শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাটে আগুনের কুন্ডলী জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা লালমনিরহাটে স্মৃতিচিহ্নহীন রেলওয়ে রিক্সা স্ট্যান্ড বধ্যভূমি! লালমনিরহাটে জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে র‍্যালি, আলোচনা সভা ও সহায়ক উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটের মোগলহাট সড়ক পুর্ণ নির্মাণ কাজে গতিহীন; সাধারণ মানুষের ভোগান্তি! মহান মুক্তিযুদ্ধে লালমনিরহাট প্রীতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে ইয়ং টাইগার্স অনূর্ধ্ব-১৮ জাতীয় ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট ২০২৪-২৫ বিভাগীয় পর্যায় এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের স্মৃতিচিহ্নবাহী বধ্যভূমি ও গণকবর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন লালমনিরহাট জেলার কমিটি গঠন লালমনিরহাটে যেন কোন কাজেই আসছে না স্লুইস গেইট!
লালমনিরহাটের মেয়ে মৃত্তিকা’র “কৃষ্ণপক্ষ” সিনেমা আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন

লালমনিরহাটের মেয়ে মৃত্তিকা’র “কৃষ্ণপক্ষ” সিনেমা আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন

বাবা কাজ করেন সিনেমা পাড়ায় আর নিজে পড়েন ‘ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন’ এর উপর। দুইয়ের মিশ্রণে পর্যাপ্ত মেধা ও শ্রম দিয়ে সম্প্রতি বানিয়েছেন “কৃষ্ণপক্ষ” নামে একটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের সিনেমা। আর তাতেই বাজিমাত। সিনেমাটি এক এক করে ১০টি দেশে চলে প্রদর্শনী।

 

এই বাজিমাতের জাদুকর মৃত্তিকা রাশেদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন’ বিভাগে পড়ছেন।

 

যার ছোট বেলা কেটেছে লালমনিরহাটের থানাপাড়ায়। ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছেন কনফিডেন্স প্রি ক্যাডেট স্কুলে। এর পর থেকে পরিবারসহ ঢাকায় বসবাস। রিস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে ২০১৬ সালে এসএসসি ও বেগম বদরুন্নেসা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অনার্স ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন নিয়ে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মৃত্তিকা।

 

লেখা পড়ার পাশাপাশি ‘কৃষ্ণপক্ষ- A Burning Soul’ নামে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি তৈরি করেন। এই সিনেমাটি প্রথমে প্রদর্শনী হয় চলতি বছরের ১৪-২২ জানুয়ারি ৯দিনব্যাপী একবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। সেখানে ৭১টি দেশের ২৫২টি চলচ্চিত্রের প্রদর্শনীতে ২য় রানার আপ হয় কৃষ্ণপক্ষ সিনেমাটি। সেখানে থেকে মৃত্তিকার সফলতার নতুন হাতছানি।

 

বাবা রাশেদ বিপ্লব এর কাজ দেখে মনের ভিতর সিনেমা বানানোর স্বপ্ন বাঁধেন মৃত্তিকা। স্বপ্নের টানে ভর্তি হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন’ বিভাগে। বাবার কাজ আর ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশনের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে সিনেমা বানাতে মনোযোগি হয়ে পড়েন। তবে, ২০১৭ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দুই মাস মেয়াদি একটি ‘চলচ্চিত্র নির্মাণ কর্মশালা’য় নিয়মিত ক্লাস করেছিলেন।

 

মৃত্তিকা অনুভূতি জানায়, “বাবার সাথে থিয়েটার আর খুব ছোট বেলায় সত্যজিৎ রায়ের ‘গুপি গায়েন বাঘা বায়েন’ দেখতে দেখতে মনে হয়েছিল একটা সিনেমা বানাবেন।” পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এখনো বানানোর সুযোগ না হলেও আংশিক স্বপ্ন ইতিমধ্যেই পূরণ হয়েছে ‘কৃষ্ণপক্ষ- A Burning Soul’ নামে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি তৈরি করে। সেখানে যেন তার কল্পনার রাজ্যে নতুন আর এক মৃত্তিকাকে জন্ম দেয়।

 

জাতীয় জাদুঘরে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে ঘোষণা হয় কৃষ্ণপক্ষ ‘বাংলাদেশ প্যানোরামা শর্ট ফিল্ম সেকশন’-এ দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছে। অথচ এই সেকশনে তার চেয়ে অনেক সিনিয়র নির্মাতা ও বাংলাদেশের অন্যতম বড় প্রোডাকশন হাউস থেকে আসা সিনেমা ছিল! আর এরই মাঝে পৃথিবীর অন্যতম সিনেমা যাচাইকারী জুরি ‘ফিপ্রেস্কি’ও একে নির্বাচিত করেছে! পুরস্কার ঘোষণা করেন ও মঞ্চে ডেকে নেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট সিনেমা সমালোচক বিধান বিবেরু। এই ঘটনা স্বপ্নের মতোই ছিল মৃত্তিকার কাছে।

 

এরপর জেএমসি মিডিয়া বাজ কর্তৃক ১৫ মে ২০২৩ অনুষ্ঠিত ‘ন্যাশনাল শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এ প্রথম রানার আপ হওয়া কৃষ্ণপক্ষের আরেকটি বড় সাফল্য।একজন সিনেমা প্রেমি মানুষের মনস্তাত্ত্বিক বিষয় নিয়ে এই সিনেমাটার গল্প তুলে ধরেছেন মৃত্তিকা রাশেদ। ইতোমধ্যে ১০টির অধিক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনীর জন্য ‘কৃষ্ণপক্ষ- A Burning সউল’ আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম লন্ডনে অনুষ্ঠিত ‘রেইনবো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’ (২৯ মে, ৪ জুন) ইতালির মিলান শহরে অনুষ্ঠিতব্য ‘ডিউমিলান থার্টি’ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল (৯-১১ জুন), যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ‘লিফ্ট অব সিজন ২০২৩’, ভারতে অনুষ্ঠিত ‘পুনে শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’ (২৬-২৮ মে) এবং আমেরিকার নিউজার্সিতে অনুষ্ঠিতব্য ‘স্টুডেন্ট ওয়ার্ল্ড ইম্প্যাক্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’ (১৮-১৫ জুন)।

 

ফিল্মফ্রিওয়ে নামে একটি প্ল্যাটফর্ম আছে, যেখানে বিশ্বের সব নামী ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল যুক্ত আছে। মূলত, ফিল্মফ্রিওয়ে-তে তিনি নিজের একটি প্রোফাইল তৈরি করেন এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনুষ্ঠানে সিনেমাটি প্রদর্শনের জন্য দেন। তারা তার সিনেমা পছন্দ করেন, প্রদর্শনীর জন্য নির্বাচন করেন এবং তাকে দেখার জন্য তাদের দেশে আমন্ত্রণ জানিয়ে আসছেন।

 

স্নাতক শেষ না করেও সিনেমা তৈরি’র মৃত্তিকার সফলতা দারুণ ভাবে আনন্দ দিচ্ছে পুরো পরিবারকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীরাও উৎফুল্ল মনে। সব কিছু উপেক্ষা করে মৃত্তিকা দারুণ ভাবে আশাবাদী এবং সকলের কাছে দোয়া প্রত্যাশী।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone