হলফনামা বলছে, নুরুজ্জামান আহমেদের বর্তমানে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মোট অর্জনকালীন মূল্য প্রায় ৪ কোটি ৪ লাখ টাকা। যা এক দশক আগে ছিল ৪৬ লাখ টাকার। অর্থাৎ, ১০বছরের ব্যবধানে তাঁর মোট সম্পদ বেড়ে হয়েছে প্রায় ৯ গুণ।
এ সময় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের বার্ষিক আয় বেড়েছে ৫ গুণ। ২০১৩ সালে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ৬লাখ টাকা। কৃষি, ঘরভাড়া, ব্যবসা, সম্মানী ও মৎস্য খাত থেকে তাঁর এসব আয় হতো। ২০২৩ সালের হলফনামা বলছে, এখন তাঁর আয়ের খাত কৃষি, ভাড়া, ব্যবসা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানত ও মন্ত্রী হিসেবে সম্মানী। এসব খাত থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৩২লাখ টাকার বেশি। অর্থাৎ, তাঁর বার্ষিক আয় বেড়ে পাঁচ গুণের বেশি হয়েছে।
হলফনামায় দেখা যায়, প্রথমবার সংসদ সদস্য হওয়ার আগে, ২০১৩ সালে নুরুজ্জামান আহমেদের স্ত্রীর কোনো আয় ছিল না। তাঁর ওপর নির্ভরশীল অন্যদেরও আয় ছিল না। এখনো নেই। তবে ২০১৩ সালে তাঁর স্ত্রীর ৩২হাজার টাকার মূল্যের অলংকারাদি ছিল, যা এখন আর নেই।