শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
বিএনপির কর্মী সভা অনুষ্ঠিত যতদিন নির্বাচন হবে না, ততদিন স্বাভাবিক অবস্থায় দেশে ফিরে আসবেনা-অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু আলু চাষ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন লালমনিরহাটের কৃষকেরা লালমনিরহাটে সরকার ফার্মেসী এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি (জিআর) চাল কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ মিষ্টি আলু চাষে লালমনিরহাটের কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে লালমনিরহাটে সাংবাদিকের পিতা কাশেম আলীর ইন্তেকাল পরিচ্ছন্ন রাজনীতি বুকে ধারণের মাধ্যমে আমরা স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে পারবো-লালমনিরহাটে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী লালমনিরহাটে তুলার চাষে লাভের মুখ দেখছে কৃষেকরা লালমনিরহাটে কর্মসৃজন কর্মসূচি শুরু না হওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন কর্মহীনরা
তিস্তা নদীর রুদ্ধমূর্তি ধারণ, বিপদসীমার ২২সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত : বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

তিস্তা নদীর রুদ্ধমূর্তি ধারণ, বিপদসীমার ২২সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত : বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: ভারি বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি রুদ্ধমূর্তি ধারণ করেছে।

 

আজ শনিবার বিকাল ৩টায় লালমনিরহাট জেলার দোয়ানি ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ২০সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার নদীর পানি বৃদ্ধিতে ভাটিতে চরাঞ্চলের বন্যা দেখা দিয়েছে। নদী কূলবর্তী গ্রামগুলোতে পানি ঢুকে পড়েছে। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে।

 

তিস্তা ব্যারেজ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস সর্তকীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, আজ শনিবার তিস্তা নদীর পানি দোয়ানির ডালিয়া পয়েন্টে সকাল হতে বাড়তে থাকে দুপুর ১২টা ও ৩টায়  বিপদসীমার ২০সেন্টিমিটার (বিপদসীমা ৫২দশমিক ৬০সেন্টিমিটার) উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ছিল। ৩টার পর থেকে পানি একটু বেড়ে বিপদসীমার ২২সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তিস্তা ব্যারেজের পানি পরিমাপের কাজে নিয়োজিত গেজ রির্ডার নুরুল ইসলাম।

 

তিস্তা নদীর ভাটিতে থাকা প্রায় ৫০টি চর ও দ্বীপ চরের বাড়ির আঙ্গিণায় পানি উঠে গেছে। অনেকের বাড়ি ঘর ডুবে গেছে। রান্না করা খাবার ও পানিয় জলের কষ্টে পড়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতেও ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে তিস্তা পাড়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। গত ২৪ঘন্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২৪০মিলিলিটার। পানি আরও বাড়তে পারে। তাই চরবাসীকে আপদকালীণ খাদ্য সংরক্ষণের পরামর্শ দিয়েছে বিশেষজ্ঞরা।

 

তাঁরা বলেছেন, বন্যা পানি বাড়লে খাদ্য সামগ্রী ভেসে যেতে পারে। তাই শুকনো খাবার টিনে ভরে নির্দিষ্ট চিহ্ন রেখে ভালোভাবে মাটিতে পুঁতে রেখে সংরক্ষণ করা যায়। পানি নেমে গেলে এই মজুদকৃত সংরক্ষিত খাদ্য আপদকালীণ চাহিদা পূরণ করতে পারে।

 

তিস্তা নদীর পানির তোড়ে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের সেতুটির থর থর করে কাঁপছে। ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়ে পানি প্রত্যাহার করা হচ্ছে। সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে তিস্তার ভাটিতে থাকা চর ও দ্বীপচরে বসবাসরত গ্রামবাসীরা অনেকে নিরাপদ দূরত্বে সরে যাচ্ছে। অনেকে গ্রামের নিকট আত্মীয়-স্বজনের বাসাবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এই দূর্যোগের মুখেও করোনা প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে।

 

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মাহাবুবুল আলম জানান, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা ও কালীগঞ্জ উপজেলায় কোন বাঁধের রাস্তা নেই। তাই বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার প্রশ্ন নেই। তবে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কটি পারুলিয়া ঝুঁকিতে আছে। সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ড পাথরের ব্লক ফেলে রাস্তাটি রক্ষার চেষ্টা করছে। নিচু চরগুলোতে বুক পানি উঠে গেছে। তিস্তার বিভিন্ন চরাঞ্চলের নতুন করে আরও ১০হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন অর্ধশত চরে প্রায় ২০হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে। তিস্তা নদীর প্রবল ঢেউ ও পানির তোড়ের কারণে কিছু দূর্গম চরের সাথে নৌ যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা নদীর পানিতে গড্ডিমারী, হলদিবাড়ি, সির্ন্দুনা, পাটিকাপাড়া, বারোঘরিয়া, মহিষখোচা, খুনিয়াগাছ, রাজপুর, তাজপুর, হরিণচড়া, পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশ চাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি, গোলমুন্ডা, শৌলমারী, কৈমারীসহ কয়েকটি ইউনিয়নের তিস্তার অববাহিকার ৫০টি চরাঞ্চল ও গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ২০সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। টানা ২দিনের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা রুদ্ধমূর্তি ধারণ করেছে।

 

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, স্থানীয় প্রশাসনকে বন্যা মোকাবেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সরকার দূর্যোগে সাধারণ মানুষের পাশে আছে থাকবে। বন্যায় কোন পরিবার খাদ্যাভাবে পড়বে না। ত্রাণ হিসাবে সরকারি সহায়তা মজুদ আছে। বন্যার পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করা হবে।

 

তবে তিনি আরও জানান, তিস্তা নদীতে বালু ও চর পড়ে নাব্যতা হ্রাস পেয়েছে। তাই পানি একটু বাড়লেই নদীর দুই কূল উপচে যায়। নিমাঞ্চলে বন্যা দেখা দেয়। তিস্তা নদী অত্যন্ত খরস্রোতা। এখানে দ্রুত বন্যার পানি নেমে যায়। তাই পানিবন্দি বা জলাবদ্ধাতা থাকবেনা। মানুষের কষ্ট লাগবে স্থানীয় প্রশাসন জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কাজ করছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone