শীতকাল মানেই পিঠা খাওয়ার উৎসব। শীতকাল এলে শহর ও গ্রামে পিঠা খাওয়ার ধূম পড়ে যায়। শীতের পিঠা আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্য। লালমনিরহাটে শীত মৌসুম এলেই নানা রকমারী পিঠা তৈরি করেন। শীতের পিঠার মধ্যে ভাপা পিঠা একটি অন্যতম পিঠা। ভাপা পিঠা আবার হরেক রকম পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়। কখনো মিষ্টি ভাপা, কখনো ঝাল ভাপা। খেজুর রস দিয়ে ভাপা পিঠা খেতে বড়ই সুস্বাদু ও মনোমুগ্ধকর।
শীত এলেই লালমনিরহাট জেলার শহর ও গ্রামের হাট-বাজারে নানা রকম পিঠা বিক্রি করা হয়। বিশেষ করে ভাপা পিঠা, তেলের পিঠা ও চিতল/ চিতু পিঠা। এসব পিঠার সমাদর সবখানেই সমানভাবে রয়েছে। শীত বাড়ার সাথে সাথেই শহরের ফুটপাতে শীতের পিঠার ব্যবসা জমে উঠেছে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ভাটিবাড়ী ও কোদালখাতা বাজারে এই শীতে পিঠা ব্যবসায়ীদের পিঠা বিক্রির হিড়িক পড়েছে। এছাড়া বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লালমনিরহাট জেলা শহরের বিভিন্ন জায়গায় চলছে শীতের পিঠা বিক্রির ধুম। লালমনিরহাট জেলা শহরের অলি-গলিতে রাস্তার আশ-পাশে পিঠাপুলির ভ্রাম্যমান দোকান বসে। এসব দোকানে নারী থেকে শুরু করে বয়স্ক পুরুষ লোকেরা পিঠা তৈরি করে ক্রেতার কাছে বিক্রি করে। এ পিঠা বিক্রি করে সংসার চালায় তারা শুধুই মাত্র এই শীতের মৌসুমে। তবে সন্ধ্যার পর থেকে ক্রেতার সমাগত বৃদ্ধি পায়। সবাই এক সাথে মজা করে শীতের পিঠার স্বাদ উপভোগ করে। সকল বয়সের মানুষেরা একসাথে পিঠা খাওয়া দেখে মনে হতে পারে কোন উৎসব চলছে। পিঠার দামও বেশি নয় স্বাদ্ধের মধ্যে। প্রতিটি পিঠা ১০টাকায় বিক্রি হয়। চিতল/ চিতু পিঠা ১০টাকা ও ভাপা পিঠা ১০টাকা দরে বিক্রি করে। এতে এ ব্যবসায় সীমিত লাভও থাকে।
লালমনিরহাট জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র মিশন মোড়, মোগলহাট রেলগেটসহ শহরের বিভিন্ন জনসমাগম স্থলে পিঠা বিক্রি করতে দেখা যায়। এছাড়াও লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ভ্রাম্যমান পিঠা বিক্রি শীতের ঐতিহ্যকে লালন করছে। ক্রেতাদের সমাগমে বিক্রেতারাও খুশি।
কোদালখাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পিঠা বিক্রেতা রশিদা খাতুন জানান, তিনি প্রতি শীত মৌসুমে পিঠা বিক্রি করেন। এ সময় তার প্রতিদিন প্রায় ৫-৭শত টাকা বিক্রি হয়, যার মধ্যে প্রায় ২শত টাকার মতো তার লাভ থাকে। বিক্রি ভালো বিধায় সে খুশি।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কোদালখাতা গ্রামের মোঃ নায়েব আলী পিঠা খেতে এসে বলেন, আমি রোজ প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর এসব দোকান থেকে পিঠা খাই ও বাড়ীতেও নিয়ে যাই। শীত কালের খাবারের মধ্যে পিঠা অন্যতম। আগে যদিও বাড়িতে এসব পিঠা বানানোর হিড়িক পড়তো এখন তা আর দেখা যায় না।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের মকড়া ঢঢ গাছ গ্রামের জীবন রায় বলেন, আমি মাঝে মাঝে এসব দোকান থেকে পিঠা কিনে খাই। শীতের পিঠার একটা আলাদা আমেজও পাওয়া যায়। এসব পিঠা আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ। তাই শত ব্যস্ততার মাঝেও এই ঐতিহ্যকে লালন করি, ধারণ করি, আমি বাঙ্গালী বলে।