লালমনিরহাট জেলার ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলার ইটভাটায় আইন ভেঙে বাঁশের মুড়া ও কাঠ এবং টায়ার পোড়ানো হচ্ছে। ইট তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে কৃষি জমি থেকে সংগৃহীত মাটি। আবার অধিকাংশ ভাটা গড়ে উঠেছে ফসলি জমিতে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩-এর ৫ ও ৬ ধারা অনুযায়ী কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়া ও ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কাঠ পোড়ানো দণ্ডনীয় অপরাধ। ৮ ধারায় বলা হয়েছে, আবাসিক এলাকায় ৩কিলোমিটারের মধ্যে ও কৃষি জমিতে ভাটা তৈরি করা যাবে না।
প্রতি মৌসুমে নভেম্বর হতে এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিটি ভাটায় ৩ শ্রেণিতে ইট তৈরি হয়। এতে লাখ লাখ ঘনফুট মাটি ব্যবহৃত হয়। অধিকাংশ মাটিরই উৎস কৃষি জমি। বেশির ভাগ ভাটাতেই দোআঁশ ও এঁটেল দোআঁশ মাটি ব্যবহার হয়, যা কৃষি জমির প্রাণ।
জমির উপরিভাগের ৬ হতে ৭ ইঞ্চি মাটিতে ফসল উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান বেশি থাকে। উপরিভাগের মাটি কেটে নেওয়ায় নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, দস্তা, কপার, ম্যাগনেসিয়ামসহ ১৭ ধরনের উপাদান ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, লালমনিরহাট জেলার সকল ভাটা গড়ে তোলা হয়েছে আবাদি জমিতে। আবাদি জমি ও জমির উপরিভাগের মাটি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে কৃষকরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যেন মাথা ব্যাথা নেই। সেই সঙ্গে অধিকাংশ ভাটা আবাসিক এলাকার ৩কিলোমিটারের মধ্যে এবং আবাদি জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে।
সবগুলো ভাটায় ইট পোড়াতে জ্বালানি বাঁশের মুড়া ও কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। ভাটায় স্তুপ করে রাখা হয়েছে বাঁশের মুড়া ও কাঠ।
লালমনিরহাটের সমাজ সচেতন ব্যক্তিরা বলেন, এই ছোট লালমনিরহাট জেলায় যেভাবে হু হু করে ইটভাটা বেড়েই চলছে। যা পরিবেশের জন্য হুমকী স্বরুপ। অতিসত্ত্বর এদেরকে আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা নেয়া জরুরী। তা না হলে এ জেলায় ইটভাটার কারণে পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার ক্ষতিসহ কৃষি জমি নির্বিচারে বিনষ্ট হবে। সেই সঙ্গে এসব ইটভাটায় নিয়ম বহির্ভূত ভাবে চিমনি স্থাপন করায় নির্গত ধোঁয়া বসতবাড়িতে ঢুকে পড়ছে। এ ধোঁয়া ও ধুলা পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করছে। যেন দেখার কেউ নেই।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম মানিক
সম্পাদক : মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ
প্রকাশক : মোঃ রমজান আলী
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হেলাল হোসেন কবির
Copyright © 2024 আলোর মনি. All rights reserved.