লালমনিরহাটের তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ১০সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্তমানে আর লালমনিরহাট জেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকার লোকজন বন্যার আশঙ্কা করছেন না। তবে তিস্তা নদীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে জলাবদ্ধ পানির ধীরগতির কারণে জনগণের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। তলিয়ে যাওয়া রাস্তা-ঘাটে যাতায়াতে দেখা দিয়েছে চরম ভোগান্তি। আর লাগাতার বৃষ্টিপাতের কারণে খাদ্য সংকটের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে পানিবাহি নানা রোগব্যাধি।
শনিবার (২৬ আগস্ট) দুপুর ১২টা থেকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২দশমিক ০৫মিটার। যা (বিপদসীমা ৫২দশমিক ১৫সেন্টিমিটার) যা বিপদসীমার ১০সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
শনিবার (২৬ আগস্ট) ভোর থেকে পানি বেড়ে বিপদসীমার উপরে থাকলেও দুপুর ১২টার পর থেকেই বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষ এবার আর বন্যার আশঙ্কা করছেন না। তবে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আশা পাহাড়ি ঢল ও ভারতের গজলঢোবা ব্যারাজের রেকর্ড পরিমাণ পানি ছাড়ার কারণে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে।
ইতিপূর্বে পানির প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা নদীর তীরবর্তী লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় তিস্তা নদীর তীরবর্তী ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলার পানিবন্দি পরিবারগুলো ধিরে ধিরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছেন। ইতিপূর্বে লালমনিরহাট জেলার কিছু কিছু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে ছিলেন। যা দ্রুতই তা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হচ্ছেন। সাধারণ মানুষের খাদ্য সংকটের পাশাপাশি গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। এর পাশাপাশি দেখা দিয়েছে পানিবাহি রোগের প্রাদুর্ভাব।
বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দাবি, তিস্তায় আর বড় ধরনের বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই। বৃষ্টির কারণে উজানের ঢেউয়ের ফলে পানির প্রবাহ বেড়েছিল। ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানির প্রবাহ কমেছে বলে দাবি করেছে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, তিস্তার পানির প্রবাহ কমেছে। বর্তমানে তিস্তা ব্যারাজের সবগুলো জলকপাট খোলা রয়েছে। তবে ভারতে পানির প্রবাহ কমে গেলে তিস্তার পানি আরও কমবে বলে গণমাধ্যমকে বলেন।
এদিকে ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে পানি সমতল ২৯.৬৭মিটার (বিপদসীমা ৩১.০৯মিটার) যা বিপদসীমার ১৪২সেন্টিমিটার নিচে।
এছাড়াও ধরলা নদী কবলিত মোগলহাট, কুলাঘাট ও বড়বাড়ী ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এখানেও জলাবদ্ধ পানি নেমে যাওয়ার ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে।
অপরদিকে রত্নাই, স্বর্ণামতি, সানিয়াজান, সাকোয়া, চাতলা, মালদহ, ত্রিমোহীনি, মরাসতি, গিরিধারী, গিদারী, ধোলাই, শিংগীমারী, ছিনাকাটা, ধলাই ও ভেটেশ্বর নদীতে বন্যার পানিও কমতে শুরু করেছে।
এছাড়াও লাগাতার বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আশা পাহাড়ি ঢলে লালমনিরহাটে ডুবে গেছে রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট ও বিদ্যালয়ের মাঠ।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম মানিক
সম্পাদক : মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ
প্রকাশক : মোঃ রমজান আলী
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হেলাল হোসেন কবির
Copyright © 2024 আলোর মনি. All rights reserved.