শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
সার সিন্ডিকেট হোতারা ধোঁয়া ছোঁয়ার বাহিরে কেন লালমনিরহাটে তামাকের বিষে কমছে জমির ঊর্বরতা; বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি লালমনিরহাটে জেন্ডার-সংবেদনশীল দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকরণ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিযোজন বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে আত্মনির্ভরশীল দল এবং ইউডিএমসি এর মধ্যে অ্যাডভোকেসি এবং লবিং মিটিং অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত পাটগ্রামে শহীদ জিয়া স্মৃতি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট অনুষ্ঠিত গণতন্ত্র আমাদের হাতের নাগালে নাই-লালমনিরহাটে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় লালমনিরহাটে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ও ঔষধ সেবা অর্ধেক মূল্যে হত দরিদ্রদের ছানি অপারেশন অরবিট চক্ষু হাসপাতালে লালমনিরহাটে শীতের হরেক রকমের পিঠার দোকানের পসরা নিয়ে বসছেন বিক্রেতারা বিএনপির কর্মী সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত
অব্যাহত উন্নয়নের ধারায় পাল্টে গেছে লালমনিরহাট

অব্যাহত উন্নয়নের ধারায় পাল্টে গেছে লালমনিরহাট

পজেটিভ লালমনিরহাট:
:: মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ :: লালমনিরহাটে বিগত ১৪বছরে অনেক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। আর এই উন্নয়নের ধারায় পাল্টে গেছে লালমনিরহাট। তুলনামূলকভাবে কম জনসংখ্যা অধ্যুষিত এক সময়ের শান্ত শহরে একদিকে যেমন জনসংখ্যার চাপ বেড়েছে, কোলাহল বেড়েছে, তেমনিভাবে শহরের চেহারা, পরিবেশও খুব দ্রুত পাল্টে গেছে। আর এই পাল্টে যাওয়ার শুরু হয়েছে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও ক্ষমতায় আশার ফলে তা অব্যাহত রয়েছে। এরপর ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও ক্ষমতায় আশার ফলে তা ধারাবাহিক ভাবে এগিয়ে চলছে। যদিও লালমনিরহাটবাসীর প্রত্যাশা অনুযায়ী উন্নয়নের কিছু কাজ এখনও বাকি রয়েছে।

 

