লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী (নেসকো)র কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে এ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
এ সময় নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী (নেসকো) কালীগঞ্জ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রকি চন্দ্র রায় (৪০) সহ কয়েকজনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে ওই নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
১৭, লালমনিরহাট-০২ (কালীগঞ্জ-আদিতমারী) আসনের সংসদ সদস্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদের ডাকে স্থানীয় তুষভান্ডার রেলওয়ে স্টেশন এলাকার অন্বেষা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর কার্যালয়ে দেখা করতে না যাওয়ায় এই ঘটনা ঘটানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন নেসকো কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী রকি চন্দ্র রায়।
রাকিবুজ্জামান আহমেদ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ লালমনিরহাট জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক।
নেসকো কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী রকি চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের কার্যালয়ের পিচরেট মিটার পাঠক শাহিনুর ইসলাম তাঁকে জানান, রাকিব (মন্ত্রিপুত্র) তাঁকে সন্ধ্যার পর অন্বেষা ক্লাবে ডেকেছেন। তিনি তাঁকে (শাহিনুর) বলেন, বাসায় তাঁর দুই স্বজন অসুস্থ, তিনি এখন যেতে পারবেন না। গতকাল বিকেলে তিনি প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে থাকতে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল তাঁকে ফোন দিয়ে বলেন, ‘রাকিব ভাই আপনাকে অন্বেষা ক্লাবে সন্ধ্যার সময় ডেকেছেন।’ তিনি তাঁকে বলেন, তিনি রংপুরে আছেন, ফিরতে রাত হবে। সোমবার সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে তিনি রাকিবকে ফোন দেন। কিন্তু তিনি ধরেননি।
নির্বাহী প্রকৌশলী রকি চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল, সহ-সভাপতি নুরুন্নবীসহ ৮ থেকে ১০জন আমার রুমে আসেন। আমি কেন রাকিব ডাকার পরও যাইনি, সেটি তাঁরা জানতে চান। আমি বললাম, এটা অফিসের ডেকোরামের মধ্যে পড়ে না যে মন্ত্রীর ছেলে ডাকলে আমাকে যেতে হবে। তখন শরিফুল ইসলাম আর নুরুন্নবীসহ তাঁরা আমাকে বলেন, “তুই জানিস রাকিব কে? তোকে এখানে মার্ডার করলে তোর কোন বাপ বাঁচাতে আসবে, তুই কাউকে পাত্তা দিস না।” পরে তাঁরা আমার অফিসের আলমারি ভাঙচুর করেন, ডিজিটাল হাজিরা মেশিন ভেঙে ফেলেন এবং আমার উপসহকারী প্রকৌশলীদের চড়থাপ্পড় দিয়ে বের করে দেন। এ সময় কর্মচারীদেরও মারধর করা হয়।’
রাকিবুজ্জামান আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলামসহ অন্যরা আমার নাম ভাঙিয়ে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে ছাত্রলীগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করব।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবির সাংবাদিকদের বলেন, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।