আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এম জি মোস্তফার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধি ও সহকারী শিক্ষক মাইন উদ্দিন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল আমিনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। তার আগে ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির অভিভাবক প্রতিনিধি খালেদা বেগমও হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন তার কাছে জোর পূর্বক একটি পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন মনোনীত প্রার্থী ওই বিদ্যালয়ের নির্বাচিত সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক কাজী আলতাব হোসেনকে বাতিল করতেই যড়ষন্ত্র হিসেবে তাদের পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে এমন অভিযোগ দুই অভিযোগকারীর।
জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন গত ২০ জুন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন মনোনীত প্রার্থী ( ডিও লেটার প্রাপ্ত) সাংবাদিক কাজী আলতাব হোসেন বিজয়ী হয়ে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। নির্বাচনে অপর প্রার্থী অধ্যক্ষ সরওয়ার হায়াত খান পরাজিত হয়েছেন।
ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধি ও সহকারী শিক্ষক মাইন উদ্দিন অভিযোগে জানান, গত ২৫ জুন প্রধান শিক্ষক এম জি মোস্তফা তাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তার কাছে কৌশলে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নেয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য মনোনীত প্রার্থী ও নির্বাচিত সভাপতি কাজী আলতাব হোসেনকে বাতিল করতেই প্রধান শিক্ষক এমজি মোস্তফা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বব করছেন।
ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির অভিভাবক সদস্য খালেদা বেগম তার অভিযোগ উল্লেখ্য করেন, প্রধান শিক্ষক এম জি মোস্তফা নির্বাচিত সভাপতি কাজী আলতাব হোসেনের বিরুদ্ধে নানা যড়ষন্ত্র করছেন। ২৫ জুন ওই বিদ্যালয়ের ১জন শিক্ষক ও ২জন কর্মচারী তার বাড়িতে গিয়ে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর চায়। তিনি স্বাক্ষর না করলে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানীর হুমকি দেয়। পরে তার কাছে জোর পুর্বক পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নেয়।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমজি মোস্তফা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।
হাতীবান্ধা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নব-নির্বাচিত সভাপতি কাজী আলতাব হোসেন বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন আমাকে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন (ডিও লেটার) দেন। কিন্তু তারা তা গ্রহণ না করে নির্বাচনের দাবী করেন। আমি নির্বাচনেও সভাপতি পদে বিজয়ী হয়েছি। কিন্তু একটি মহল আমার বিরুদ্ধে যড়ষন্ত্র করছেন।
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল আমিন বলেন, মাইন উদ্দিন ও খালেদা বেগম নামে দুই জন সদস্যের কাছে জোর পূর্বক স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি। কাজী আলতাব হোসেন স্থানীয় সংসদ সদস্যের মানোনীত প্রার্থী ও নির্বাচিত সভাপতি। অভিযোগকারী ওই দুই জন সদস্য তাদের সদস্য পদ বহালসহ জোর পূর্বক স্বাক্ষর নেয়ার তদন্ত করে বিচার দাবী করেছেন। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
লালমনিরহাট-০১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন বলেন, প্রবীণ সাংবাদিক কাজী আলতাব হোসেনকে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে আমি মানোনয়ন দিয়েছি এবং তিনি সদস্যের ভোটে নির্বাচিতও হয়েছে। একটি মহল গণতান্ত্রিক রায়কে মেনে না নিয়ে নির্বাচিত সভাপতির বিরুদ্ধে যড়ষন্ত্র করছেন যা দুঃখজনক।