শহরবাসীর দীর্ঘদিনের একটি দাবি ছিল লালমনিরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় লালমনিরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ডাবল শিফট চালু করা। দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন চালু হয়েছে ডাবল শিফট। কয়েক হাজার শিক্ষার্থী পড়তে পারছে লালমনিরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও লালমনিরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। এছাড়া লালমনিরহাট ক্যান্টমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ গুণগত মান সম্মত শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। উচ্চ শিক্ষার জন্য লালমনিরহাট সরকারি কলেজে ১০টি বিষয়ে অনার্স ও ৪টি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু হয়েছে। তাছাড়া লালমনিরহাট সরকারি কলেজের মেয়েদের জন্য হোস্টেল ভবন তৈরি হয়েছে। লালমনিরহাট জেলার অসংখ্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য নতুন ভবন তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয়েছে কম্পিউটার ল্যাব। শহরের রেলওয়ে স্টেশন থেকে লালমনিরহাট জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র মিশন মোড় চত্ত্বর পর্যন্ত সড়কটি প্রশস্ত হয়েছে, আরও হয়েছে রোড ডিভাইডার। এছাড়া মিশন মোড় টু কুলাঘাট সড়ক প্রশস্ত হয়েছে। মহেন্দ্রনগর রেলওয়ে গেট থেকে লালমনিরহাট জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র মিশন মোড় চত্ত্বর হয়ে কলেজ রোড পর্যন্ত সড়কটি এখন প্রশস্ত হচ্ছে, আরও হচ্ছে রোড ডিভাইডার। লালমনিরহাট স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতালে সুষ্ঠভাবে পরিচালনা ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ২৮কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ডায়াবেটিক সমিতি লালমনিরহাটের ডা. সেলিমা ডায়াবেটিক এন্ড জেনারেল হাসপাতাল চালু হয়েছে। সেখানে উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল ২শত ৫০ বেডে উন্নীতকরণ কাজ চলমান রয়েছে। লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নে তিস্তা নদীর উপর ১শত ২২কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। লালমনিরহাট জেলা শহরের তালুক খুটামারা মৌজায় লালমনিরহাট সদর উপজেলা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধসহ সভামঞ্চ এবং শেখ রাসেল শিশু ও বিনোদন পার্ক ১কোটি ৫০লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। লালমনিরহাটবাসীর এই এলাকার রেলের উন্নয়নে ১শত ৭১কোটি টাকা ব্যয়ে বুড়িমারী-লালমনিরহাট সংস্কারকৃত নতুন রেল লাইন নির্মাণ, তিনবিঘা করিডর ২৪ঘন্টার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এতে দহগ্রাম-আঙ্গরপোতার মানুষের দীর্ঘ ৬৪বছর পর বন্দীদশা থেকে মুক্তি পায়। লালমনিরহাট নার্সিং কলেজ, প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) নির্মাণ। লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নে ধরলা নদীর উপর ১শত ৩১কোটি টাকা ব্যয়ে “শেখ হাসিনা ধরলা সেতু” নির্মাণ করা হয়েছে। লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নে তিস্তা নদীর উপর ১শত ২৩কোটি ৮১লক্ষ টাকা ব্যয়ে “গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতু” নির্মাণ করা হয়েছে। লালমনিরহাট জেলার ৫৯টি ছিটমহলবাসীর অবরুদ্ধ জীবনের সুদীর্ঘ ৬৮বছরের ঝুলে থাকা সমস্যার চির অবসান হয়েছে। লালমনিরহাট জেলার ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়ন ও ২টি (লালমনিরহাট, পাটগ্রাম) পৌরসভায় নতুন নতুন পাকা রাস্তা ছাড়াও খাদ্য গুদাম নির্মাণ করা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাচীর ও গেট নির্মাণ করা হয়েছে। পাউবো’র তত্ত্বাবধানে তিস্তা ও ধরলা নদীর ভাঙ্গণ রোধে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ এর লোডশেডিং ও অনেক কমে এসেছে এখানে। বেশিরভাগ গ্রামে এখন বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। ইতিমধ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৪ জুলাই সকালে তাঁর তেজগাঁও কার্যালয়ে ৩দিনব্যাপী জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণে ঘোষণা দিয়েছেন, “ভবিষ্যতে বিমান ও হেলিকপ্টার নির্মাণের লক্ষ্যে লালমনিরহাটে একটি অ্যারোনটিক্যাল সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন।” তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় অস্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মিত হয়েছে। চলছে পাঠদান কার্যক্রম। লালমনিরহাট উন্নয়ন আন্দোলন পরিষদের উদ্যোগে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপি’র বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে উল্লেখিত দাবীগুলো হলো- লালমনিরহাট বিমানবন্দর দ্রুত চালু করতে হবে। মোগলহাট ইমিগ্রেশন ও ভারত-বাংলাদেশ রেল সংযোগ পুনঃস্থাপন চাই। মেয়াদ উত্তীর্ণ তিস্তা রেলসেতু পুণঃনির্মাণ করে কাউনিয়া- বুড়িমারী রেলপথকে ডুয়েলগেঞ্জ ও লালমনিরহাট-এনজিপি (শিলিগুড়ি) মৈত্রী/ বন্ধন ট্রেন চাই। রংপুর- তিস্তা-লালমনিরহাট-বুড়িমারী জাতীয় সড়ক চার লেনে রূপান্তরিত করতে হবে। লালমনিরহাটে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইপিজেড) দ্রুত বাস্তবায়ন চাই। সেনাবাহিনী ঘোষিত মেডিকেল কলেজ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (এডুকেশন ভিলেজ) স্থাপন কর। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিত্যক্ত জমিতে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন কর। তিস্তা ও ধরলা নদীর শাসন করে জলখার নির্মাণ ও উভয় পাড়ে বনায়ন পড়ে তোল। এছাড়াও অতিক্রম লালমনিরহাট নামক একটি সামাজিক সংগঠন লালমনিরহাট উন্নয়নে ১২ দফা দাবির বাস্তবায়ন চাইছেন। দাবিগুলো হলো- ১। প্রস্তাবিত স্থান মহেন্দ্রনগরে অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়ন করতে হবে: ২। পরিবেশবান্ধব তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন চাই; ৩। মোগলহাট শুল্ক স্থলবন্দর স্থাপনের ঘোষণার বাস্তবায়ন করতে হবে; ৪। লালমনিরহাট থেকে অভ্যন্তরিণ বিমান যাতায়াত চালু করতে হবে; ৫। রংপুর-লালমনিরহাট-বুড়িমারী ৪ লেন সড়ক করতে হবে; ৬। তিস্তা নদীর উপর ব্রডগেজ রেলসেতু তৈরি করতে হবে; ৭। লালমনিরহাটে পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট চাই; ৮। বুড়িমারী-ঢাকা তিনবিঘা করিডোর এক্সপ্রেস চালু করতে হবে: ৯। যুব উন্নয়ন ও টিটিসির শিক্ষার্থীদের সরকারিভাবে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে; ১০। লালমনিরহাট শহরে আইসিটি পার্ক দ্রুত বাস্তবায়ন চাই; ১১। ধরলা নদীর দুই ধারে স্থায়ী নদী শাসন করতে হবে: ১২। লালমনিরহাটে কৃষকদের জন্য সরকারি বাজার চালু করতে হবে।

 

উপরে উল্লেখিত উন্নয়নের জন্য নবম জাতীয় সংসদের লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন, লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মজিবর রহমান, লালমনিরহাট-৩ (লালমনিরহাট সদর) আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও দশম জাতীয় সংসদের লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন, লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান আহম্মেদ, লালমনিরহাট-৩ (লালমনিরহাট সদর) আসনের সংসদ সদস্য আবু সালেহ মোহাম্মদ সাঈদ দুলাল, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. সফুরা বেগম রুমী এবং একাদশ জাতীয় সংসদের সংসদের লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন, লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান আহম্মেদ, লালমনিরহাট-৩ (লালমনিরহাট সদর) আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ কাদের, লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড মতিয়ার রহমান-এঁর প্রচেষ্টা রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone