আপনি হয়তো ভাবছেন কে এই তরুণ সাংবাদিক? না, তিনি আর কেউ নন। যাকে এক নামে সবাই চেনেন তাঁর সাহসিকতা আর দক্ষতার জন্য। তিনি সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার সম্পাদক মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ। এ বিষয়ে আজ তাঁর ইন্টারভিউ-
তরুণ সাংবাদিক মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ-এঁর কথা: মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ-এঁর জন্ম লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলার ১নং মোগলহাট ইউনিয়নের ২নং ফুলগাছ গ্রামে। কোদালখাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে পঞ্চম শ্রেণী সমাপ্ত করেন। এরপর ভাটিবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাস করেন। এরপর লালমনিরহাট সরকারি কলেজ হতে এইচএসসি মানবিক বিভাগে পাস করেন। এরপর আদিতমারী ডিগ্রী কলেজ হতে বিএসএস পাস করেন।
যদিও মোঃ মাসুদ রানা রাশেদের ইচ্ছে ছিল জনপ্রতিনিধি হবার কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি নানাবিধ কারণে। তবে হাল ছাড়েননি।
অবশ্য গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা নিয়েও মাস্টার্স পড়বার ইচ্ছে ছিল। মোঃ মাসুদ রানা রাশেদের এমন কোনো লক্ষ্য ছিল না যে সাংবাদিক হতে হবে।
পড়াশুনা চলাকালীন অবস্থাই তিনি সাপ্তাহিক লালমনিরহাট বার্তা পত্রিকায় সাংবাদিকতা শুরু করেন। ২০০৫ সালে সাপ্তাহিক লালমনিরহাট বার্তা পত্রিকায় মোগলহাট সংবাদদাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৭ সালে দৈনিক জাগোবাহে পত্রিকায় লালমনিরহাট জেলা সংবাদদাতা হিসেবে যোগ দেন।
সাংবাদিক ও সম্পাদক মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ জানান, ম্যাস্-লাইন মিডিয়া সেন্টার (এমএমসি)র যুব সাংবাদিক, মাসিক সাহিত্য পত্রিকা আলোর মনি’র নির্বাহী সম্পাদক, মাসিক আলোর মনি’র নির্বাহী সম্পাদক, পাক্ষিক আলোর মনি’র নির্বাহী সম্পাদক, পাক্ষিক জনতার মুখ’র ব্যবস্থাপনা সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন অনেক দিন।
তাই সংবাদপত্রের সাংবাদিকতা করতে এসে তেমন সমস্যা হয়নি তাঁর। আর মোঃ মাসুদ রানা রাশেদের মনে সব সময় একটা সাহস ছিল, তিনি পারবেন। পারতে যে তাঁকে হবেই।
সাপ্তাহিক লালমনিরহাট বার্তা, মাসিক সাহিত্য পত্রিকা আলোর মনি, মাসিক আলোর মনি, পাক্ষিক আলোর মনি, পাক্ষিক জনতার মুখ পত্রিকার বেশ দক্ষতার সঙ্গেই দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর ২০১৪ সালে যোগ দেন সাপ্তাহিক আলোর মনি’র সম্পাদক হিসেবে।
তিনি তাঁর কাজকে ভালোবাসেন সবচেয়ে বেশি। সাথে সাথে তা উপভোগও করেন। তাঁর মতে, ভালো সাংবাদিক হতে হলে প্রথমেই হতে হবে ভালো মানুষ। তবেই কাজের মধ্যে তাঁর প্রকাশ ঘটবে। তাছাড়া সাংবাদিকতায় প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখার গুরুত্বও অনেক। ফলে সহজেই এ কাজের প্রতি দক্ষতা এবং ভালোবাসা জন্ম নেয়।
তিনি জানান, আমাদের লালমনিরহাট জেলায় কর্মরত সাংবাদিকেরাই প্রতিদিনের ঘটনাগুলোকে যেভাবে লিখেন ও পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাতে আরও প্রশিক্ষণ থাকলে ভালো হতো।
তাঁর মতে, যেকোনো কাজই করতে হয় পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে। তাহলেই সাফল্য আসতে বাধ্য। অবশ্য তিনি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেন না।
তবে তিনি জানান, পরিকল্পনা মাফিক চললে তাতে সীমাবদ্ধতা চলে আসে, চিন্তার স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হয়।
তিনি বলেন, বয়স বাড়ার সাথে সাথে সাংবাদিকের ক্ষেত্রে দক্ষতা বেড়ে যায়। সাথে সাথে বাড়ে গ্রহণযোগ্যতা। তাঁর মতে সাংবাদিকতা পেশায় সফল হতে হলে প্রচুর বাইরের জ্ঞান থাকতে হবে। আর এজন্য নানা বিষয়ের বই পড়তে হবে। মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ এখনও নিজের কাজ নিয়ে ঘষামাজা করেন। এ যেন নিজেকে ভেঙে নিজেকে গড়ার যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ।
বর্তমানে অনেক সাংবাদিকের সততা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এমন বিষয়ে মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ বলেন, গুটিকয়েক সাংবাদিকের জন্য গড়ভাবে সব সাংবাদিককেই দোষ দেয়া অন্যায়।
মোঃ মাসুদ রানা রাশেদের পিতা মোঃ হযরত আলী ও মাতা মোছাঃ রেহেনা বেগম মিনা-এঁর প্রথম সন্তান তিনি। মোঃ মাসুদ রানা রাশেদের ভাই-বোনের সংখ্যা বলতে “ফাইভ স্টার” বলতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কারণ তারা ৩ভাই, ২বোন। মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ পরিবারের সাথে সময় কাটাতেই বেশি ভালোবাসেন। তিনি সততাকে সম্মান করেন, ঘৃণা করেন মিথ্যাবাদীকে। পড়াশুনা করা তাঁর নিত্যদিনের অভ্যাস। সিনেমা ও নাটকের প্রতি তাঁর তীব্র আকর্ষণ। মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ নিজেকে গ্রামের মানুষ বলতেই পছন্দ করেন। তাই শত নিয়ন্ত্রণ থাকলেও গ্রামের বাড়িতে গিয়ে মায়ের ঘরে বসে একটু হলেও ভাত খাবেনই খাবেন এবং নিজ ঘরের মধ্যে ঘুমাবেন।
মোঃ মাসুদ রানা রাশেদের মতে, মায়ের হাতের রান্না করা ভাত ও তরকারি হলো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ খাবার। মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ প্রচুর স্বপ্ন দেখেন। তাঁর মতে প্রতিটি মানুষ যদি স্বপ্ন দেখত তবে সব সমস্যার সমাধান হতো সহজেই।
আর এই স্বপ্ন দেখানোর কাজই করতে চান তাঁর জন্ম স্থান লালমনিরহাটবাসীর মাধ্যমে। যা সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মঙ্গা ও দলীয়করণ মুক্ত একটি “মডেল লালমনিরহাট সংকল্প” হিসেবে গঠন করার লক্ষ্যে তিনি নিরলসভাবে কাজ করবেন। জনসেবা মানুষের এক মহৎ হৃদয়বৃত্তি, অনন্য মানব ধর্ম। সেবাপরায়ণতা মানুষের মনকে মহান ও উদার করে। উদার মন মানুষের জীবনে আনে অনাবিল সৌন্দর্য, আনে শান্তি ও সুখ। সুতরাং জনসেবার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েই মানুষ এই শান্তি ও সুখ পেতে পারে। মানুষের অন্যের দুঃখ মোচনের মাধ্যমে নিজের জীবনের সত্যিকারের সুখকে খুঁজতে পারে। কবির ভাষায়- “পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি এ জীবন মন সকলি দাও/ তার মত সুখ কোথাও কি আছে? আপনার কথা ভুলিয়া যাও।”
ছাত্র থাকাকালীন সময় থেকেই সাংবাদিকতা শুরু করেন। পরে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় দীর্ঘদিন লেখালেখি করেন। বর্তমানে তিনি সাপ্তাহিক আলোর মনি ও দৈনিক এবং অনলাইন পত্রিকায় কর্মরত আছেন। এছাড়াও তিনি লালমনিরহাট প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সেই সাথে বিভিন্ন সাংবাদিকদের সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। সাংবাদিক ও সম্পাদক মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ বাবা-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী-পুত্র নিয়ে সংসার জীবন অতিবাহিত করছেন।
উল্লেখ্য যে, মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ ১৯৮৭ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন।