লালমনিরহাটে বিসমিল্লাহ নার্সারী পরিদর্শন করেছেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ।
শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ১১টা ৩০মিনিটে লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কাকেয়া টেপা গ্রামে অবস্থিত বিসমিল্লাহ নার্সারী পরিদর্শন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ, লালমনিরহাট স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম, লালমনিরহাট যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল মজিদ, সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোছাঃ রাজিয়া সুলতানা, মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব, ৯নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুর রহিম, বিসমিল্লাহ নার্সারীর প্রোঃ মোঃ ইসরাইল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিসমিল্লাহ নার্সারীটি ২০১৭ সালে লালমনিরহাট সদরের ভাটিবাড়ী এলাকায় ৮১শতাংশ জমির উপর শুরু হয়। যা হাটি হাটি পা পা করে এখন ১০দোন মাটির উপর ৬টি নার্সারী রয়েছে। প্রথমে উক্ত ৮১শতাংশ জমিটি বন্ধক নিয়ে যাত্রা শুরু করেন তিনি।
উক্ত নার্সারীতে বর্তমানে ১০জন কর্মরত রয়েছেন- জয়নাল আবেদীন, চয়ন রায়, আব্দুল কাদের, তামিম, বীরেন চন্দ্র, নয়ন রায়, গিরিন, শুভ, শ্রীবাস, মাহফুজার।
বিসমিল্লাহ নার্সারীর প্রোঃ মোঃ ইসরাইল হোসেন বলেন, আমি অষ্টম শ্রেণি পাস করে বিদেশে যাওয়ার জন্য মনস্থির করি। পরবর্তীতে দালাল চক্র আমার টাকা আত্মসাৎ করে। পরে হতাশ হয়ে পড়ি, তার পরে আমি নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য ইজিবাইক চালিয়ে কিছু টাকা উপার্জন করে এ নার্সারী ব্যবসা শুরু করি। এখন আমি নিজের পাশাপাশি অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করি।
তিনি আরও বলেন, আমি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর হতে এক সপ্তাহ ব্যাপি নার্সারীর প্রশিক্ষন গ্রহণ করি। এতে করে আধুনিক নার্সারী ব্যবসায় উক্ত প্রশিক্ষণ আমাকে সমৃদ্ধ করেছে। আমি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কাছে কৃতজ্ঞ।
জয়নাল আবেদীন ও চয়ন রায় বলেন, এ বিসমিল্লাহ নার্সারীতে কাজ করে আমাদের কর্মসংস্থান হয়েছে। এ নার্সারী চারা গুলো অন্যান্য নার্সারী থেকে সুস্থ, সবল ও রোগ মুক্ত।
মেঘারাম এলাকার লটকন বাগান মালিক বজলু বলেন, আমি এ নার্সারী থেকে লটকন চারা নিয়ে এক দোন মাটিতে বাগান করেছি। যা থেকে নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারের বিক্রয় করা হয়।
মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব ও ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুর রহিম বলেন, মোঃ ইসরাইল হোসেন নার্সারী ব্যবসার পাশাপাশি কাপড়ের ব্যবসাও করছে। সে কঠোর পরিশ্রমী। তার সফলতা ও উন্নতি কামনা করছি।
বিসমিল্লাহ নার্সারী সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এতে ফলজ- আম, জাম, কাঠাল, লেবু, অ্যাবাকোটো, রামবুটান, আপেল, আঙ্গুর, লটকন, লিচু, পেয়ারা, নারিকেল, লাম্বুরা, মাল্টা, কমলা চারা পাশাপাশি বনজ- মেহগনি, নিম, সেগুন, শিশুপ, বেলজিয়াম, আকাশমনি, লম্বুসহ ঔষধী- জাতি নিম, আমলক্ষী, হতকী, বহেরা, অর্জুন এর সঙ্গে ফুল- অ্যাঙ্কা, গোলাপ, ড্রাইতাজ, স্নোবল, সালফিয়া, স্ট্যার, গন্ধরাজ, ডালিয়া, সূর্যমুখী প্রমুখ চারা রয়েছে।
প্রঙ্গগত, উক্ত নার্সারীর প্রোঃ মোঃ ইসরাইল হোসেন ১৯৯০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি লালমনিরহাটের কাকেয়া টেপা গ্রামের জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা- মোঃ আমজাত হোসেন, মাতা- মোছাঃ রেজিয়া বেগম। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। তাঁর এক মেয়ে সন্তান রয়েছে মর্মে জানা গেছে।
নার্সারী চারা উৎপাদনের স্বীকৃতি স্বরুপ- বিসমিল্লাহ নার্সারী প্রোঃ মোঃ ইসরাইল হোসনকে লালমনিরহাট জেলা ফলজ ও বনজ বৃক্ষ মেলা তৃতীয় স্থান অধিকার করায় জেলা প্রশাসন, সামাজিক বন বিভাগ হতে সম্মাননা ক্রেস্ট পেয়েছেন। এর পরে তিনি লালমনিরহাট যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কর্তৃক উদ্যোক্তা নির্বচিত হন। এর স্বীকৃতি স্বরুপ ক্রেষ্টও পেয়েছেন তিনি। বর্তমানে যুব উন্নয়নে তিন মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন তিনি।
পরে উক্ত নার্সারী থেকে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ আমড়া, সেলভিয়া জাতের চারার সরবরাহ করেছেন মর্মে জানা গেছে।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি : অধ্যক্ষ মোঃ রবিউল ইসলাম মানিক
সম্পাদক : মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ
প্রকাশক : মোঃ রমজান আলী
নির্বাহী সম্পাদক : মোঃ হেলাল হোসেন কবির
Copyright © 2024 আলোর মনি. All rights reserved.