শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
বিএনপির কর্মী সভা অনুষ্ঠিত যতদিন নির্বাচন হবে না, ততদিন স্বাভাবিক অবস্থায় দেশে ফিরে আসবেনা-অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু আলু চাষ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন লালমনিরহাটের কৃষকেরা লালমনিরহাটে সরকার ফার্মেসী এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি (জিআর) চাল কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ মিষ্টি আলু চাষে লালমনিরহাটের কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে লালমনিরহাটে সাংবাদিকের পিতা কাশেম আলীর ইন্তেকাল পরিচ্ছন্ন রাজনীতি বুকে ধারণের মাধ্যমে আমরা স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে পারবো-লালমনিরহাটে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী লালমনিরহাটে তুলার চাষে লাভের মুখ দেখছে কৃষেকরা লালমনিরহাটে কর্মসৃজন কর্মসূচি শুরু না হওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন কর্মহীনরা
জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে ১হাজার ৩৯একর জমি বিক্রি; সর্বশান্ত হওয়ার পথে দুই হাজার পরিবার

জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে ১হাজার ৩৯একর জমি বিক্রি; সর্বশান্ত হওয়ার পথে দুই হাজার পরিবার

জীবিত মা-বাবা ও স্বামীকে মৃত দেখিয়ে ও মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে ভূয়া মালিকা সেজে প্রায় ১হাজার ৩৯একর জমি বিক্রি করেছে একটি সিন্ডিকেট।

 

এমন ঘটনাটি ঘটেছে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলা সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের ধুবনী গ্রামে।

 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ এ ঘটনার সাথে পার্শ্ববতী নীলফামারী জেলার ডিমলা সাব-রেজিস্ট্রার মনীষা রায় ও ডিমলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান চৌধুরীসহ নীলফামারী, লালমনিরহাট ও রংপুরের একটি সিন্ডিকেট জড়িত। ইতোমধ্যে এ নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার গুলো।

 

জানা যায়, নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ছাতুনামা মৌজায় লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের ধুবনী গ্রামের প্রায় দুই হাজার ব্যক্তি জমি রয়েছে। ওই জমি গুলোর কিছু জমি তিস্তা নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে; কিছু জমি তারা চাষাবাদ করে আসছে। এমতাবস্থায় রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কিশামত মেনান নগর গ্রামের মোহাম্মদ আলী সরকারের পুত্র সফিয়ার রহমান ও পীরগাছা উপজেলার গুয়াবাড়ি গ্রামের শাহ মকবুল হোসেনের পুত্র শাহ মোঃ মেহেদী হাসান নামে ওই দুই ব্যক্তি লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ধুবনী এলাকার জহির প্রমানিকের পুত্র ছফের আলীসহ কয়েকজনকে ম্যানেজ করেন একটি সিন্ডিকেট তৈরী করে। ওই সিন্ডিকেট ডিমলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান চৌধুরীর সহয়োগিতায় চরের প্রায় ১হাজার ৩৯একর জমির ভূয়া মালিকার কাগজপত্র তৈরী করেন। গত ২২ জুন ডিমলা সাব রেজিস্ট্রার মনীষা রায়কে ম্যানেজ করে ২৭জন ভূয়া মালিক সেজে সফিয়ার রহমান ও শাহ মেহেদী হাসানের কাছে ১হাজার ৩৯একর ১৬শতক জমি পাওয়ার অব অ্যাটর্নীর মাধ্যমে বিক্রি করেন। যার দলিল নং- ৩২৫৯/২৩, ৩২৬০/২৩, ৩২৬১/২৩, ৩২৬২/২৩, ৩২৬৩/২৩।

 

কিন্তু ৩২৫৯/২৩ দলিলে দাতা সাহেরা খাতুন তার স্বামী আব্দুল আজিজকে মৃত দেখালেও প্রকৃতপক্ষে তার স্বামী জীবিত রয়েছেন। শুধু তাই নয় সাহেরা খাতুনের মৃত দেখানো স্বামী আব্দুল আজিজ ৩২৬১/২৩ নং দলিলে দাতা হিসেবে জমিও বিক্রি করেছেন। ৩২৬২/২৩ নং দলিলে দাতা মোবারক হোসেন ও বাহাদুর হোসেন তাদের পিতা আব্দুল মালেককে মৃত দেখিয়েছেন। কিন্তু আব্দুল মালেক জীবিত আছেন। ৩২৬১/২৩ নং দলিলে দাতা আব্দুল লতিফ ও আব্দুস ছামাদ তাদের পিতা আবু তালেবকে মৃত দেখালেও আবু তালেব জীবিত রয়েছেন। ৩২৬৩/২৩ নং দলিলে দাতা মনতাজ আলী তার পিতা ওয়াহেদ আলী ও দাতা জাবেদ আলী তার মাতা জোবেদা খাতুনকে মৃত দেখালেও তারাও জীবিত আছেন।

 

৫টি দলিলে ২৭জন বিক্রেতা হিসেবে স্বাক্ষর করলেও তারা জমির প্রকৃত মালিক নয়। অন্যের জমির মালিক সেজে ডিমলা সাব রেজিস্ট্রার মনীষা রায় ও দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান চৌধুরীর সহযোগীতায় সফিয়ার রহমান ও শাহ মোঃ মেহেদি হাসানের কাছে ১হাজার ৩৯একর ১৬শতক জমি পাওয়ার অব অ্যাটর্নীর মাধ্যমে বিক্রয় করেন। দাতা ২৭জনের অনেকেই জানেন না এ জমি বিক্রয় হয়েছে। তারা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে যাননি এবং দলিলেও স্বাক্ষর করেননি। তাদের নামে ভূয়া স্বাক্ষর করা হয়েছে। দলিলে ওয়ারিশ সনদ ও মৃত্যু সনদ কোনো কিছুই ব্যবহার করা হয়নি।

 

ভুক্তভোগী আব্দুল হামিদ, আব্দুল হাকিম, গাজী রহমান, সফিউল ইসলাম জানান, আমাদের জমি একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে একটি চক্র ভূয়া মালিকানা সেজে রংপুরের সফিয়ার রহমান ও শাহ মেহেদী হাসানের কাছে বিক্রয় করেছে। এ ঘটনার সাথে ডিমলা সাব রেজিস্ট্রার মনীষা রায় ও ডিমলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান চৌধুরী, জমির ক্রেতা রংপুরের সফিয়ার রহমান ও শাহ মোঃ মেহেদী হাসান জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে পৃথক পৃথক ভাবে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আমাদের সর্বশান্ত করার পায়তারা করা হয়েছে।

 

জমি দাতাদের মধ্যে বাহাদুর, ছফের আলী, আব্দুল লতিফ ও রেজাউল জমি বিক্রয়ের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, তিস্তা নদীর চরে একটি সোলার প্যানেল তৈরীর জন্য বিভিন্ন কোম্পানীর সাথে সফিয়ার রহমান ও শাহ মোঃ মেহেদী হাসান আলোচনা করছেন। সেই জন্য ওই দুইজনকে আমাদের জমি কোম্পানীর কাছে বিক্রয়ের লক্ষে আলোচনার জন্য প্রতিনিধি হিসেবে পাওয়ার অব অ্যাটর্নী চায়। পরবর্তীতে আমরা জানতে পারি সফিয়ার রহমান ও শাহ মোঃ মেহেদী হাসান, ডিমলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান চৌধুরী ও ডিমলা সাব রেজিস্ট্রার মনীষা রায়সহ কয়েকজন মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে আমাদের কাছে ১হাজার ৩৯একর ১৬শতাংশ জমি প্রতারণার মাধ্যমে পাওয়ার অব অ্যাটর্নী পত্রে স্বাক্ষর নিয়েছেন।

 

এ বিষয়ে দলিল লেখক মতিউর রহমান চৌধুরী ও ক্রেতা সফিয়ার রহমানের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে তারা কোন কথা বলতে রাজি হয়নি।

 

ডিমলা সাব রেজিস্ট্রার মনীষা রায় সাংবাদিকদের বলেন, ডিমলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান চৌধুরী তথ্য গোপন করে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে এ দলিলগুলো সম্পন্ন করেছেন। বিষয়টি আমি পরে জানতে পারি। আমি এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে দলিল বাতিলের জন্য আদালতের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি। পাশাপাশি ওই দলিল লেখকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে বলেছি। অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone